দিন শেষে স্বপ্ন দেখালেন বাংলাদেশের স্পিন কোচ
প্রায় কোণঠাসা অবস্থা থেকে বাংলাদেশ মিরপুর টেস্টে খানিকটা স্বস্তি নিঃশ্বাস ফেলার মতো অবস্থানে এসে পড়েছে। হাতে আছে ৮১ রানের লিড, আছে ৩টি উইকেটও। এমন পরিস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনে এসে বিশ্বাসের কথা শোনালেন স্পিন কোচ মুশতাক আহমেদ।
তার সংবাদ সম্মেলনের চুম্বকাংশ স্পোর্টস বাংলার পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো
টপ অর্ডারের ব্যর্থতা–
ভাবনার বিষয় তো অবশ্যই। তবে এমন ম্যাচ জিততে শুরু করলে মানুষ নিজেদের ওপর বিশ্বাস করতে শুরু করে। টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্য হলো যখন আপনি লড়াই করেন। বিশেষ করে যখন এটা নীচের সারির ব্যাটাররা করে। যখন নীচের সারির ব্যাটাররা ভালো লড়াই করে, তখন কৌশলগতভাবে আপনি প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলে দেন। আমি মনে করি এটা একটি বড় ইঙ্গিত। যখন ওপরের সারির ব্যাটাররাও রান করবে, তখন কল্পনা করুন, আমরা যেকোনো দলকে চ্যালেঞ্জ করতে পারব।
চতুর্থ দিনের পরিকল্পনা–
যতটা সম্ভব আমরা লড়াই করব। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা ব্যাট করতে পারব। যখন আপনার বিশ্বাস ও আত্মবিশ্বাস থাকে, তখন আপনি যেকোনো দলকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন।
ম্যাচ জয়ের আত্মবিশ্বাস প্রসঙ্গে–
যদি আপনি পাকিস্তান সিরিজের দিকে তাকান, আমরা ২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিলাম, তারপর সেখান থেকে ম্যাচে ফিরে এসেছি। এটা একটা ইতিবাচক দিক। যখন সবাই বিশ্বাস করা শুরু করে যে আমরা ম্যাচ জিততে পারি বা যেকোনো পরিস্থিতি থেকে ফিরে আসতে পারি, তখন পরিবেশটাই অন্যরকম থাকে। বিশেষ করে যখন এমন লড়াইটা হয়।
কেন নয়? আমি মাত্রই ২৬ রানে ৬ উইকেট হারানোর কথা বলেছি। সেখান থেকে আপনি টেস্ট ম্যাচ জেতেন, এটা বিশ্বাস এনে দেয়। প্রথমে কোচিং স্টাফদের কাছ থেকে এটা আসে। তারপর অবশ্যই খেলোয়াড়রাও বিশ্বাস করতে শুরু করে। আমি মনে করি আপনাকে যেকোনো পরিস্থিতিতে বিশ্বাস করতে হবে। আমি আমার জীবনে, যাদের সাথে খেলেছি, সবসময় বিশ্বাস করেছি যে যদি আমরা একটি দল হিসেবে বিশ্বাস করি, তাহলে আমরা যেকোনো পরিস্থিতি থেকে ফিরে আসতে পারি।
যখন আমি বিশ্বাসের কথা বলছি, তখন আপনি বুঝতে পারবেন ম্যাচ জেতার প্রক্রিয়া কী। আপনি হাল ছাড়বেন না। আসলে আপনি বিশ্বাস করবেন যে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নামা প্রতিটি খেলোয়াড়ই প্রতিযোগিতায় থাকবে। যেমন তাইজুল খুব সুন্দরভাবে লড়াই করেছে। যখন আপনি প্রতিপক্ষ হিসেবে এটা দেখেন, তখন আপনি জানেন যে আমরা হাল ছাড়ছি না। যখন আপনি যেকোনো পরিস্থিতিকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন, মানুষ তখন আপনাকে সম্মান করতে শুরু করে।
জয়-মুশফিকের আউটের ধরন–
তারা আমাদের চেয়ে বেশি হতাশ। তারা কঠোর পরিশ্রম করেছে। যখন মুশফিক জমে যায়, সে বড় রান করে। আমি তরুণ (জয়) খেলোয়াড়টির সাথে খুবই মুগ্ধ। তার মানসিকতা দুর্দান্ত। সে মূলত একটি বাঘের মতো লড়াই করেছে। প্রথম ইনিংসে সে একটি ভালো বল পেয়েছিল। প্রথম দিনে প্রথম তিন ঘন্টা উইকেট একটু কঠিন ছিল। বলটা সিম করছিল। সে লড়াই করছিল। আজ সকালে সে আমাকে বলল, রাবাদা বলটা বাইরে সুইং করাচ্ছিল এবং পরে তা আবার ভিতরে আসছিল। সে বলল, 'আমি শুধু আমার স্টাম্পগুলো রক্ষা করার চেষ্টা করছিলাম।' সে বলল, 'যদি আমি সেটা বাঁচাতে পারি, আমি রান করতে পারব।' এটাই বিশ্বাস এবং আত্মবিশ্বাস। যখন তরুণরা এরকম মানসিকতা পোষণ করে, তখন আমরা ভালো অবস্থানে থাকি।
হেড কোচ ফিল সিমন্সের ভূমিকা–
ফিল খুবই শান্ত প্রকৃতির মানুষ। আমি মনে করি সে পরিবেশে বিশ্বাস করে। সে ভালো মানুষ। আমি প্রথমবারের মতো তার সাথে কাজ শুরু করেছি। আমি মনে করি সে একজন ভালো মানুষ। যখন আপনি দায়িত্ব নেন এবং কোনো দলের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করেন, আপনি জানেন যে কিছুটা সময় লাগবে। আমি মনে করি কয়েকটি সিরিজ লাগতে পারে তার সংস্কৃতি ও মানসিকতা বুঝতে। সিনিয়র খেলোয়াড়রা বড় ভূমিকা পালন করছে। অন্য কোচিং স্টাফও সবচেয়ে বেশি সমর্থন দিচ্ছে। স্থানীয় ছেলেরাও তাকে সমর্থন দিচ্ছে।
এই উইকেটে স্কোরিং শট হিসেবে সুইপের গুরুত্ব–
একজন এশিয়ান স্পিনার হিসেবে আমি সবসময় একটা জিনিস জানি। যদি আপনার ভালো সুইপ শট না থাকে অথবা আপনি ব্যাকফুট বা ফ্রন্টফুটে সিঙ্গেল নিতে না পারেন, আপনি সমস্যায় পড়বেন। আমি মনে করি এগুলোই আমাদের সবসময় প্রয়োজনীয় অপশন। যারা সেঞ্চুরি করেছে এবং ৮০ রান করেছে, তারা দুজনই ভালো সুইপ শট খেলেছে। আপনাকে আপনার শক্তির উপর অটল থাকতে হবে। আজ আমাদের ব্যাটাররা সত্যিই তা প্রয়োগ করেছে।