হামজা চৌধুরির সবুজ যাত্রা, অথচ ভারতীয় শিকড়ের ফুটবলারদের জন্য বন্ধ দরজা
ইংল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-২১ দলে খেলা হামজা চৌধুরির বাংলাদেশের হয়ে সিনিয়র পর্যায়ে অভিষেক ঘিরে ভারতীয় ফুটবল মহলে আলোচনার ঝড় উঠেছে। প্রশ্ন উঠছে— যদি হামজা বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারেন, তবে ইউরোপ বা অন্য দেশের লিগে খেলা ভারতীয় বংশোদ্ভূত (পারসন্স অফ ইন্ডিয়ান অরিজিন বা পিআইও) ফুটবলাররা কেন ভারতের হয়ে খেলতে পারবেন না?
ফিফার নিয়ম অনুযায়ী, কোনও দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে প্রতিনিধিত্ব করতে হলে সংশ্লিষ্ট দেশের বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে। অর্থাৎ, কেবল ভারতীয় বংশোদ্ভূত হওয়া বা ভারতীয় শিকড় থাকা যথেষ্ট নয়। নাগরিকত্বই মূল বিষয়।
ভারতের আইন অনুযায়ী, দ্বৈত নাগরিকত্বের অনুমতি নেই। যে কোনও ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিদেশি ফুটবলার যদি ভারতের হয়ে খেলতে চান, তাকে প্রথমে নিজের বর্তমান দেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করে ভারতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে হবে। যদিও কার্ডধারীরা কিছু সুবিধা পান, জাতীয় দলে খেলার অধিকার তাদের নেই।
এই কঠোর নিয়মের কারণে বহু প্রতিভাবান ফুটবলার ভারতের হয়ে খেলতে আগ্রহী হলেও পিছিয়ে যাচ্ছেন। যেমন স্কটিশ লিগে খেলা ইয়ান ধান্ডা স্পষ্ট জানিয়েছেন, ভারতীয় পাসপোর্ট গ্রহণ করলে তিনি আর ব্রিটেনের লিগে খেলতে পারবেন না।
ভারতের র্যাঙ্কিং বর্তমানে খুব একটা ভালো নয়। যার কারণে, ভারতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণ করলে ইউরোপে ফুটবল খেলার সুযোগ অনেকটাই ক্ষীণ হয়ে যায়। 'ওয়ার্ক ভিসা' পাওয়ার ক্ষেত্রে ফিফা র্যাঙ্কিং বড় ভূমিকা রাখে। ফলে ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলিতে খেলার পথ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
২০০৮ সালে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রকের একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কেবল ভারতীয় নাগরিকরাই দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন। এই নিয়ম চ্যালেঞ্জ করেছিলেন কর্ম কুমার। তবে আদালতও সরকারের নিয়মকে বৈধ বলে ঘোষণা করে।
সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার বর্তমান সভাপতি কল্যাণ চৌবে জানিয়েছেন, তিনি কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করবেন যাতে পিআইওদের খেলতে দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। যদিও প্রাক্তন সহ-সভাপতি সুব্রত দত্তের মতে, এটি সহজ হবে না। অতীতে মাইকেল চোপড়াকে ভারতীয় দলে আনার চেষ্টা হলেও, ব্রিটিশ পাসপোর্ট ছাড়তে না চাওয়ায় সেটি সম্ভব হয়নি।