ইনজুরি বাড়াচ্ছে এশিয়া কাপ!
বুঝে উঠতে পারেননি আগা সালমান। রবীন্দ্র জাদেজার লাফিয়ে ওঠা বলটি সুইপ করতে গিয়েছিলেন। হেলমেট ছিল না মাথায়। বল এসে তাই সরাসরি আঘাত করে মুখে। কয়েক সেকেন্ডের মাঝে পাকিস্তানের ব্যাটার বুঝতে পারেন কেটে গেছে অনেকটা। রক্তও ঝরছে। সুপার ফোরে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে পাওয়া সেই চোট তাকে ছিটকে দিয়েছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে। হয়তো আসর থেকেও ছিটকে গেছেন সালমান!
একের পিঠে আরেক করে বাড়ছে চোটে পড়া খেলোয়াড়ের তালিকা। বিশ্বকাপের আগে জোরালো হচ্ছে বড় শঙ্কা। এশিয়া কাপে অল্প সময়ের ব্যবধানে লম্বা দূরত্বে ট্রাভেলিং, প্রচণ্ড গরম কিংবা হুটহাট বৃষ্টি, পিচ্ছিল মাঠ এবং ব্যস্ত সূচি— খেলোয়াড়দের চোটে পড়ার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এসব। এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের আসর যেন হয়ে উঠেছে চোটের আধার। বাংলাদেশের মোস্তাফিজুর রহমান, নাজমুল হোসেন শান্তসহ ইতোমধ্যে অন্তত এক ডজন খেলোয়াড় পড়েছেন চোটে, অথবা লড়ছেন চোট মানিয়ে।
ভারতের বিপক্ষে দুই দিনব্যাপী ম্যাচে পাকিস্তানের তিনজন খেলোয়াড় পেয়েছেন চোট। এর মাঝে দুজনকে নিয়ে বেশি শঙ্কায় পাকিস্তান। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়ায় দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তকে। চোট থেকে সেরে ওঠার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াও শুরু করে দিয়েছেন বাংলাদেশের বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
চোটের বিপক্ষে যাচ্ছেতাইভাবে ধুঁকছেন ভারতের শ্রেয়াস আইয়ারও। এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের একটি ম্যাচ খেললেও তাকে নিয়ে শঙ্কা আরও দূরে, বিশ্বকাপেও। পিঠের ব্যথায় কাবু শ্রেয়াস মাসখানেক পর বসা বিশ্বকাপে খেলতে পারবেন কি না, তা নিয়ে বড় দুশ্চিন্তা ভারতের। সবশেষ আইপিএলে ব্রাত্য হয়ে থাকা শ্রেয়াস এশিয়া কাপের বাকি ম্যাচগুলোতেও যেন থেকেও নেই।
সাদা চোখের বিচারে, চোট বুঝি সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা করেছে পাকিস্তানের, তারপর বাংলাদেশের। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা বাংলাদেশের ব্যাটার শান্তকে ছিটকে দিয়েছে। তাতে সাকিব আল হাসানের দল হারিয়েছে ব্যাটিং গভীরতা। সুপার ফোরে ব্যাটিং ব্যর্থতায় দলও দেখেছে টানা হার। ওদিকে পাকিস্তানের দুই তারকা পেসার হারিস রউফ ও নাসিম শাহকে এশিয়া কাপে না খেলানোর দিকেই ঝুঁকছে পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ড!
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, হারিস ও নাসিম এখন পাকিস্তান দলে মেডিকেল দলের তত্ত্বাবধানে আছেন। ব্যাকআপ হিসেবে দুই পেসার শাহনওয়াজ দাহানি ও জামান খানকে ডাকা হয়েছে। প্রাথমিক সতর্কতা হিসেবে তাদের ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্রিকেট পাকিস্তান। কিন্তু নাসিম ও হারিসকে কবে পাওয়া যাবে সেটি নিয়ে নিশ্চয়তা এখনও নেই।
তবে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড সংশ্লিষ্ট কয়েকজন জানিয়েছেন, হারিসের এমআরআই রিপোর্টে খারাপ কিছু ধরা পড়েনি। নাসিম শাহর এমআরআই রিপোর্ট এখনও পায়নি পিসিবি। তবে সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে দুজনের না খেলার সম্ভাবনা জোরালো বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম। এমনকি পাকিস্তান ফাইনালে উঠলে তাদের পাবে কি না, তা নিয়েও আছে সন্দেহ। শঙ্কা রয়েছে বিশ্বকাপের আগে সুস্থতা নিয়েও।
এশিয়া কাপের আগে শ্রীলঙ্কার একঝাঁক তারকা চোটে পড়ে ছিটকে গেছেন। দুশমন্ত চামিরা, ভানিদু হাসারাঙাসহ বেশ কিছু তারকাকে বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখেই এশিয়ার মঞ্চে খেলায়নি শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ড। একই পথে হাঁটছে অন্য দেশগুলোও। চোট ম্যানেজ করে নয়, বৈশ্বিক আসরে সেরা খেলোয়াড়কে নিশ্চিতভাবেই ফিট হিসেবে চাইবে যেকোনো দল।