মাহমুদউল্লাহর ‘বেঙ্গালুরু দুঃখ’
‘কোনো খেদ, অনুশোচনা, দুঃখ নেই। একবিন্দুও না। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি বাংলাদেশের হয়ে এতগুলো বছর খেলতে পারাটা অনেক ভালো একটা বিষয়। ২০০৭ সালে আমার টি- টোয়েন্টিতে অভিষেক হয়েছে। ১৭ বছর বেশ লম্বা সময়ই। জানি না আমি কেমন বা কতটুকু ভালো (খেলোয়াড়) ছিলাম, তবে এটা ঠিক যে আমি সবসময়ে আমার সেরা চেষ্টা করে গেছি। চেষ্টা করেছি দলের সেবা করতে।’
টি-টোয়েন্টিকে ক্রিকেটকে বিদায় বলার দিনে এই মন্তব্য করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি টি- টোয়েন্টি খেলা খেলোয়াড় মাহমুদউল্লাহ। সংখ্যার হিসেবে এখন সেটা ১৩৯ ম্যাচ। একটু জানিয়ে রাখি বাংলাদেশ ৮ অক্টোবর ২০২৪ পর্যন্ত খেলেছে ১৭৭ টি টি- টোয়েন্টি। সিরিজ শেষে মাহমুদউল্লাহর এই ম্যাচের সংখ্যা আরো বাড়বে।
লম্বা ক্যারিয়ার এখানে শেষ করছেন, এই নিয়ে কোনো খেদ নেই তার। তবে ক্যারিয়ার জুড়ে খেলা এতো ম্যাচের কোনো না কোনো পর্বে হতাশা এবং আনন্দ দুটো স্মৃতিই আছে নিশ্চয়ই?
পেছনের ১৩৯ ম্যাচের স্মৃতি হাতড়ে মাহমুদউল্লাহ অবশ্য সুখ-দুঃখের ম্যাচ খুঁজে পেতে বেশি সময় নিলেন না। বললেন, ‘২০১৬ সালের বিশ্বকাপে বেঙ্গালুরুতে ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচটা ছিল আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে হতাশার ম্যাচ। আর নিদাহাস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচ ছিল আমার ক্যারিয়ারের সেরা ম্যাচ।’
২০১৬ সালের বিশ্বকাপে বেঙ্গালুরুতে ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচ জিততে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল শেষ ওভাওে ১১ রান। উইকেটে তখন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। প্রথম তিন বলে বাংলাদেশ দুই বাউন্ডারি ও এক রানে তুলে নেয় ৯ রান। ম্যাচ জিততে শেষ ৩ বলে প্রয়োজন মাত্র ২ রানের। মুশফিক সেই ম্যাচ ছক্কা হাঁকিয়ে শেষ করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে ফিরেন। পরের বলে মাহমুদউল্লাহও ঠিক একই কাজ করলেন। তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ। শেষ বলে বাংলাদেশের প্রয়োজন দাড়ায় ২ রান। ১ রান হলে ম্যাচ টাই হবে। হার্দিক পান্ডিয়ার করা সেই বলে শুভগত হোম ব্যাটই লাগাতে পারলেন না। তবুও দৌড়ালেন রানের জন্য। ননস্ট্রাইক প্রান্ত থেকে মুস্তাফিজুর ছুটলেন। কিন্তু উইকেটকিপার মহেন্দ্র সিং ধোনি বল হাতে দৌড়ে স্ট্যাম্প ভেঙ্গে দিলেন। মুস্তাফিজুর রান আউট শূন্য রানে। বাংলাদেশ ম্যাচ হারল ১ রানে!
সেই ম্যাচ বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে ‘বেঙ্গালুরুর দুঃখ’ হয়ে থাকছে।
আর ২০১৮ সালে কলম্বোতে নিদাহাস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচে শেষ ওভারে ছক্কা হাঁকিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ দলকে জেতান। তার সেই ছক্কায় বাংলাদেশ টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলে।