সাকিবকে মনে করাচ্ছেন শরফুদ্দৌলা
বিশ্ব ক্রিকেটে সাকিব আল হাসান ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের পোস্টার বয়। সর্বকালের অন্যতম সেরা এ অলরাউন্ডার এক যুগের বেশি সময় ধরে বিশ্বক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তবে সময়ের পরিক্রমায় সাকিব এখন বাংলাদেশ ক্রিকেট থেকে অনেক দূরে। লাল সবুজের জার্সিতে তাকে আর হয়তো দেখা যাবে না। তাহলে প্রশ্ন আসে, সাকিবের পর বাংলাদেশ ক্রিকেটের বিজ্ঞাপন হবেন কে?
সাকিবের আবির্ভাবের পর বাংলাদেশ ক্রিকেটে সাকিবের মত আর কাউকে পাওয়া যায়নি। তরুণরা অনেক প্রত্যাশা দেখিয়ে দলে সুযোগ পেলেও কেউ টিকে থাকতে পারেননি সাকিবের মত করে। বিশ্বক্রিকেটে প্রথম ও একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ক্রিকেটের সব ফরম্যাটে অলরাউন্ডার র্যাঙ্কিংয়ের ১ নাম্বারে এসেছিলেন সাকিব। বাংলাদেশ ক্রিকেটের আর কেউ কি তা পারবেন করতে? উত্তরটা খুবই সহজ। অদূর ভবিষ্যতে এমন কাউকে পাবেনা বাংলাদেশ। তাহলে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে বিশ্ব দরবারে প্রতিনিধিত্ব করবেন কে?
এ প্রশ্নের উত্তর জানতে আমাদের বাংলাদেশ ক্রিকেট খেলোয়াড়দের থেকে চোখটা সরাতে হবে অন্যদিকে। তিনিও অবশ্য মাঠেরই মানুষ কিন্তু পালন করেন ভিন্ন দায়িত্ব। বাংলাদেশ ক্রিকেটের বর্তমানে সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপণ আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। যিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটকে বিশ্বদরবারে গৌরবের সঙ্গে প্রতিনিধিত্ব করছেন।
সৈকত বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র আইসিসির এলিট প্যানেলের আম্পায়ার। গত বছরের মার্চে এলিট প্যানেলে যুক্ত হন তিনি। সৈকত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আম্পায়ারিং শুরু করেন ২০১০ সালে মিরপুরে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে। তার পরের বছর টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হলেও ক্রিকেটের অভিজাত ফরম্যাট টেস্টে আম্পায়ারিং শুরু করতে সৈকতকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১১ বছর। ২০২১ সালে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ দিয়ে টেস্ট ফরম্যাটে পথচলা শুরু করেন সৈকত। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি সৈকতকে।
এখন পর্যন্ত ১৬ টেস্ট ,৬৪ ওয়ানডে ও ৫২ টি-টোয়েন্টিতে ফিল্ড আম্পায়ারের ভূমিকা পালন করেছেন সৈকত। সম্প্রতি ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে আম্পায়ারিং করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন সৈকত। ভারতে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও ৫ ম্যাচে ফিল্ড আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সৈকত। ২০২৪ এ অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ৩ ম্যাচ আম্পায়ারিংয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নবম আসরেও গ্রুপ পর্বে দুটি ম্যাচে ফিল্ড আম্পায়ারিং করবেন সৈকত। পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ডের উদ্বোধনী ম্যাচ ছাড়াও ২৬ ফেব্রুয়ারি আফগানিস্তান-ইংল্যান্ড ম্যাচেও আম্পায়ার হিসেবে থাকবেন সৈকত।
আইসিসির কোনো বড় টুর্নামেন্ট হোক কিংবা বড় কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ, সৈকত আম্পায়ারিং করে যাচ্ছেন সমানতালে। তার দেওয়া সিদ্ধান্ত রিভিউ নিয়ে পরিবর্তিত হতে দেখা যায় খুব কমই।
বিশ্ব ক্রিকেটে সৈকত বাংলাদেশকে তুলে ধরছেন সাকিবের মত করেই সেরা হয়ে।