পাকিস্তানের ক্রীড়াবিদকে আমন্ত্রণ জানিয়ে সমালোচিত ভারতের অলিম্পিকজয়ী
ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক কোনো সময়ই ভালো ছিল না। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশের রাজনৈতিক বৈরিতা স্বাভাবিকভাবেই প্রভাবিত করে দুই দেশের ক্রীড়াঙ্গনকেও। ক্রিকেটে এই বৈরিতা অনেক আগের হলেও সম্প্রতি কাশ্মির হামলার জের ধরে তা ছড়িয়ে গেছে সর্বত্র। এবার সেই ঘটনা নিয়ে ভারতীয় জনগনের আক্রোশের মুখে পড়লেন অলিম্পিকে ভারতের হয়ে স্বর্ণজয়ী জ্যাভলিন থ্রোয়ার নীরাজ চোপড়া।
নীরাজের সঙ্গে পাকিস্তানের অলিম্পিকে স্বর্ণজয়ী জ্যাভলিন থ্রোয়ার আরশাদ নাদিমের সখ্যতার কথা সবার জানা। এই সখ্যতাই সমালোচনার জন্ম দিলো নতুন করে। মূলত, বেঙ্গালুরুতে এনসি ক্লাসিক নামের একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন নীরাজ। সেখানে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন আরশাদকে। আর তাতেই হামলার পর ক্ষেপেছে নেটিজেনরা। তার পরিবারকেও কটু কথা শোনাতে ছাড়েনি সমালোচকরা।
অবশেষে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন নীরাজ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘আরশাদ নাদিমকে এনসি ক্লাসিকে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে প্রচুর কথা হচ্ছে। চারিদিকে শুধু ঘৃণা আর কটূক্তি। আমার পরিবারকেও ছাড়া হচ্ছে না। একজন ক্রীড়াবিদ হিসেবে আরশাদকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। তার চেয়ে বেশি কিছু নয়। আমার লক্ষ্য ছিল এনসি ক্লাসিকের মাধ্যমে বিশ্বের সেরাদের ভারতে আনা। সব ক্রীড়াবিদের কাছে আমন্ত্রণ সোমবার পাঠানো হয়েছিল। পহেলগাঁও কাণ্ডের আগেই আমন্ত্রণ চলে গিয়েছিল। পরের ৪৮ ঘণ্টায় যা ঘটেছে, তার পর আরশাদের এই প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’
তিনি আরও লেখেন, ‘আমি খুব কম কথার মানুষ। তার মানে এই নয় যে, কোনও ভুল দেখলে কথা বলব না। আর যখন আমার দেশপ্রেম এবং পরিবারের সম্মান নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়, তখন তো মুখ খুলবই। আমার কাছে দেশ সব সময় আগে। পহেলগাঁওয়ে যা ঘটেছে, তা নিয়ে গোটা দেশের মতো আমিও শোকাহত এবং ক্ষুব্ধ। আমি এই বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী যে, আমার দেশ ঠিক এর জবাব দেবে এবং দেশের শক্তি প্রদর্শন করবে।’
আরশাদকে আমন্ত্রণ জানানোর পর নীরাজের দেশপ্রেম নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এত বছর ধরে গর্বের সঙ্গে দেশকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি। সেখানে আমার দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন উঠলে খারাপ লাগে। ভেবে কষ্ট হচ্ছে যে, মানুষকে এটা বোঝাতে হচ্ছে। কোনও কারণ ছাড়া আমার পরিবারকে আক্রমণ করা হয়েছে। আমরা খুবই সাধারণ মানুষ। এই সবের মধ্যে আমাদের টানবেন না। আমি চুপ করে আছি বলে সেগুলো সত্যি হয়ে যাবে না।’
