শেষবার দেশের জার্সিতে মাঠে নামার আকুতি সাকিবের
বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে আলোচিত চরিত্র, সাকিব আল হাসান। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রায় দুই দশক কাটিয়ে এখন তিনি সরে দাঁড়িয়েছেন বেশ কিছু ফরম্যাট থেকে। তবে থেমে যেতে চান না এই অলরাউন্ডার। বরং দেশের হয়ে শেষবার মাঠে নামার তীব্র ইচ্ছা নিয়েই অপেক্ষায় আছেন সুযোগের, চাচ্ছেন নিজের বিদায়ী অধ্যায়টা বাংলাদেশের মাটিতেই লিখতে।
গেল বছরের জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনের সময় দেশে না থাকায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন সাকিব। কানাডায় পারিবারিক সফরের ছবি ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, যা নিয়ে ক্ষোভ জন্মায় ভক্ত-সমর্থকদের মধ্যে। এখন সেই সময়ের ভুল স্বীকার করে নিচ্ছেন তিনি। জানালেন, ছবিটি তিনি পোস্ট করেননি, তবে একজন পাবলিক ফিগার হিসেবে সচেতন থাকা উচিত ছিল।
একটি ইংরেজি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাকিব বলেন, 'আমি এখনো চাই বাংলাদেশের হয়ে খেলেই অবসর নিতে। আমার সবচেয়ে বড় ইচ্ছে দেশের জার্সিতে খেলা এবং এজন্য আমি আমার সবটুকু দিতে রাজি আছি।'
ওয়ানডে দল থেকেও এখন ব্রাত্য সাকিব। বিশ্বকাপের পর তাকে আর দলে দেখা যায়নি। টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি থেকে আগেই অবসর নিয়েছেন। তবুও থেমে যাননি। ফিরতে চান, খেলতে চান। এজন্য দেশের ক্রীড়া উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টা ও বিসিবি সভাপতির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন তিনি।
নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে সাকিব আরও বলেন, 'আমি এখন এমপি না। কিন্তু কখনোই কোনো রাজনৈতিক পদের অধিকারী ছিলাম না। আমি শুধু ক্রিকেটারই ছিলাম এবং থাকতে চেয়েছি। আমাকে রাজনীতিতে জড়ানোর কথা বলা হয়নি। শুধু বলা হয়েছে ক্রিকেটে মনোযোগ দাও, সেটাই করেছি।'
সমালোচনার মুখে পড়েও নিজের ক্যারিয়ারের দীর্ঘ পথচলার দিকে ইঙ্গিত করে সাকিব বলেন, 'আপনি যদি আমাকে বিচার করেন, সেটা ১৮ বছর দিয়ে করবেন, না কি গত ছয় মাস দিয়ে, এটা আপনার বিষয়। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের হয়ে খেলার অধিকার আমার আছে।'
তবে সবকিছু ছাপিয়ে সাকিবের চাওয়া একটাই—দেশের জার্সিতে শেষবার মাঠে নামা। তার ভাষায়, 'আমি চাই অন্তত একটি সিরিজ খেলতে, নাহয় আরও এক বছর। যদি সুযোগ পাই, যদি সদিচ্ছা থাকে, তাহলে সবকিছু সম্ভব। বিষয়টি সমাধান হতে পারে শীর্ষ পর্যায় থেকেই।'
আপাতত যুক্তরাষ্ট্রেই রয়েছেন সাকিব। দেশে ফিরে আবার ক্রিকেটে ফেরার স্বপ্নটা কবে বাস্তব হবে, সেটা নির্ভর করছে শুধু ক্রিকেটীয় প্রস্তুতির ওপর নয়, বরং আরেকটু বড় পরিসরের রাজনৈতিক ও সামাজিক গ্রহণযোগ্যতার ওপরও।