রাব্বীর গোলে ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে রোমাঞ্চকর জয় বাংলাদেশের
আসরের অন্যতম কঠিন প্রতিপক্ষ স্বাগতিক ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। শুরুতে দুই গোলে এগিয়ে গেলেও ম্যাচের মাঝপথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিল দলটি। যখন মনে হচ্ছিল, জয় হয়তো অধরাই থেকে যাবে, তখন শেষ মুহূর্তের নাটকীয়তায় গোল করে দলকে এনে দিলেন কাঙ্ক্ষিত জয় ফজলে রাব্বী। জাকার্তায় আয়োজিত এএইচএফ কাপ হকির গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে রুদ্ধশ্বাস এক লড়াইয়ে ৩-২ ব্যবধানে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
ম্যাচের প্রথম কোয়ার্টার ছিল গোলশূন্য। ইন্দোনেশিয়ার চেনা মাঠে আত্মবিশ্বাসী শুরু করে স্বাগতিকরা। তাদের ডিফেন্স বেশ জমাট ছিল, বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডরা সার্কেলের মধ্যে তেমন সুযোগ সৃষ্টি করতে পারছিলেন না। তবে দ্বিতীয় কোয়ার্টারে রণকৌশল বদলায় বাংলাদেশ। ২৫তম মিনিটে ডান দিক থেকে রাকিবুলের স্কয়ার হিট থেকে দুর্দান্ত ফ্লিকে গোল করেন ওবায়দুল ইসলাম জয়। গোলের পর বাংলাদেশের খেলায় আসে গতি। কয়েক মিনিট পরই সোহানুর রহমান সবুজ পেনাল্টি কর্নার থেকে ড্রাগ ফ্লিকে ব্যবধান করেন দ্বিগুণ।
এই কোয়ার্টারের শেষ মুহূর্তে ফিরে আসে ইন্দোনেশিয়া। রক্ষণভাগের অসাবধানতার সুযোগ নিয়ে আলফান্দি দূরবর্তী কোণ থেকে রিভার্স হিটে গোল করে ব্যবধান কমিয়ে আনেন। তৃতীয় কোয়ার্টারের শুরুতেই সমতায় ফিরে আসে স্বাগতিকরা। আকমল খায়েরউল্লাহর হালকা হিট বাংলাদেশ গোলকিপারকে পরাস্ত করে ম্যাচে ফেরান স্বাগতিকদের। এরপর দুই দলই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে, তবে সুযোগ কাজে লাগাতে পারছিল না কেউই।
চতুর্থ ও শেষ কোয়ার্টারে ম্যাচ গড়ায় অনিশ্চয়তার দিকে। যখন মনে হচ্ছিল, ম্যাচটি ড্র হয়েই শেষ হবে, তখনই আসে নাটকীয় মোড়। শেষ বাঁশি বাজার মাত্র ২০ সেকেন্ড আগে ফজলে রাব্বীর সুযোগসন্ধানী হিট ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়। ওই গোলেই জয় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের। দলের সব খেলোয়াড় এবং ডাগ আউটে থাকা কোচিং স্টাফ উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন।
এই জয়ে দুই ম্যাচে পূর্ণ ৬ পয়েন্ট নিয়ে পুল ‘বি’-এর শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। আসর শুরু করেছিল তারা কাজাখস্তানকে ৫-১ গোলে হারিয়ে। সেই ধারাবাহিকতা এবার ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষেও বজায় রেখেছে মামুনুর রশীদের দল। আজকের ম্যাচে প্রতিপক্ষ ছিল শুধু মাঠে নয়, ডাগ আউটেও। কারণ, ইন্দোনেশিয়ার বর্তমান কোচ মালয়েশিয়ান গোবিনাথান ইনাম এক সময় ছিলেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ। ফলে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের সম্পর্কে তার ভালোই ধারণা ছিল। অন্যদিকে বাংলাদেশের ডাগ আউটে ছিলেন মামুনুর রশীদ, যিনি নয় বছর পর জাতীয় দলের দায়িত্বে ফিরেছেন। এই ব্যক্তিগত লড়াইটিও শেষ পর্যন্ত জয় পেয়েছে বাংলাদেশের পক্ষেই।
ম্যাচ শেষে ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ নির্বাচিত হয়েছেন প্রথম গোলদাতা ওবায়দুল ইসলাম জয়। এই টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত অসাধারণ খেলছেন তিনি। আগামী ২২ এপ্রিল গ্রুপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে থাইল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে এক জয় ও এক ড্র নিয়ে গ্রুপে দ্বিতীয় স্থানে আছে থাইল্যান্ড। ২৩ এপ্রিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলবে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ। দুই গ্রুপের সেরা দুই দল যাবে সেমিফাইনালে, সেই সঙ্গে নিশ্চিত হবে এশিয়া কাপ হকির টিকিট।