রশিদের বোলিংয়ে ছয় ছক্কার ঝড়, ভেঙে গেল ১০ বছরের রেকর্ড
এক সময়ের টি-টোয়েন্টির অপ্রতিরোধ্য স্পিন জাদুকর রশিদ খান যেন নিজেই নিজের ছায়া হয়ে উঠেছেন। এবারের আইপিএলে গুজরাট টাইটান্সের হয়ে বল হাতে বারবার বিবর্ণ তিনি। শুক্রবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে যা ঘটল, তা তার দীর্ঘ ক্যারিয়ারের এক অপ্রত্যাশিত দিক হয়ে রইল। তিন ওভারে হজম করলেন ৫০ রান, ছয়টি ছক্কা- যা তার ৪৭২ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথমবার ঘটে।
প্রথম ওভারে দুই ছক্কায় হজম ১৫ রান। দ্বিতীয় ওভারে একটি ছক্কা ও চারে ১৪। এরপর ফের বোলিংয়ে এসে এক ওভারে তিন ছক্কা সহ ২১ রান দিয়ে বসলেন রশিদ। তিন ওভার শেষে ওভারপ্রতি রান ১৬.৬৬- টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে যা তার সর্বোচ্চ ইকোনমি। এর আগে তার সবচেয়ে খরুচে স্পেল ছিল ২০২৩ আইপিএলে, বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে ১.৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে।
রশিদের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ফিফটি রান খরচ করার ঘটনা এর আগে সাতবার ঘটলেও, প্রতিবারই তিনি চার ওভার করেছেন। এবারই প্রথম তিন ওভারে গুনতে হলো অর্ধশত রান। অন্তত তিন ওভার বল করে এর আগে সবচেয়ে বেশি রান দিয়েছিলেন ২০২৩ আইপিএলে চেন্নাইয়ের বিপক্ষে, ৪৪।
এছাড়া ছক্কার সংখ্যায়ও ঘটেছে বিরল এক রেকর্ড। হায়দরাবাদের বিপক্ষে ছয়টি ছক্কা হজম করলেন তিনি। তার ক্যারিয়ারে এর চেয়ে বেশি ছক্কা তিনি খেয়েছেন মাত্র দুটি ম্যাচে— ২০১৮ আইপিএলে (৭ ছক্কা) এবং ২০২৩ সালের এসএ টোয়েন্টিতে (৭ ছক্কা)।
পরিসংখ্যান বলছে- রশিদের আগের ধার অনেকটাই ম্লান হয়ে এসেছে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে। ক্যারিয়ারে ৮ বার এক ম্যাচে ৫০ বা তার বেশি রান দিয়েছেন তিনি, যার পাঁচটিই এসেছে গত দুই বছরে। ২০১৭ থেকে ২০২২ পর্যন্ত আইপিএলে তার ইকোনমি রেট ছিল সাতের নিচে। কিন্তু ২০২৩ ও ২০২৪ আসরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৮.২৩ ও ৮.৪০। এবারের আইপিএলে তো ১০ ম্যাচে ইকোনমি ৯.৫১!
বিশেষজ্ঞদের মতে, পিঠের অস্ত্রোপচারের পর থেকেই রশিদ খান আগের মতো ধারালো নন। মাঝেমধ্যে ঝলক দেখালেও, ধারাবাহিকতা হারিয়ে ফেলেছেন। কলকাতা ও রাজস্থানের বিপক্ষে ভালো করলেও, আহমেদাবাদের ঘরের মাঠে তিনি আবারও ব্যর্থ। এবার ১০ ম্যাচের মধ্যে পাঁচবারই তিনি ওভারপ্রতি ৯-এর বেশি রান দিয়েছেন।
তবে রশিদ খান এমন এক নাম, যাকে ছিটকে দেওয়ার সুযোগ নেই। মাত্র ২৬ বছর বয়সেই টি-টোয়েন্টির কিংবদন্তি হয়ে ওঠা এই লেগ-স্পিনার যে কোনো সময় ফিরতে পারেন নিজের ছন্দে।
