টানা দুই হার, ফ্যাকাশে হয়ে আসলো জ্যোতিদের বিশ্বকাপ স্বপ্ন
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের শুরুটা দুর্দান্ত করেছিল বাংলাদেশ দল। টানা তিন ম্যাচে তিন জয়ে বিশ্বকাপের টিকিট পাওয়া থেকে সামান্য একটু দূরে ছিল নিগার সুলতানা জ্যোতিরা। প্রয়োজন ছিল শেষ দুই ম্যাচে এক হয়। তবে আবারও তীরে এসে তরী ডুবলো টাইগ্রেসদের। স্বপ্ন থেকে বিশ্বকাপের টিকিট পাওয়া পরিণত হয়েছে শঙ্কায়। পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে ৭ উইকেটে হেরেছে জ্যোতির দল। বাংলাদেশের স্বপ্ন এখন ঝুলছে থাইল্যান্ডের কাঁধে। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বড় ব্যবধানে জিতলেই বাংলাদেশ ছিটকে যাবে বিশ্বকাপ থেকে।
পাকিস্তানের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিতের ম্যাচে আজ লাহোরে স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৩৯.৪ ওভারে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় পাকিস্তানের মেয়েরা। আর তাতেই টানা দুই হারে জ্যোতিদের বিশ্বকাপের স্বপ্ন অনেকটাই ফ্যাকাশে হয়ে এসেছে।
১৭৯ রানের ছোট লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই পাকিস্তান শিবিরে আঘাত হানেন মারুফা আক্তার। ওপেনার সাওয়াল জুলফিকারকে ফেরান ২ রানের মাথায়। বাংলাদেশ যে সহজে হাল ছেড়ে দেবে না তার ই আভাস ছিল এটা। তবে এরপর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় পাকিস্তান। মুনেবা আলি ও শিদরা আমিন মিলে গড়েন ৮০ রানের জুটি। তাতেই ম্যাচ থেকে অনেকটাই ছিটকে যায় বাংলাদেশ।
৮২ রানের মাথায় পাকিস্তানের দ্বিতীয় উইকেট নেওয়ার পরেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি জ্যোতির দল। তৃতীয় উইকেট জুটি গড়ে ৭৪ রানের জুটি। আর তাতেই ম্যাচ হাতের বাইরে চলে যায় টাইগ্রেসদের। মুনেবা আলি করেন ৬৯ রান। আর আলিয়া রিয়াজের ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৫২ রান। আর তাতেই বাছাইপর্বে একমাত্র দল হিসেবে অপরাজিত থেকে বিশ্বকাপে অংশ নেবে পাকিস্তান।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই পাকিস্তানি বোলারদের তোপের মুখে পড়ে মেয়েরা। দলীয় সংগ্রহ ১০ রানেই হারায় প্রথম উইকেট। ২ ওভারের শুরুতে রানের খাতা খোলার আগেই আউট হন ফারজানা হক। চারে নামা অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতিও ফেরেন ১ রান করে। তবে রানের পালে হাওয়া দেন রিতু মনি। ৭৬ বলে ৫ চার দিয়ে ৪৮ রানের ইনিংস খেললে স্বপ্ন দেখতে শুরু করে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।
অপরপ্রান্তে লড়তে থাকা ফাহিম খাতুনকে সঙ্গে নিয়ে বোঝাপড়া চালিয়ে গেলেও ৩৮ ওভারে নাশারা সান্দুর বলে আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন রিতু। তার বিদায়ের পরে চাপে পড়েও ভালো খেলতে থাকেন ফাহিমা। ৪টি চারে ৫৩ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। এরপরে সাজঘরে ফেরার ব্যস্ততা বাড়লে রানের গতি হারায়। গত ম্যাচে শেষ ওভারে দুর্দান্ত ইনিংস খেলা রাবেয়া খাতুনের ব্যাট অবশ্য আজকে হাসেনি। তাতে ১৭৮ রানের মাঝারি পুঁজি নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশের মেয়েরা। পাকিস্তানের হয়ে বল হাতে ৩ উইকেট তুলে নেন ফাহিম সানা।
এই হারের পর এখন বাংলাদেশের নজর থাকবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও থাইল্যান্ডের ম্যাচে। এ ম্যাচে যদি থাইল্যান্ড জিতে যায় তাহলে কোনো হিসাব নিকাশ ছাড়াই বিশ্বকাপে পাকিস্তানের সঙ্গী হবে টাইগ্রেসরা। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতলে আসবে রান রেটের সমীকরণ। থাইল্যান্ডকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে দিলে বাংলাদেশ ছিটকে যাবে বিশ্বকাপ থেকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ১৭৮/৯ (রিতু মনি ৪৮, ফাহিমা খাতুন ৪৪)
পাকিস্তান : ৩৯.৪ ওভারে ১৮১/৩ ( মুনেবা ৬৯, আলিয়া রিয়াজ ৫২)
ফল: ৭ উইকেটে জয়ী পাকিস্তান