সেই জার্মানিই কাল হলো আর্জেন্টিনার

সেই জার্মানিই কাল হলো আর্জেন্টিনার

বড়দের হারের ভুত যেন চেপে বসেছে ছোটদের ঘাড়েও। নয়তো বার বার কেন এমন তীরে এসে তরী ডুববে? তাও আবার সেই জার্মানির বিপক্ষেই। ১৯৯০, ২০০৬, ২০১০ ও ২০১৪ গল্পটা একই; হৃদয় ভাঙার। এরমধ্যে দু’বার তো আলবিসেলেস্তেদের কাঁদিয়ে বিশ্বকাপটাই ছিনিয়ে নিয়েছে জার্মানরা।

ভাবা হচ্ছিল সেই গল্পটা এবার পাল্টে দেবে ছোটরা। বড়দের মতো অন্তত তীরে এসে তরী ডুবাবে না আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব-১৭ দল। আগের সব হারের প্রতিশোধ নেবে ম্যারাডোনা-মেসির উত্তরসূরিরা। জার্মানদের হতাশ করে ফাইনালে পা রাখবে তারা। কিন্তু না এবারও গল্পটা পাল্টেনি। ভাগ্য বিধাতা এবারও মুখ ফিরে তাকাইনি। নয়তো এমন প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখেও শেষ পর্যন্ত কিনা টাইব্রেকে হারতে হলো আর্জেন্টিনাকে।

ব্রাজিলকে বিদায় করে সেমিতে পা রাখা আর্জেন্টিনা এদিন শুরুতেই গোল হজম করে। ম্যাচের ৯ মিনিটে প্যারিস ব্রুনারের গোলে লিড নেয় জার্মানরা। তাতে অবশ্য একটুও ধমে যায়নি আর্জেন্টিনা। প্রতিশোধের নেশায় মরিয়া হয়ে প্রথমার্ধের আগেই গোল শোধ দেয়। এরপর লিড নিয়ে স্বস্তিতে থেকে বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা। দুটি গোলই আসে আর্জেন্টাইন তরুণ অগাস্টিন রুবার্তোর পা থেকে।

দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা চালায় জার্মানরা। কাজও হয় তাতে। ৫৮ মিনিটে সেই ব্রুনার সমতায় ফেরান জার্মানদের। পূরণ করেন জোড়া গোল। এরপর ৬৯ মিনিটে ম্যাক্স মোরস্টেডের গোলে এগিয়ে যায় জার্মানরা। এরপর যতই সময় গড়াচ্ছিল আর্জেন্টিনার বিদায় শঙ্কা ততই ঘনীভূত হচ্ছিল।

তবে ম্যাচে ফিরতে চেষ্টায় কোনো ত্রুটি রাখছিল না আর্জেন্টাইনরা। একের পর এক আক্রমণে গিয়ে বারবার হতাশ হয়ে ফিরছিল দলটি। জার্মানরা তখন অপেক্ষায় রেফারির শেষ বাঁশি শোনার। তখনই ত্রাতা হয়ে এলেন আগের ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা এচেভেরি ও রুবার্তো। দু’জনের যুগলবন্দিতে ম্যাচ বাঁচায় আর্জেন্টিনা। রুবার্তোর হ্যাটট্রিক গোলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। খানিকটা হাফ ছেড়ে বসে আর্জেন্টাইন সমর্থকরা।

বারবার পিছিয়ে পড়েও এমন প্রত্যাবর্তন। স্বাভাবিকভাবেই আর্জেন্টাইন সমর্থকরা বিশ্বাস রেখেছিল এবার অন্তত ভাগ্য ফিরবে তাদের। না এবারও গল্পটা পাল্টেনি। টাইব্রেকে আর্জেন্টিনার প্রথম দুটি শটের দুটিই রুখে দেন জার্মান গোলরক্ষক। অন্যদিকে টানা দুই গোল করার পর জার্মানদের তৃতীয় শট রুখে দিয়ে লড়াইয়ের আভাস দেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক। তবে সেই আভাস শেষ পর্যন্ত ফলেনি। পরের দুটি বল জালে জড়িয়ে ৪-২ গোলের জয় নিশ্চিত করে জার্মানি। পা রাখে শিরোপা নির্ধারর্ণী মঞ্চে। আর তাতে জার্মানির বিপক্ষে আরও একবার হৃদয় ভাঙে আর্জেন্টিনার।

সম্পর্কিত খবর