শান্তর ৫০, জাকের-নাসুমের ঝড়ে লড়াইয়ের পুঁজি বাংলাদেশের
অনেকগুলো হিসেব ছিল সামনে। শারজার ‘ট্রিকি’ উইকেট, তার ওপর প্রথম ম্যাচে ওভাবে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়া… সেসব বিষয় সামনে রেখে দ্বিতীয় ম্যাচে যা করা দরকার, তাই করেছে। সতর্কভাবে সামলেছে আফগানদের বোলিং, বিশেষ করে স্পিন আক্রমণকে।
নাজমুল হোসেন শান্ত তাতে বড় অবদান রেখেছেন। স্থিতধী ৭৬ রানের ইনিংসে এক পাশ আগলে রেখেছেন। তার বিদায়ের পর শেষ দিকে দলকে লড়াকু পুঁজি এনে দিয়েছেন জাকের আলি অনিক আর নাসুম আহমেদ। শেষ দিকে তাদের ক্যামিওতে ভর করে বাংলাদেশ ইনিংস শেষ করেছে ৭ উইকেটে ২৫২ রান তুলে।
শারজার উইকেটে ২৩০ এর ওপরের যে কোনো স্কোর লড়াইয়ের দারুণ পুঁজি, ধারাভাষ্যকাররা বলাবলি করছিলেন। প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানও তো তাই দেখিয়েছে!
ওদিকে বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে যা করেছে, তার পুরোপুরি উল্টোটা করার লক্ষ্য নিয়ে নেমেছিল আজ। আগের ম্যাচে ১২০ রানে ২ উইকেট থেকে ১৪৩ রানে অলআউট হয়ে ৯২ রানে ম্যাচ হেরেছিল বাংলাদেশ। আজ আর যাই হোক, অমন কিছু হতে দেওয়া চলবে না, এমনই লক্ষ্য ছিল দলের।
১৭ বলে ২২ রান করা তানজিদ তামিমকে হারালেও বাংলাদেশ শুরুটা ভালো করে। এরপর সৌম্য সরকার আর নাজমুল হোসেন শান্ত পরিস্থিতিটা সামলান ৭১ রানের জুটিতে। শুরুর পঞ্চাশ রান ৫০ বলে এলেও এরপর থেকেই রানের গতি কমে আসতে শুরু করে।
ক্ষণিকের সিদ্ধান্তহীনতায় রিভিউ না নিয়ে এলবিডব্লিউর শিকার বনেন সৌম্য। এরপর রশিদ খানের গুগলিতে বিভ্রান্ত হয়ে উইকেট খোয়ান মেহেদি হাসান মিরাজ। আফগান স্পিনাররা একটু একটু করে চেপে ধরতে থাকেন বাংলাদেশকে।
তার চাপে পড়ে ওপাশে তাওহীদ হৃদয়কে উইকেট খোয়াতে দেখেন শান্ত। তবে এপাশে তিনি রীতিমতো উইকেট আঁকড়ে পড়ে ছিলেন। আর তাতেই বড় কোনো ধস নামেনি বাংলাদেশ ইনিংসে।
সে শঙ্কাটা পেয়ে বসল শেষ পাওয়ারপ্লেতে পা রাখার পর। শান্ত ৪১তম ওভারে খারোতেকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ দেন লং অফে। এর এক বল পর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও একই পথ ধরলেন, ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ দিলেন। এক ওভারে ১ রানে ২ উইকেট নেই হয়ে গিয়েছিল দলের।
১৮৪/৬ থেকে বাংলাদেশ শেষমেশ ২৫২ তে পৌঁছেছে নাসুম আহমেদ আর জাকের আলির ব্যাটে চড়ে। শেষ দিকে দুজনে ঝোড়ো ইনিংস খেলেন। সপ্তম উইকেটে যোগ করেছেন ৪৬ রান, তাও মাত্র ৪১ বলে। ওপেনিংয়ের পর থেকে এই জুটি পর্যন্ত বাংলাদেশ আজ ১০০ স্ট্রাইকরেটের জুটি দেখেনি একটাও।
২৪ বলে ২৫ রান করে নাসুম ফিরেছেন বটে, তবে জাকের ছিলেন শেষ পর্যন্ত। একবার জীবন পেয়েছেন, একবার কনকাশনের হাত থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন। তবে আজই প্রথম ওয়ানডে অভিষেক হওয়া জাকের শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে উঠে এসেছেন ২৭ বলে ৩৭ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে। আর তাতেই এক পর্যায়ে ২২০ কেও দূর আকাশের তারা মনে হতে থাকা বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে জমা পড়ে ২৫২ রানের পুঁজি।
ব্যাটাররা তাদের চ্যালেঞ্জে উতরে গেছেন অনেকটাই। এবার পালা বোলারদের। তাদের সামনে চ্যালেঞ্জ প্রথম ম্যাচের পারফর্ম্যান্সটা ধরে রাখা। ফ্লাডলাইটের আলোয় শিশিরভেজা মাঠে বোলাররা যদি সে চ্যালেঞ্জে উতরে যেতে পারেন, তাহলেই কেবল সিরিজে ফিরতে পারবে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর–
বাংলাদেশ- ২৫২/৭, ৫০ ওভার (শান্ত ৭৬, জাকের ৩৭, সৌম্য ৩৫, নাসুম ২৫; খারোতে ৩/২৮, রশিদ ২/৩২, গজানফর ২/৩৫)