দুই দলের র‍্যাঙ্কিংয়ে অবস্থান ৩ আর ৮। তার ছাপটা পারফর্ম্যান্সে আলবত পড়েছে। তিনে থাকা ভারত যতগুলো ম্যাচ জিতেছে, তার সবকটাই প্রতিপক্ষকে কোনো সুযোগ না দিয়ে, ‘ক্লিনিকাল’ জয়। আর শ্রীলঙ্কা? গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচটা বাদ দিলে প্রতিটা ম্যাচেই কম-বেশি রোমাঞ্চের পসরা সাজিয়ে বসেছিল লঙ্কানদের ম্যাচ, একটু এদি ওদিক হলেই শ্রীলঙ্কার আর আসা হতো না ফাইনালে। তবে সে শ্রীলঙ্কাই চলে এসেছে এই ফাইনালে। আজকের ফাইনালে ভারতকে মোটেও ছেড়ে কথা বলবে না দাসুন শানাকার দল।

শ্রীলঙ্কার এই টুর্নামেন্টের আগের পরিস্থিতিটা দেখুন। বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব খেলে বিশ্বকাপে জায়গা নিশ্চিত করেছে। টানা জয়ের ছন্দে ছিল, তবে এই টুর্নামেন্টে এসে ভারতের কাছে হেরে তা ভেঙেছে। তবে দলটা এবারও ফাইনাল খেলে ফেলবে, তা কে কল্পনা করেছিল? শ্রীলঙ্কা এ অভাবনীয় কাজটা করেছে দলীয় ঐক্যের বুনিয়াদে। এবার ফাইনালে ভারত আছে সামনে, তাদের হারাতে পারলেই তো কেল্লাফতে!

এবারের লঙ্কানদের এবারের এশিয়া কাপের সঙ্গে গেল আসর যেন মিলে যাচ্ছে হুবহু! হোক টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে, কিন্তু আগের এশিয়া কাপটাও শ্রীলঙ্কা জিতেছিল। পরিস্থিতিটা কিন্তু ছিল এ রকমই। টুর্নামেন্টের শুরু থেকে ‘তিন ম্যাচের ভারত-পাকিস্তান সিরিজ’ এর আলাপ হচ্ছিল সর্বত্র। কিন্তু শেষমেশ সেবার ভারতের পথ আগলে ফাইনালে যাওয়া শ্রীলঙ্কা পাকিস্তানকে হারিয়ে জেতে শিরোপা। এবার ফাইনালের প্রতিপক্ষটা বদলে গেছে ঠিক, কিন্তু পরিস্থিতি তো আছে ওই এক রকমই! সেবারের মতো এবারের ফাইনালেও শ্রীলঙ্কার জায়গাটা ওই আন্ডারডগের চেয়ারেই। দুই টুর্নামেন্টের মাঝে এত মিল, শেষটাতেও নিশ্চয়ই একই রকম দৃশ্যই দেখতে চাইবে লঙ্কানরা!

তবে কাজটা সহজ হবে না! এই ভারতে কে নেই? রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের মতো ব্যাটার, যশপ্রীত বুমরাহ, হার্দিক পান্ডিয়াদের মতো খেলোয়াড়। এই দল নিয়েও কিছু জিততে পারছে না ভারত, বিষয়টা যেন দলের জন্যও বেশ অস্বস্তির। সে অস্বস্তিটা দূর করার সুযোগ আজ পেয়ে যাচ্ছে ভারত। শ্রীলঙ্কাকে হারালেই ৫ বছর পর আবারও কোনো বহুজাতিক ‘ফ্ল্যাগশিপ’ টুর্নামেন্টের শিরোপা উঠবে তাদের হাতে।

ভারতের দলটা দেখুন একবার। রোহিত আর কোহলি তো আগে থেকেই ছিলেন, সঙ্গে এখন লোকেশ রাহুল, শুভমান গিল, ঈশান কিষাণরাও ব্যাট হাতে ভারতকে দিচ্ছেন ভরসা। হার্দিক পান্ডিয়া তো আরেক কাঠি সরেস, তিনি ব্যাট আর বলে দু’হাতে দিয়ে যাচ্ছেন দলকে। এরপর বোলিংয়ে বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ, কুলদ্বীপ যাদব, আর রবীন্দ্র জাদেজারাও আছেন বেশ ছন্দে। ‘এই দলটা না জিতে যাবে কোথায়!’ – ভাবনাটা আসতেই পারে।

র‍্যাঙ্কিং বলছে আজকের লড়াইটা ডেভিড আর গোলিয়াথের। তবে দুই দলের মাঠের পারফর্ম্যান্স জানান দিচ্ছে, পার্থক্যটা এত বড়ও নয়। তাই আজ প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামের এই ফাইনালে লড়াইটা জমজমাট হবে বলেই ঠাহর হচ্ছে।