ম্যাচ বাঁচিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবে বাংলাদেশ?
আগে কিছু হিসেব দেই।
এখনো ইনিংস হার এড়াতে ১০১ রান প্রয়োজন। দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ দল মিরপুর টেস্টের প্রথম ও দ্বিতীয় ইনিংসে যে রান করলো তার এখনো দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে ১০১ রান কম!
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস শেষ হয় ১০৬ রানে। জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংসে তুলল ৩০৮ রান। সেঞ্চুরি করলেন ভ্যারেনে। হাফসেঞ্চুরির আনন্দে ব্যাট তুললেন মুলদার। সপ্তম উইকেট জুটিতে ১১৯ রান জুড়ে এই দুজনে দক্ষিণ আফ্রিকাকে শুরুর সঙ্কট থেকে উদ্ধার করেন। দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই আগের মতোই সেই ধসে পড়া ব্যাটিং। ওপেনার সাদমান ইসলাম শুরুতেই আউট। একই ওভারে শূন্য রানে বিদায় মুমিনুল হকের। উইকেটে সেট হয়ে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত যে কায়দায় আউট হলেন সেটাকে হাস্যকর বলবেন নাকি কুৎসিত বলবেন সেই সিদ্ধান্ত আপনার। দলে অধিনায়কের কাজ শুধু টস করা নয়Ñ ব্যাটে বড় রানও করতে হবে। নাজমুল হোসেন শান্তকে সম্ভবত এমন একটা চিঠি এখন বিসিবি দিতেই পারে!
মিরপুরের উইকেট দ্বিতীয়দিনের পুরোটা সময় জুড়ে যে আচরণ করলো তাতে একটা বিষয় পরিস্কার এই উইকেটে রান তুলতে হলে মুল প্রয়োজন দুটো- মস্তিস্ক ও স্কিল। এই দুইয়ের সংযোগ ঘটাতে পারলে মিরপুরের স্পিন সহায়ক উইকেটেও সেঞ্চুরি হাফসেঞ্চুরি তোলা যায়। বড় রান করা সম্ভব। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস তো সেই উদাহরণ হয়েই রইলো। রান তোলার জন্য খুব তাড়াহুড়ো করলেন না ভ্যারেইনে ও মুলদার। বলের জন্য অপেক্ষায় থাকলেন। নরম হাতে খেললেন। সামনে বেড়ে খেলার চেষ্টাই করলেন না। ফিল্ডিংয়ের ফাঁক গলিয়ে এক দুই রানের জন্য দৌড়ালেন। এবং সফল হলেন। তাতেই স্কোরবোর্ডে তিনশ ছাড়িয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর।
বাংলাদেশ এখন এই ম্যাচ বাঁচাতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে অনুসরণ করলেই তো পারে।
পারবে সেই পথে হাঁটতে বাংলাদেশ? সেই লক্ষ্য অর্জনে সফল হলে এই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য চতুর্থ ইনিংসে কিছুটা চ্যালেঞ্জ হয়তো দিতে পারবে স্বাগতিকরা। আর যদি না পারে তাহলে এই ম্যাচের চতুর্থদিনের টিকেট ছাপানোর খরচটাই হবে বাজে বিনিয়োগ!
স্বস্তির বিষয় হলো ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় এবং মুশফিকুর রহিম যে কায়দায় ব্যাট করছেন সেটাই বাংলাদেশকে সাহস যোগাচ্ছে। দুজনেই উইকেটে সেট হয়ে গেছেন। মুশফিক ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট চালিয়ে অপরাজিত রয়েছেন ৩১ রানে। ৭৯ বল খেলে ৩৮ রান নিয়ে ব্যাট করছেন জয়। এই ইনিংসের চলতি পথেই মুশফিক টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ৬ হাজার রানের মালিক হলেন।
এই মাইলস্টোন অর্জনের ম্যাচে মুশফিকের কাছ থেকে তৃতীয়দিন আরো বড় কিছুর অপেক্ষায় বাংলাদেশ- সেঞ্চুরি, বড় সেঞ্চুরি!