চব্বিশে চলে গেলেন ক্রিকেটার হৃদয়

চব্বিশে চলে গেলেন ক্রিকেটার হৃদয়

ভালোবাসাটা বোধয় এমনই। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত যা পরম মমতায় আগলে রাখতে চাই মানুষ। জীবন প্রদীপ নিভে যাওয়ার ঠিক আগেও আরও কিছুটা সময় কাটাতে ইচ্ছে হয় প্রিয়দের সঙ্গে। কিছুতেই ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করে না মোহাবিষ্ট এই পৃথিবী। জড়িয়ে থাকতে ইচ্ছে করে, ভীষণ রকম জড়িয়ে থাকতে ইচ্ছে করে প্রিয় সবকিছু। সেই ইচ্ছেটা বোধয় হয়েছিল ঢাকা দ্বিতীয় বিভাগ ক্রিকেট লিগের ক্রিকেটার আবদুল আলীম হৃদয়েরও।

ব্লাড ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করেছেন। একটু একটু করে এগিয়ে গিয়েছেন মৃত্যুর পথে। অথচ জীবনের শেষ দিন অব্ধি চালিয়ে গিয়েছেন ভালোবাসার ক্রিকেটটাকে। ঢাকা ২য় বিভাগ ক্রিকেট লিগের চলতি মৌসুমেও গোপীবাগ ফ্রেন্ডস অ্যাসোসিয়েশন ক্লাবের হয়ে খেলেছেন সাতটি ম্যাচ। সতীর্থদের কাউকে বুঝতে দেননি ভেতরে কি কঠিন রোগ বয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।

বেঁচে থাকার লড়াইটা চালিয়ে যাচ্ছিলেন ২৪ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার। হয়তো স্বপ্ন বুনছিলেন; একদিন সব ঠিক হলে জাতীয় দলের জার্সিতেও মাঠে নামবেন তিনি। দেশের হয়ে লড়বেন বিশ্বমঞ্চে। যেই স্বপ্ন দেখে একদিন পা রেখেছিলেন ২২ গজে। সেই স্বপ্নটা ছুঁয়ে দেখা হলো না তার। হেরে গেলেন জীবন যুদ্ধে। হার না মানার প্রতিশ্রুতি নিয়ে ক্রিকেট শুরু করা হৃদয় হার মানলেন ক্যান্সারের কাছে। বুধবার মৃত্যুবরণ করেন হৃদয়।

তার এই অকাল মৃত্যুতে তাই শোকের ছায়া নেমেছে বাংলাদেশ ক্রিকেটে। হৃদয়ের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বিসিবি। জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাইফুদ্দিন আহমেদকেও ছুঁয়ে গেছে হৃদয়ের এই অকাল মৃত্যু। ফেসবুক পোস্টে এই ক্রিকেটার লিখেছেন, ‘ছোট ভাই হৃদয় আমাদের মাঝে আর নেই। অনেক স্বপ্ন নিয়ে ঢাকা দ্বিতীয় বিভাগ ক্রিকেট লিগ খেলতে ঢাকা অবস্থান করেছিল। প্রথমে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে পরবর্তীতে ব্লাড ক্যান্সার এবং ব্রেন স্টোক করে আজকে মারা যায়।’

এরপর তিনি লিখেছেন, ‘বসবাস করার জন্য ঢাকা অযোগ্য শহর। মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা একদম নেই বললেই চলে| কিছুদিন আগে ছেলেটা বিয়ে করেছিল কত স্বপ্ন ছিল তার পরিবার নিয়ে বাঁচার। কিন্তু এই নিয়তি তাকে আর থাকতে দিল না। ক্ষণস্থায়ী জীবনের জন্য আমরা কত কিছু না করি তাও আমাদের সিস্টেম চেঞ্জ হবে না। ভালো থাকিস ওপারে।’

সম্পর্কিত খবর