শচীনের মাঠে, শচীনকে ছাড়িয়ে রেকর্ডের চূড়ায় কোহলি
ম্যাচ শুরুর আগের একটা ছবি নজর কাড়ল বেশ। একই ফ্রেমে বিরাট কোহলি, শচীন টেন্ডুলকার আর ডেভিড বেকহ্যাম। শচীনের ঘরের মাঠে খেলা, তিনি হয়তো এমনিতেই আসতেন, তবে সঙ্গে বেকহ্যামের উপস্থিতি বাড়তি মাত্রা যোগ করল ছবিটায়, দুজনই আজ ওয়াংখেড়েতে হাজির ইউনিসেফের দূত হিসেবে।
মুম্বাইয়ের ঐতিহাসিক এই স্টেডিয়াম আজ এমনিতেও কানায় কানায় ভরা, তারকা-মহাতারকাদের উপস্থিতিও চোখে পড়ার মতো। আকাশ আম্বানি থেকে শুরু করে রণবীর কাপুর, কে আসেননি! আসারই কথা অবশ্য, ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল, সেখানে খেলছে ভারত, এমন ঠাসা গ্যালারি হওয়ারই কথা।
রেকর্ড গড়তে সেই ঠাসা গ্যালারির সামনে আজকের মঞ্চটাকেই বেছে নিলেন বিরাট কোহলি। বনে গেলেন এক বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রান করা ব্যাটার। তাও টপকালেন কাকে? শচীন টেন্ডুলকারকে, ওয়াংখেড়ের সামনে যার মূর্তি বসানো, যে মাঠের ঘরের ছেলে তিনি, যিনি এ ম্যাচেও বসে আছেন গ্যালারিতে।
তাও কি একটা রেকর্ড? একটা নয়, দুটো নয়, তিন তিনটে রেকর্ড ভেঙে দিলেন শচীনের। তার মধ্যে শেষটা যখন ভাঙলেন, তখন পড়িমরি করে এসে খুললেন হেলমেট-গ্লাভস, কুর্ণিশ করলেন গ্যালারিতে থাকা শচীনকে।
এই ম্যাচের আগ পর্যন্ত বিশ্বকাপের নকআউটে কোহলির পারফর্ম্যান্স ছিল বড্ড ম্লান। ২৪, ৯, ৩৫, ৩, ১, ১... তিন বিশ্বকাপের নকআউটে এই ছিল কোহলির রান। নকআউটে রান করতে পারেন না, এমন একটা অপবাদ কাঁধে নিয়ে ঘুরছিলেন কোহলি, আজ সেটাও ঘুচিয়ে ফেললেন।
৩৬ রান করতেই পেছনে ফেলেন নকআউটে নিজের সর্বোচ্চ রানটাকে। এর সঙ্গে আরও ১৪ রান যোগ করতেই ধরা দিল প্রথম রেকর্ডটা। এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ফিফটির রেকর্ডটা হয়ে যায় তার। ২০০৩ আর ২০১৯ বিশ্বকাপে শচীন আর সাকিব আল হাসান ৭টি করে পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলে রেকর্ডটা রেখেছিলেন নিজেদের দখলে। আজ যা হয়ে যায় কোহলির।
এরপর আসে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রানের কীর্তির পালা। এক বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ডটা ছিল শচীন টেন্ডুলকারের। ৬৭৩ রান নিয়ে তিনি ছিলেন শীর্ষে। আর এদিকে কোহলি ম্যাচটা শুরু করেছিলেন ৫৯৩ রানে। শচীন থেকে পিছিয়ে ছিলেন ৮০ রানের ব্যবধানে। সেটাই করে ফেললেন আজ।
এত দূর যখন এলেন, কোহলি সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ডটাও না ভেঙে ফিরবেন কেন? কোহলি ফেরেননি। ক্র্যাম্পে কাতরাচ্ছিলেন বেশ, তবে তা তাকে থামাতে পারেনি। সেঞ্চুরি করলেন। শচীনের ৪৯ সেঞ্চুরির রেকর্ডকে পেছনে ফেলে প্রথম ব্যাটার হিসেবে ওয়ানডেতে ৫০টি সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড গড়ে ফেলেন।