বাংলাদেশের পেসারদের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপটি রেখে দিবেন ডোনাল্ড
দায়িত্ব থেকে চলে গিয়ে বাংলাদেশ ছাড়ার পরেও বাংলাদেশের পেসারদের নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে বানানো চ্যাটিং গ্রুপটি ডিলিট করবেন না ডোনাল্ড, এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের যাত্রার সমাপ্তি হতে চলেছে আগামীকাল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের মাধ্যমে। এবারের আসরে আশানুরূপ ফলাফল করতে পারেনি দল, সেই আক্ষেপ রয়েছে কোচ, খেলোয়াড় এবং সমর্থকদেরও। আগামীতে আরও ভালো কিছুর আশায় থাকবে সবাই। তবে এত ব্যর্থতার পরেও সাম্প্রতিক সময়ে টাইগারদের পেস বোলিং বিভাগে যে উন্নতিটা হয়েছে সেটি চোখে পড়ার মতো। আর এজন্যে কৃতিত্বটা দিতে হবে অ্যালান ডোনাল্ডকেই।
বিশ্বকাপের পরই আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ফাস্ট বোলিং কোচের পদ থেকে বিদায় নেবেন অ্যালান ডোনাল্ড। গতকাল খেলোয়াড়দের সঙ্গেও বিদায়পর্ব সেরেছেন তিনি। ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে ডোনাল্ড জানিয়েছেন, বিসিবি তাঁকে এক বছরের চুক্তি বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। শুরুতে রাজি থাকলেও পরে তিনি সিদ্ধান্ত বদলান, ‘বিশ্বকাপের সময়ই আমি মৌখিকভাবে এক বছরের জন্য চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করতে রাজি হয়েছিলাম। তবে আমি কোনো চুক্তি সই করিনি। ঢাকায় ফিরে নতুন চুক্তিতে সই করতে চেয়েছিলাম। দলের পেস বোলারদের আরও বেশি করে জানা এবং তাদের আরও এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আমি খুব রোমাঞ্চিত ছিলাম।’
পরিবারকে আরও বেশি করে সময় দিতেই তিনি ফিরে যাচ্ছেন দক্ষিণ আফ্রিকায় এমনটা জানিয়েছেন তিনি, ‘আমি ব্যাপারটি নিয়ে ভাবছিলাম। কিন্তু দেখলাম ১২ মাস খুবই লম্বা সময়। এই সময়ে বেশ ব্যস্ত সূচি রয়েছে। আমার পরিবারের কথা চিন্তা করাটাকেই আমি ভালো মনে করেছি। আমার দুই বছর বয়সী নাতি আছে। আমি ওকে খুব মিস করছিলাম। ৮২ দিন হয়েছে ওদের দেখি না। আমি মনে করি, এটাও আমাকে প্রভাবিত করেছে চুক্তির মেয়াদ আর না বাড়াতে।’
বাংলাদেশের পেসারদের নিয়ে কাজ করার সময় যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপটা তিনি তৈরি করেছিলেন, সেটি মুছে ফেলতে চান না ডোনাল্ড। এই বিষয়ে তিনি বেশ আন্তরিকতার সঙ্গেই বলেন, ‘আমি কালই ওদের বলেছি, আমি এর আগে বহু হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ছিলাম। পেশাদার জীবনে যেই মুহূর্তে কেউ কোনো কাজ ছাড়ে, তখন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকেও সে নিজেকে সরিয়ে নেয়। আমি ওদের বলেছি, আমি বাংলাদেশের পেসারদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপটা ফোন থেকে ডিলিট করব না। হয়তো আমরা গ্রুপে একসঙ্গে আড্ডাও মারতে পারি ভবিষ্যতে। খেলোয়াড়েরা যখনই চাইবে, তখনই আমাকে বার্তা পাঠাতে পারবে। আমি হোয়াটসঅ্যাপে ওদের সঙ্গে যেকোনো বিষয় কিংবা ক্রিকেট নিয়ে আড্ডা চালিয়ে যাব।’
‘আমি উচ্ছ্বসিত এটা দেখে যে এই ফাস্ট বোলারদের দল কতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের জন্য আমার সব সময়ই শুভকামনা থাকবে। আমি অবশ্যই আগামীতে এই ফাস্ট বোলারদের দিকে নজর রাখব। বাংলাদেশ কতটা ভালো করছে, সেটি খেয়াল রাখব। আমি এই ফাস্ট বোলারদের খুব ভালো বন্ধু হতে পেরেছি বলে মনে করি।’- এমনটাও জানান ডোনাল্ড। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশের পেস ইউনিট যতটা উন্নতি করেছে তা দেখে তিনি বেশ তৃপ্তি পেয়েছেন।
বোলারদের তিনি সর্বদা ফিট থাকতে উপদেশ দিয়ে গেছেন, ‘আমি যখন তাদের সঙ্গে ২০২২ সালে প্রথম কথা বলি, তখনই আমার মনে হয়েছে, তারা সবাই খুবই প্রতিভাবান। তাদের শুধু একটু যত্ন, দিকনির্দেশনা ও ধৈর্য প্রয়োজন। টেস্ট ক্রিকেটের জন্য পেসারদের মধ্যে ফিটনেস ও অন্যান্য বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা তৈরি করে দেওয়াটাই আমার কাজের একটি মূল উদ্দেশ্য ছিল।’
দীর্ঘদিন পর ভালো একজন বোলিং কোচ পেয়ে খুশি ছিলেন টাইগার পেসাররাও, নিজেদের উন্নতিও তারা উপলব্ধি করতে পারছিলেন। তারা আশাবাদী যে ডোনাল্ডের থেকে দলের খেলোয়াড়েরা যতটুকু শিখেছে সেগুলো তারা পরবর্তী সময়ে কাজে লাগিয়ে নিজেদেরকে আরও ভালো অবস্থানে নিতে পারবে।