প্রথম সেশনটা বাংলাদেশের

প্রথম সেশনটা বাংলাদেশের

উইকেটটা স্পিনারদের দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবে, বিষয়টা উন্মুক্ত গোপনীয়তার চাদরে ঢাকা ছিল কাল পর্যন্ত। দুই দলের অনুশীলন, সংবাদ সম্মেলনেও তা ছিল পরিষ্কার, উইকেটটা স্পিনিং ট্র্যাকই হতে যাচ্ছে। 

ম্যাচ শুরুর আগে পিচ রিপোর্টে তা পরিষ্কার হলো। উইকেটটা খটখটে শুকনো, প্রথম দিনেই রাফ আছে একগাদা। এই উইকেটে টস জিতে ব্যাটিং নেওয়াটাই বেশি যৌক্তিক। টসভাগ্যটা সঙ্গী হওয়ার পর অযৌক্তিক কোনো কিছু করেননি অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, নিয়েছেন ব্যাট করার সিদ্ধান্তই। সে উইকেটে ব্যাট করতে নেমে প্রথম সেশনে বাংলাদেশ তুলল ১০৪ রান, দুই উইকেটের বিনিময়ে। সেশনটাকে তাই নেহায়েত মন্দ বলা চলে না। 

দুই ওপেনার জাকির হাসান আর মাহমুদুল হাসান জয় মিলে শুরুটা করেছিলেন দেখে শুনে। দুই পেসার কাইল জেমিসন আর টিম সাউদিকে কোনো সাহায্য দেয়নি সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের পিচ। দুই ব্যাটার তার ফায়দা তুললেন।

উপায়ান্তর না দেখে অধিনায়ক সাউদি সপ্তম ওভারে আক্রমণে আনেন স্পিনার এজাজ পাটেলকে। খানিকটা দেরিতে হলেও ব্রেক থ্রুটা এনে দিলেন তিনিই, তাও আবার ওই স্পিনিং উইকেটের সহায়তা নিয়েই। ১৩তম ওভারে তার বলটা জাকির হাসানের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে পড়ে শার্প টার্ন নিয়ে এসে ভেঙে দিল তার অফ স্টাম্প।

প্রথম দিনেই যদি টার্নের মাত্রাটা এমন হয়, দ্বিতীয় থেকে ‘সম্ভাব্য’ পঞ্চম দিনগুলো তো পড়েই আছে। এই উইকেট যে ক্রমেই ভাঙবে আরও, তা বুঝতে কোনো প্রকার রকেট বিজ্ঞান গোছের কিছুর প্রয়োজন পড়ে না। এমন উইকেটে টিকে থাকার চেয়ে রান তোলাটা বেশি সহজ।

নাজমুল হোসেন শান্ত এসে তাই করলেন। অধিনায়কত্বের অভিষেকে রানের খাতাটা খুললেন এজাজ পাটেলকে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে ছক্কা হাঁকিয়ে, এমন কিছু বাংলাদেশ ক্রিকেট দেখেনি কখনো। এরপর শান্ত হাঁকিয়েছেন আরও দুটো ছক্কা। চারও মেরেছেন দুটো। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে গড়লেন ৫০ রানের জুটি, তার ৩৭টিই তার। 

তার এই মারকাটারি ইনিংস অবশ্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। শান্ত থেমেছেন ওই ৩৭ এই। বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে রান তখন শ’ ছুঁইছুঁই। এরপর আর খেলা হয়েছে তিন ওভার। ওপেনার জয়ের সঙ্গে মুমিনুল হক মিলে আর কোনো ভুল হতে দেননি। আর তাতেই প্রথম সেশনটা বাংলাদেশ শেষ করে স্কোরবোর্ডে ১০৪ রান আর বেশ খানিকটা স্বস্তি নিয়ে। 

সম্পর্কিত খবর