অবসর নিলেও বিশ্বকাপে থাকবেন জানতেন স্টোকস

অবসর নিলেও বিশ্বকাপে থাকবেন জানতেন স্টোকস

ক্যারিয়ারটাকে লম্বা করতে ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় বলে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি বেছে নিয়েছিলেন বেন স্টোকস। সেখানেও চোটের হানা। হাঁটুর চোটে হাত ঘুরাতে পারেনি অ্যাশেজ সিরিজের শেষ দিকেও। তবে ব্যাটার স্টোকসও যে ভয়ঙ্কর, কঠিন পরিস্থিতিতে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে জানেন; ইংল্যান্ডের সবশেষ দুটি বিশ্বকাপ জয়েই যার প্রমাণ। তাই অবসর নিলেও তাকে রেখে বিশ্বকাপ কল্পনা করতে পারছিল না ইংল্যান্ড। বেন নিজেও ব্যাপারটা উপলব্ধি করতে পারছিলেন। তাই ফেরার ভাবনাটা তার মাথাও ছিল।

দুই’য়ে দুই’য়ে যখন চার মিলে গেল তখন আর না করেননি বেন। বিশ্বকাপ খেলার ব্যাপারে সম্মতি জানান ৩২ বছর বয়সী এই তারকা। সেসব কথায় কাল সংবাদ মাধ্যমকে জানাচ্ছিলেন, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৮১ রানের জয়ের ম্যাচে ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৮২ রানের ইনিংস খেলা বেন।

তৃতীয় ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করতে নেমে ১৩ রানে ২ উইকেট হারিয়ে যখন ধুঁকছে ইংল্যান্ড; তখন উইকেটে আসেন বেন। চাপে ভেঙে না পরে উল্টো প্রতিপক্ষকে চাপে রেখেছেন। ম্যাচের পুরোটা সময় ব্যাট হাতে শাসন করেছেন কিউই বোলারদের। খেলেছেন ক্যারিয়ার সেরা ১৮২ রানের অনবদ্য ইনিংস। ১২৪ বলের ইনিংসটি সাজানো ছিল ১৫ চার ও ৯টি ছক্কায়। কেন অবসর ভেঙে ফের ওয়ানডেতে বেন; এই প্রশ্নের উত্তরটা এই ইনিংসেই দেওয়া হয়ে গেছে তার। বেন কীর্তির দিনে কিউইদের ৩৬৯ রানের টার্গেট ছুড়ে স্বাগতিকরা। জবাবে মাত্র ১৮৭ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারীরা।

ব্যাট যার এতো কথা বলে মুখে তার উত্তর না দিলেও চলে। এরপরও সংবাদ সম্মেলনে এসে মন খুলে কথা বলেছেন বেন, ইংল্যান্ডের হয়ে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করার সুযোগ পেয়েও তা করতে না পেরে হতাশ হননি বরং জেসন রায়ের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৮০ রান টপকে যাওয়া নিয়ে প্রকাশ করেছেন দুঃখ।যা নিয়ে মজার ছলে বেন বলেন, ‘আমি আসলেই রেকর্ডটি সম্পর্কে জানতাম না যতক্ষণ না মাঠের বাইরে থেকে আমাকে এটা জানানো হয়। আর এটা যখন জানতে পেরেছি তার পরের বলেই আমি আউট হয়ে যাই।’

চোট থাকার পরও অবসর ভেঙে বিশ্বকাপে খেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া নিয়ে বেন বলেন, ‘অবশ্যই আমাকে দীর্ঘ সময় ধরে আমার হাঁটুর সম্পর্কে অনেক কিছু জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। আমি তাদের বলেছিলাম এটা আমার ওপর ছেড়ে দেওয়ার জন্য। আমি জানতাম, আমি এই ম্যাচগুলোতে এবং সম্ভাব্য বিশ্বকাপে খেলব। তবে আমি তাদের এও বলেছিলাম আমাকে রাডারের বাইরে রাখা সবচেয়ে সহজ ছিল।’

৫০ ওভারের ক্রিকেটটা যে বেশ লম্বা। দীর্ঘ সময় ধরে চলে। থিতু হলে লম্বা ইনিংস খেলা যায়। সে সব এক ম্যাচেই টের পেয়েছেন বেন। বলেন, ‘যতটুকু সময় আছে ভাবা হয় এর চেয়ে অনেক বেশি সময় পাওয়া যায় ওয়ানডে ক্রিকেটে। আর এর জন্য ম্যাচ সচেতনতা এবং ম্যাচ স্মার্টনেসের দরকার হয়। এই দিক দিয়ে আজকের দিনটি আমার জন্য ভাল ছিল। ৫০-ওভারের ক্রিকেট কীভাবে এগোয় তা আবার পরিচিত হলাম। আমরা শুরুতে কিছু দ্রুত উইকেট হারিয়ে ফেলেছিলাম, তারপর উইকেটে গিয়ে তাদের কিছুটা চাপের মধ্যে রাখতে চেয়েছিলাম। তবে বারবার আমাকে নিজেকে পরীক্ষা করতে হয়েছে। আমি উপরের দিকে তাকিয়ে দেখি এখনও ২৩-৩৪ ওভার বাকি ছিল। সত্যি বলতে এভাবেই একদিনের ক্রিকেট চলতে পারে। আর এই পুরো ইনিংস জুড়ে আমি যে জিনিসটি উপলব্ধি করতে পেরেছি তা হল আসলে কতটা সময় পাওয়া যায়।’

সম্পর্কিত খবর