লড়লো পাকিস্তান, জিতলো অস্ট্রেলিয়া
এই কারণেই বলা হয় পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের চেয়ে তাদের বোলিংটাই বেশি শক্তিশালী। ২০৩ রানের মামুলি পুঁজি নিয়েও তারা অস্ট্রেলিয়ারকে প্রায় আটকে দিয়েছিল। কোনো মতে শেষের দৃঢ়তায় অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ জিতেছে ২ উইকেটে। ৯ নম্বরে ব্যাট করতে নামা অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের অপরাজিত ৩২ রানের সুবাদে জয় নিয়ে ফিরে অস্ট্রেলিয়া। তিন ম্যাচের সিরিজে স্বাগতিকরা এগিয়ে রইলো ১-০ তে।
মেলবোর্নে টসে জিতে অস্ট্রেলিয়া বোলিং বেছে নেয়। পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের শুরুটা হয় বিশৃঙ্খলভাবে। দুই ওপেনারকে ঝটপট বিদায় করে দেন মিচেল স্টার্ক। ২৪ রানে দুই উইকেট হারানো দলকে সামনে টেনে যাওয়ার দায়িত্ব চাপে দুই অভিজ্ঞ বাবর আজম ও অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ানের কাঁধে। বাবর আজমের ব্যাট ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছিল। কিন্তু ৩৭ রান করে উইকেটে পুরোদুস্তর সেট হয়ে ফিরে আসেন পাকিস্তানের সাবেক এই অধিনায়ক। মিডলঅর্ডারে কামরান গুলাম, সালমান আগা ও ইরফান খান তিনজনই ব্যর্থ। অধিনায়ক রিজওয়ান একপাশ আকঁড়ে একাই ইনিংস টেনে নিয়ে যান। ৭১ বলে ৪৪ রান তুলে রিজওয়ান আউটের পর পাকিস্তানের ইনিংস ফের মুখ থুড়বে পড়ে। আশঙ্কা জাগে দেড়শও পার না হওয়ার। তবে শেষের দিকে নাসিম শাহ তেড়েফুঁড়ে ব্যাট চালিয়ে সেই শঙ্কা দুর করেন। ৪ ছক্কা ও ১ বাউন্ডারিতে তার ৩৯ বলে ৪০ রানের ইনিংসে পাকিস্তানের স্কোর দুশোর ঘরে পৌছায়। দলের শেষ ব্যাটার হিসেবে নাসিম শাহ যখন আউট হলেন পাকিস্তানের স্কোরবোর্ডে রান তখন ২০৩।
মিচেল স্টার্ক তার শুরুর স্পেলে দুই এবং শেষের স্পেলে এক উইকেট পান। ১০ ওভারে ৩ মেডেনসহ মাত্র ৩৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে স্টার্কই ম্যাচের সেরা খেলেয়াড়।
রান তাড়ায় নেমে অস্ট্রেলিয়া ওপেনার ম্যাথু শর্টকে শুরুতে হারালেও বাকিদের দৃঢ়তায় সহজ জয়ের পথেই ছিল। স্টিভেন স্মিথ ও জস ইঙ্গলিসের ব্যাটে অস্ট্রেলিয়া বড় জয়ের স্বপ্ন বুনছিল। মাত্র ১৭ ওভারেই ৩ উইকেটে ১১৩ রান তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া। বড় জয় তখন হাত বাড়ানো দুরুত্বে। ঠিক তখনই পাকিস্তান ফের ঘুরে দাড়ায়। স্টিভেন স্মিথ ও জস ইঙ্গলিসের উইকেট পতনের পর ম্যাচের মোড়ই যেন পাল্টে যায়। লাবুশানে, হার্ডি ও ম্যাক্সওয়েলও দ্রæত বিদায় নেন। হারিস রউফের পেস বোলিং তখন আগুন ঝরাচ্ছে। ১৫৫ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে কাঁপাকাপি শুরু হয়ে গেছে। বড় জয়ের স্বপ্ন বুনতে থাকা অস্ট্রেলিয়ার সামনে হঠাৎ এসে হাজির হয় হারের দুঃস্বপ্ন!
দলকে সেই সঙ্কট থেকে উদ্ধার করে অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের ধীরস্থির মস্তিস্কের ব্যাটিং। ৩১ বলে অপরাজিত ৩২ রান তুলে অস্ট্রেলিয়া ২ উইকেটের জয় এনে দেন অধিনায়ক কামিন্স।
অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের মাঝপথে বোলিংয়ে চমক দেখানো পাকিস্তানের বোলাররাই কিন্তু এই ম্যাচের বড় ভিলেন। সবমিলিয়ে বোলাররা অতিরিক্ত রান খরচা দেন ২১। যাতে ওয়াইড বলই ছিল ১৭টি!
লো- স্কোরের ম্যাচে হার তো ওখানেই!
সংক্ষিপ্ত স্কোর: পাকিস্তান ২০৩/১০ (৪৬.৪ ওভারে, বাবর আজম ৩৭, রিজওয়ান ৪৪, আফ্রিদি ২৪, নাসিম শাহ ৪০, স্টার্ক ৩/৩৩, কামিন্স ২/৩৯, জামপা ২/৬৪)। অস্ট্রেলিয়া ২০৪/৮ (৩৩.৩ ওভারে, স্টিভেন স্মিথ ৪৪, ইঙলিশ ৪৯, কামিন্স ৩২*, আফ্রিদি ২/৪৩, রউফ ৩/৬৭)।
ফল: অস্ট্রেলিয়া ২ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: মিচেল স্টার্ক।
দ্বিতীয় ম্যাচ: ৮ নভেম্বর, অ্যাডিলেড।