উইলিয়ামসনের ক্যাচই মিস করতে হলো?
‘পড়বি তো পড় মালির ঘাড়েই, ব্যাটা ছিল গাছের আড়েই!’ – বাংলাদেশের পরিস্থিতিটা যেন কাজী নজরুলের এই দুই লাইনের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।
প্রতিপক্ষ দলে এত্তো এতো ব্যাটার। বাংলাদেশ কি না ক্যাচ ফেলল কেন উইলিয়ামসনেরই! বাংলাদেশের বিপক্ষে ফ্যাবিউলাস ফোরের এই জনের গড়টা রীতিমতো ব্র্যাডম্যানীয়, ১৩০ ছুঁইছুঁই। সেই তার ক্যাচ একবার ফেলাও যেখানে পাপের মতো বিষয়, সেখানে ফিল্ডাররা কি না ক্যাচ ফেললেন তার ব্যাট থেকে আসা দুটো সুযোগ!
দ্বিতীয় দিন থেকেই উইকেটে স্পিন ধরছে বেশ। প্রত্যাশিতই অবশ্য। দ্বিতীয় সেশনে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত নাঈম হাসানকে দিয়ে তাকে রীতিমতো চেপেই ধরেছিলেন। ফরোয়ার্ড শর্ট লেগ, লেগ স্লিপ দিয়ে তার স্কোরিং রেঞ্জ ছোট করে দিয়েছিলেন। সে চাপটা সরাতেই হয়তো, উইলিয়ামসন শট খেলতে চেয়েছিলেন ইনিংসের ৪৯তম ওভারে, যখন তিনি ব্যাট করছেন ৬৪ রানে। ফুলার লেন্থের বলটা তুলে মারতে চেয়েছিলেন মিড উইকেট অঞ্চল দিয়ে। শর্ট মিড উইকেটে দাঁড়ানো তাইজুল ইসলাম ক্যাচটা নিতেই পারলেন না, হাত ফসকে বেরিয়ে গেল তার।
চা বিরতির একটু আগে এসেছিল সুযোগটা। সেটা নিতে পারলে সেশনটা আরেকটু স্বস্তি নিয়ে শেষ করতে পারত দল। সেটা হলে কিউইদের লেজের নাগালটাও তো পেয়ে যাওয়া যেত দ্বিতীয় সেশনেই!
পরের সেশনে আরও একবার সুযোগ দিলেন কিউই এই ব্যাটার। এবারও দুর্ভাগা বোলারের নাম নাঈম হাসান। তার ফুলার লেন্থের বলটা স্কয়ার লেগ দিয়ে তুলে মারতে চেয়েছিলেন, বল উঠে গিয়েছিল আকাশে। শরিফুল ইসলাম সামনে এলেন বটে, কিন্তু বলের ট্র্যাজেক্টরিটা ধরতে পারলেন না ঠিকঠাক। সামনে ডাইভ দিলেন বটে, কিন্তু বলটা পড়ল তারও একটু সামনে।
প্রথমবার সুযোগটা হেলায় হারানো তাইজুলই শেষমেশ প্রায়শ্চিত্তটা করলেন। বোল্ড করে শেষমেশ তাকে দেখালেন প্যাভিলিয়নের পথ। তবে তার আগে তার নামের পাশে যোগ হয়ে গেছে ১০৪ রান। তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টা, তা হচ্ছে তিনি যেখানে বিদায় নিতে পারতেন নিউজিল্যান্ডের রান যখন ১৬৫ আর ১৮৬, সেই তার ‘ফল অফ উইকেট’ হয়েছে শেষমেশ ২৬২ রানে। তিনি নিজে যোগ করেছেন কমপক্ষে ৪০টি বেশি রান, দলের স্কোরবোর্ডে যোগ হয়েছে আরও একশো।
উইকেট যেভাবে স্পিনারদের দিকে বাড়িয়ে দিচ্ছে সাহায্যের হাত, চতুর্থ ইনিংসের কথা ভাবনায় রাখলে সে উইকেটে একটা রানও মহামূল্য। সেখানে তার যোগ করে যাওয়া এই বাড়তি কিছু রানই শেষমেশ নিয়ামক হয়ে যায় কি না, শঙ্কার বিষয় এখন তাই।