দিনশেষে সঙ্গী উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসার আক্ষেপ
কথায় আছে, মর্নিং শোজ দ্য ডে। বাংলাদেশের দিনটা শুধু সকাল নয়, অনেকক্ষণ ধরেই তো ভালো ছিল। দিনের প্রায় ৬০ ওভার পর্যন্ত ম্যাচে শ্রেয়তর দল ছিল স্বাগতিকরাই। কিন্তু শেষে এসে ভজকট পাকিয়ে গেল রীতিমতো। দিনটা তাই বাংলাদেশ শেষ করেছে একগাদা আক্ষেপ নিয়ে।
দিনে যদি আনপ্লেয়েবল বলে কেউ উইকেট হারিয়ে থাকেন, তাহলে সেটা জাকির হাসানের। এজাজ পাটেলের বল অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে শার্প টার্ন নিয়ে ঢুকল ভেতরে, ভাঙল স্টাম্প। এরপর থেকে যারাই উইকেট খুইয়েছেন, সবই খেয়ালের বশে।
নাজমুল হোসেন শান্ত থেকে শুরু করে মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম… সর্বোচ্চ স্কোর করা মাহমুদুল হাসান জয়ও তো উইকেটটা ছুঁড়েই দিয়েছেন রীতিমতো। আক্ষেপ তো হওয়ারই কথা!
সে বিষয়ে জয়ও একমত। দিনের সেরা পারফর্মার তিনি। কিন্তু নিজেকে নিয়েই আক্ষেপে পুড়ছেন তিনি। বলছেন, ‘দেখেন আমারও কিন্তু বড় ইনিংস করার সুযোগ ছিল দূর্ভাগ্যবশত মিস করে ফেলছি। কিন্তু অ্যাজ এ ওপেনার প্রতিদিন আমার যে সুযোগ আসে না সেট হওয়ার বড় স্কোর করার। আজকে সুযোগ আসছিল মিস হয়ে গেছে। সবাই মোটামুটি ভালো স্টার্ট করছিল বাট ইনিংসটা বিল্ড আপ করতে পারে নাই। আক্ষেপের ব্যাপার।’
সে আক্ষেপের আগুনে ঘি ঢেলেছেন গ্লেন ফিলিপস। পঞ্চম বোলার হিসেবে আক্রমণে এসে তিনি তুলে নিয়েছেন একে একে ৪ উইকেট। তাও কার? শান্ত, মুমিনুল, শাহাদাত হোসেন দিপু আর নুরুল হাসান সোহানের।
ক্যারিয়ারে এর আগে একটিই টেস্ট খেলেছেন ফিলিপস। সে ম্যাচে বোলিং করেননি। আজ স্পিন সহায়ক উইকেট বলেই কি না, অধিনায়ক টিম সাউদি বল তুলে দিয়েছিলেন তার হাতে। পরিচয়টা তাই তার স্রেফ ‘খণ্ডকালীন’ স্পিনারের।
সে কারণেই কি না, বাংলাদেশ তাকেই লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছিল। তবে চার উইকেট শিকার করে ফিলিপস জানান দিয়েছেন, বাংলাদেশি ব্যাটারদের সিদ্ধান্তটা কাজে দেয়নি মোটেও। ফিলিপসের বিপক্ষে পরীকল্পনাটা আসলে কেমন ছিল?
জয় জানান, ‘ও ওকেশনাল বোলার। আমরা যদি ওকে চার্জ না করি তাহলে হয়তো দেখা গেল ও যদি ভালো বোলিং করে মেইন বোলাররা আমাদের আরও বেশি চেপে ধরবে। আমাদের প্ল্যানে ছিল যে অকেশনাল বোলারকে আক্রমণ করা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা বাজে শট খেলে আউট হয়ে গেছি।’
তবে ফিলিপস পরে নিজেও জানালেন, এমন কিছু মোটেও দোষের কিছু নয়। তার কথা, ‘পঞ্চম বোলারকে তো সবাই টার্গেট করেই, এটা তো স্বাভাবিক বিষয়। আমি নিজে হলেও আমার মতো পঞ্চম বোলারকে মেরে খেলতে চাইতাম।’
৪ পাওয়া ফিলিপস যে কিছুটা ভাগ্যবান, তা মানলেন দুজনেই। জয় বললেন, ‘ও লাকি যে খারাপ বলে উইকেট পেয়ে গেছে।’ আর ফিলিপস বললেন, ‘শান্ত যে বলে আউট হলো, তেমন ফুলটস বলে আমিও আউট হয়েছি। আমি স্রেফ ভাগ্যবান ছিলাম, এই যা!’
দিনের শেষে এমন ব্যাটিংয়ের পর বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে জমা পড়েছে ৩১০ রান। উইকেট যদিও একটা বাকি। কিন্তু জয়ের অভিমত, এবার কাজটা বর্তাবে বোলারদের ওপর। বাংলাদেশের প্রত্যাশা ছিল ৩৫০-৩৮০র মতো রান। সেটা না হলে কিছু রানের ঘাটতি থেকে যাবে। সেটা পুষিয়ে নিতে হবে বোলিং দিয়ে।
তার কথা, ‘আমরা এখন চেষ্টা করব যে, ওই রানের মধ্যে যে আমাদের কোয়ালিটি স্পিনার আছে ভালো জায়গায় যদি বোলিং করতে পারে ইনশাল্লাহ ওদের কম রানে অলআউট করা পসিবল।’
প্রথম ইনিংসে এভাবে উইকেট হারানোর পর কিছু রান কম হওয়ার আক্ষেপটা বোলাররা কাল ঘুচিয়ে দিতে পারলেই হয়।