‘পজিটিভ ব্যাটিংয়েই জ্যামাইকা জয়’
জ্যামাইকায় দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটিং সবাইকে খানিকটা অবাক করেছে। কঠিন উইকেটে দারুণ মেরে কেটে ব্যাট চালায় বাংলাদেশ দল। মাত্র ৫৯.৫ ওভারে ২৬৮ রান তুলে। ওভার প্রতি রান রেট পাঁচের কাছাকাছি, ৪.৪৭! এ তো পুরোদুস্তর ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাটিং। হঠাৎ এমন আক্রমণাত্মক ব্যাটিং কেন করলো বাংলাদেশ দল।
ক্রিকেটীয় সেই ব্যাখ্যায় বাংলাদেশ অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ বললেন, ‘এখানে আমাদের রান করাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। রান না করে শুধু ঠেকিয়ে ব্যাটিং করলে আমরা ম্যাচ জিততে পারতাম না। স্কোরবোর্ডে সঞ্চয়ের প্রয়োজন ছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সময় আমি আমার পুরো দলের খেলোয়াড়দের বলেছিলাম এখানে ইতিবাচক কায়দায় ব্যাট করতে হবে। পজিটিভ মেজাজ নিয়ে ব্যাট না করলে এখানে রান পাওয়া কঠিন হবে। প্রথম ইনিংসে আমরা ১৮ রানের লিড পেয়েছিলাম। উইকেট পরিস্থিতি দেখে আমরা বুঝতে পেরেছিলাম এখানে আড়াই’শ প্লাস স্কোর করতে পারলে আমাদের সামনে ম্যাচ জেতাটা সহজ হবে। ব্যাটিংয়ে নামার আগে দলের জন্য ম্যাসেজ ছিল পজিটিভ ব্যাটিং করতে হবে। সৌরভ ভাই (মুমিনুল হক) যখন অসুস্থ হয়ে পড়লো তখন ওয়ানডাউনে কে ব্যাট করবে সেটা ঠিক করতে আমরা একটু দ্বিধায় ছিলাম। তখন আমি দীপুকে বলি ওয়ানডাউনে ব্যাট করার জন্য। সে রাজি হয়। তাকে আমি সেই সঙ্গে জানিয়েও দিয়েছিলাম এখানে পজিটিভ মেজাজে (কিছুটা আক্রমনাত্মক) ব্যাট করতে হবে। রান তুলতে হবে। প্রথম বলই যদি মারার মতো হয় সেটাতেই চালাতে হবে। কেউ তোমার ব্যাটিং স্টাইল নিয়ে কেউ কিছু বলবে না। ও সেভাবেই খেলেছে। ওর ২৮ রান আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’
বাংলাদেশ অধিনায়ক মিরাজ আরও যোগ করছিলেন, ‘আমি যখন চার নম্বরে ব্যাট করতে নামলাম তখন আমিও একই রকম মানসিকতা নিয়ে ব্যাট করি। কারণ আমরা জানতাম এই উইকেটে রান খুব গুরুত্বপূর্ণ। সবাইকে বলে দেওয়া হয়েছিল একটা রানও অনেক গুরুত্বপূর্ণ এখানে। প্রত্যেকেই যেন রানের জন্য খেলে। টেস্ট ক্রিকেট মানেই যে শুধু বল ঠেকিয়ে যাবো, ডিফেন্স করবো তা কিন্তু না। আমরা এই ম্যাচে সেই ভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে খেলেছি।’
তৃতীয়দিন মাত্র ৪১ ওভার ব্যাট করে বাংলাদেশ ৫ উইকেট হারিয়ে তুলেছিল ১৯৩ রান। ওভার প্রতি রানরেট ছিল চারের বেশি। চতুর্থদিন সকালেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখে বাংলাদেশ দল। আর এই কাজে সবচেয়ে বেশি সাফল্য দেখান জাকের আলী। মাত্র ১০৬ বলে ৮ বাউন্ডারি ও ৫ ছক্কায় তার ৯১ রান বাংলাদেশের ইনিংসকে ২৬৮ রানে পৌছে দেয়। ৮০ বলে হাফসেঞ্চুরি হাঁকানোর পর পরের ২৬ বলে ৪১ রান তুলে নেন জাকের আলী। যেখানে ছক্কার মার ৪টি। দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু, মাঝে এবং শেষের দিকে এই আক্রমনাত্মক মেজাজের পজিটিভ ব্যাটিংই জ্যামাইকা টেস্টে বাংলাদেশের জয়ের কাজটা সহজ করে দেয়।
বোলাররা প্রয়োজনের সময় দারুণ পারফর্ম করেছেন এবং ব্যাটিংয়ের এই পজিটিভ অ্যাপ্রোচই বাংলাদেশকে জ্যামাইকায় ১০১ রানের জয় এনে দিয়েছে।