দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ঐতিহাসিক জয় বাংলাদেশের
দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ইতিহাসই গড়ে ফেলল বাংলাদেশ। নারী ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রোটিয়াদের তাদেরই মাটিতে হারাল। তাদের ১৩ রানে হারিয়ে সিরিজেও ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল নিগার সুলতানা জ্যোতির দল।
ভিতটা গড়ে দিয়েছিলেন ব্যাটাররা। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে সর্বোচ্চ, আর নিজেদের ইতিহাসের পঞ্চম সর্বোচ্চ রানের ইনিংস গড়ে। বাংলাদেশের ১৪৯ রানের জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা যখন পাওয়ারপ্লেতেই তুলে ফেলল ৫৪, তখন মনে হচ্ছিল দারুণ ব্যাটিংয়ের তৃপ্তিটা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে নিগারদের। তবে শেষমেশ তা হতে দেননি স্বর্ণা আক্তাররা। তাদের দারুণ বোলিংয়ে প্রোটিয়ারারা থামে ১৩৬ রান তুলে। বাংলাদেশের হাতে ধরা দেয় দারুণ এক জয়।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ পাওয়ারপ্লেতে দারুণ একটা শুরু পায়। দুই ওপেনার শামিমা সুলতানা আর মুরশিদা খাতুনের ব্যাটে চড়ে বাংলাদেশ পাওয়ারপ্লেতে পেয়ে যায় ৩৪ রান। দলীয় ৪৩ রানে শামিমা ফিরে যান।
ওপেনিং থেকে পাওয়া শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে সোবহানা মোস্তারিকে সঙ্গে নিয়ে আরেক ওপেনার শামিমা সুলতানা দ্বিতীয় উইকেটেও গড়েন দারুণ এক জুটি, ৩৭ বলে এল ৩৯ রান। ১৩তম ওভার শেষে সোবহানা যখন ফিরছেন, তখন দলের স্কোরবোর্ডে রান যোগ হয়ে গেছে ৮২।
বাকি কাজটা অধিনায়ক নিগারকে সঙ্গে নিয়ে সেরেছেন মুরশিদা। নিজে তুলে নিয়েছেন দারুণ এক ফিফটি। সঙ্গে নিগারের ২১ বলে ৩৪ রানের ঝোড়ো ইনিংসে ভর করে ১৪৯ রান তুলে ফেলে বাংলাদেশ।
লক্ষ্যটা খুব বেশি বড় ছিল না, আবার ছোটও নয়। ১৫০ রানের লক্ষ্য সামনে রেখে দক্ষিণ আফ্রিকা শুরুটা করেছিল দুর্দান্ত। দুই ওপেনার আনেক বশ ও তাজমিন ব্রিটজ পাওয়ারপ্লেতে তুলে ফেলেছিলেন ৫৪ রান, ওভারপ্রতি ৯ রান করে। শুরুতে উইকেট তুলে নিতে না পারায় জয়ের সম্ভাবনাটা ক্ষীণই হয়ে আসছিল নিগার সুলতানা জ্যোতির দলের।
তবে পাওয়ারপ্লে শেষেই স্বাগতিকদের চেপে ধরে বাংলাদেশ। রানের গতি কমে আসে, সঙ্গে ফলটাও পেতে থাকে দল। ঝোড়ো শুরু করা তাজমিন ফেরেন ১০ম ওভারে, পরের ওভারে ফাহিমা খাতুন ফেরান অ্যানেরি ডার্কসেনকে। এরপরও অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকাকে পথহারা মনে হচ্ছিল না। ওপাশে যে ছিলেন বশ। প্রোটিয়ারা পথ হারাল তার বিদায়ের পরই। মাঝে তৃতীয় উইকেট খুইয়ে বসা দক্ষিণ আফ্রিকা যখন চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে হারাল বশকে, এরপরই কার্যত ম্যাচটা থেকে ছিটকে যায় দলটা। স্বর্ণা প্রথমে ফেরান বশ, এরপর শানগেসেকে। সেই ওভারই খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিল।
পরের ওভারে নাহিদার শিকার বনে গেলেন মার্ক্স। শেষ ওভারে ২৪ রান প্রয়োজন ছিল তাদের। তবে শেষ ওভার করতে আসা স্বর্ণা রান হতে দিলেন না ১০টির বেশি। তুলে নিলেন দুই উইকেট, তাতেই বাংলাদেশ পেয়ে যায় তাদের কাঙ্ক্ষিত জয়, আর ১৬ বছর বয়সী স্বর্ণা বনে যান ম্যাচ সেরা।