পাপন-মজিবের গোলে জিতল বাংলাদেশ
‘গোল পেলেও জয় পেল না বাংলাদেশ’ – ম্যাচের নিয়তি এমনই মনে হচ্ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে এসে তা বদলে দিলেন পাপন সিং। যোগ করা সময়ে তার করা গোলই বাংলাদেশকে এনে দিল মালদ্বীপের বিপক্ষে ২-১ গোলের মধুর এক জয়।
অথচ প্রথমার্ধটা ইঙ্গিত দিচ্ছিল আগের ম্যাচের পুনরাবৃত্তিই বুঝি হতে চলেছে। সবকিছু প্রথম ম্যাচের চিত্রনাট্য মেনেই এগোচ্ছিল। দারুণ শুরু, এরপর গোল হজম, আর খেই হারিয়ে ফেলা। বাংলাদেশ মালদ্বীপের বিপক্ষে তাই শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল হোয়াইটওয়াশেরও।
প্রথম ম্যাচের সঙ্গে এই ম্যাচের মিলগুলো দেখুন। গত বুধবার সিরিজের প্রথম ম্যাচে ফলাফল ঠিক করে দেওয়া একমাত্র গোলটা করেছিলেন আলি ফাসির, আজও করলেন। প্রথম ম্যাচে ওই গোলটা এসেছিল প্রথম আধঘণ্টার ভেতর, আজও তাই হলো।
প্রথম ম্যাচে ওই গোলে তাকে মার্ক করতে ভুলেই গিয়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচেও আজ প্রায় কাছাকাছি দৃশ্য দেখা গেল, তপু বর্মণ মার্ক করতে গিয়েও পারলেন না তাকে আটকাতে। ফলাফল ২২তম মিনিটে আলি ফাসিরের গোল।
এই গোলের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ ভালো খেলছিল। গোলটা হজম করেই হতোদ্যম হয়ে পড়ে রীতিমতো। বলাই বাহুল্য, প্রথম ম্যাচেও এমন দৃশ্যের দেখাই মিলেছিল।
শুরুর একাদশে প্রথম ম্যাচের সঙ্গে মিলটা ভেঙেছিলেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। কাজেম কিরমানিকে বসিয়ে একাদশে এনেছিলেন প্রথম ম্যাচে বদলি হিসেবে নেমে দারুণ খেলা মজিবুর রহমান জনিকে।
সেই জনিই শেষমেশ পার্থক্যটা গড়ে দিলেন। ৪২তম মিনিটে বক্সের বাইরে বল পেলেন, এরপর শেখ মোরসালিনের সঙ্গে দেওয়া নেওয়া করলেন। তার ঠিক সামনে তখন এসে দাঁড়িয়েছেন তিন ডিফেন্ডার। তাদের দারুণ এক ডজে হকচকিয়ে দিয়ে দিক বদল করেন তিনি, সেই ইউটার্ন গোলরক্ষক হুসাইন শরিফকেও চমকে দেয় একটু।
জনি তার সুযোগটাই নিয়েছেন শেষমেশ। ডান পায়ের আগুনে এক শটে বলটা নিয়ে আছড়ে ফেলেন ফারপোস্টে। চলতি বছর বাংলাদেশকে দ্বিতীয় গোল এনে দেন তিনি। এই ম্যাচে চলে আসে ১-১ সমতা। সেই সমতার স্বস্তি নিয়েই বাংলাদেশ শেষমেশ গেছে প্রথমার্ধ বিরতিতে।
বিরতির পর মরিয়া হয়ে বাংলাদেশ চেষ্টা করেছে গোল পেতে। তবে সে গোল ধরা দিতে দিতেও দিচ্ছিল না যেন। বিশেষ করে শেষ দশ মিনিটে হতাশার অন্ত ছিল না। অভিষিক্ত পিয়াস আহমেদ নোভা আন্তর্জাতিক ফুটবলে তার প্রথম বলের ছোঁয়াতেই গোলের সুযোগ তৈরি করে ফেলেছিলেন। তবে শেষমেশ তার হেডার লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপর তিনি আরও এক সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন। একটু পরে ফ্রি কিক থেকে তপু বর্মণের চেষ্টাও বেরিয়ে যায় লক্ষ্যের বাইরে দিয়ে।
তাতে মনে হচ্ছিল ড্র নিয়েই বুঝি মাঠ ছাড়তে হচ্ছে বাংলাদেশকে। শেষ দিকে গোল হজম করে দলের ম্যাচ হারার নজির আছে অনেক। সে শঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছিল না। তবে সে দৃশ্যটা বদলে গেল যোগ করা সময়ে। বদলি খেলোয়াড় পাপন সিং ছয় গজের বক্সের ভেতর থেকে গোলটা করে বসেন তিনি। সেই এক গোলই বাংলাদেশের মুখে হাসি ফোটায়। বছরের দ্বিতীয় জয়টা তুলে নেয় বাংলাদেশ। বছরটা শেষ করে জয় দিয়ে।