ব্যাটে-বলে দাপট, জ্যামাইকায় ঘুরে দাঁড়াল বাংলাদেশ

ব্যাটে-বলে দাপট, জ্যামাইকায় ঘুরে দাঁড়াল বাংলাদেশ

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ১৬৪। ওয়েস্ট ইন্ডিজ তার জবাবে ১৪৬ রানে অলআউট। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের স্কোর ১৯৩। ম্যাচে এগিয়ে তারা ২১১ রানে। এখানো ৫ উইকেট অক্ষত। তৃতীয়দিন শেষে বাংলাদেশ তাহলে জ্যামাইকা টেস্ট জয়ের কথা ভাবতেই পারে। বাংলাদেশের এই ভাবনাকে আরো বিশ্বাসী করছে স্যাবেইনা পার্কে রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। এখানে এখন রান তাড়া করে ম্যাচ জিততে হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নতুন রেকর্ড গড়তে হবে। আগের রেকর্ড ছিল ২১২। এই টেস্টে এখনো বাংলাদেশের যে রান তা আরো বাড়ছে চতুর্থদিন। নিশ্চিতভাবেই বলা যায় সিরিজের দ্বিতীয় এবং শেষ টেস্টে সুদৃঢ় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ দল। এই টেস্ট জিতে সিরিজ ১-১ করার দারুণ একটা সুযোগ দলের সামনে।

এই সুযোগের জন্য বোলারদের পিঠ চাপড়ে দেওয়া প্রয়োজন। আরেকটু সুনির্দিষ্ট করে বললে পেসার নাহিদ রানার নামটা বিশেষভাবে উল্লেখ করতেই হয়। দুর্দান্ত পেস বোলিংয়ের নজির দেখিয়েছেন এই ডানহাতি। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথম ইনিংসে ১৪৬ গুটিয়ে দেওয়ার কাজটা মুলত তিনিই সেরেছেন। শিকার করেছেন ৫ উইকেট। ক্যারিয়ার এটাই তার প্রথমবারের মতো পাঁচ উইকেট শিকার। বাংলাদেশের অস্টম বোলার হিসেবে ইনিংসে তিনি পাঁচ বা তারচেয়ে বেশি উইকেট শিকারের কৃতিত্ব দেখিয়েছেন তিনি। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে বাংলাদেশের কোনো বোলারের টেস্টে ইনিংস পাঁচ উইকেট পাওয়ার এটাই প্রথম নজির।

নাহিদ রানার গতি ও নিখুঁত নিশানার কাছেই মুলত ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংসের প্রতিরোধ ভেঙ্গে পড়ে। সঙ্গী বোলার হিসেবে তাসকিন ও হাসান মাহমুদও ভালো পারফরমেন্স দেখান। দুই স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলামও এমন দিনে হাসি ফোটান। ৮৫ রানে ২ উইকেট নিয়ে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ গড়িয়ে থেমে যায় ১৪৬ রানে।

প্রথম ইনিংসে ১৮ রানের লিড পাওয়া বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুটা ভালো হয়নি। কোনো রান করার আগেই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন। তবে তেজি উইকেটে বাংলাদেশ কৌশল বদলে ব্যাট চালায়। শুধু প্রতিরোধ বা ডিফেন্সে না গিয়ে পাল্টা আক্রমণ করার কৌশল বেছে নেয়। কিছুটা মারমার কাট কাট ভঙ্গিতে ব্যাট চালায়। আর বাংলাদেশের এই কৌশলই এখন টেস্ট জয়ের সুবাস ছড়াচ্ছে। শাহাদাত হোসেন দীপু, মেহেদি হাসান মিরাজ ও লিটন দাস-তিন ব্যাটারই উইকেট হারালেও দ্রতগতিতে রান তোলায় স্কোরবোর্ডে বাংলাদেশের সঞ্চয়কে কিছুটা সমৃদ্ধ দেখাচ্ছে। শাহাদাত ২৬ বলে ২৮, মেহেদি ৩৯ বলে ৪২ এবং লিটন দাস ৩৪ বলে ২৫ রান করেন।

জাকের আলী খেলছেন ৪৯ বলে ২৯ রান নিয়ে। সঙ্গী হিসেবে তাইজুল ব্যাট করছেন ৯ রানে। আজ চতুর্থদিন লিডের স্বাস্থ্য যত সমৃদ্ধ হবে ততই এই টেস্টে বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা বাড়বে।

শারীরিক অসুস্থতার জন্য মুমিনুল হক দ্বিতীয় ইনিংসে তার নিয়মিত পজিশনে ব্যাট করতে নামতে পারেননি। আজ তার কাছ থেকেও দল ‘বড়কিছুর’ প্রত্যাশায়।

স্কোরকার্ড: বাংলাদেশ ১৬৪/১০। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৪৬/১০ (৬৫ ওভারে, ব্রাথওয়েট ৩৯, কার্টি ৪০, নাহিদ রানা ৫/৬১, তাসকিন ২/১৯, হাসান মাহমুদ ১/২০, তাইজুল ১/২৪, মেহেদি ১/১৫)। বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস: ১৯৩/৫ (৪১.৪ ওভারে, সাদমান ৪৬, শাহাদাত ২৮, মেহেদি ৪২, লিটন ২৫, জাকের ২৯*, তাইজুল ৯*)।

সম্পর্কিত খবর