স্পিনের স্বর্গরাজ্যে ইতিহাসের হাতছানি বাংলাদেশের

স্পিনের স্বর্গরাজ্যে ইতিহাসের হাতছানি বাংলাদেশের

ইতিহাস? ইতিহাসই তো বটে! যদিও ব্যাপ্তিটা মোটে ২৩ বছরের, তাও ইতিহাস তো!

তা কী সেটা? নিজেদের দুই যুগ ছুঁইছুঁই টেস্ট ইতিহাসের কখনোই একটা বছর টেস্ট হার ছাড়া কাটায়নি বাংলাদেশ। এবার সে ইতিহাসের সামনে দাঁড়িয়ে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

ইতিহাস অবশ্য আরও কয়েকটা হয়ে যেতে পারে। সেটা হবে, নিউজিল্যান্ডকে যদি হোয়াইট ওয়াশই করে ফেলা যায় তবে। টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ পাঁচে থাকা কোনো দলকে হোয়াইটওয়াশের ইতিহাস তো আছেই, সঙ্গে গড়া হয়ে যাবে আরও এক কীর্তি। এক বছর সবকটা টেস্ট জয়ের কীর্তি, নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো।

ওয়ানডে বিশ্বকাপের বছরে অবশ্য বাংলাদেশ খেলেছেই মোটে তিনটা টেস্ট। তার দুটো আবার আয়ারল্যান্ড আর আফগানিস্তানের বিপক্ষে। এরপর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমটা জিতে এই ইতিহাসের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।

তবে বাংলাদেশ দলের কাছে অবশ্য এসব ইতিহাস নয়, ম্যাচটাই মুখ্য। সিলেট টেস্টে জয়ের পর সিরিজ জয়ের দুয়ারে দাঁড়িয়ে দল। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে জানালেন, শূন্য থেকে শুরু করতে চান আবার। দলের কাছে তার চাওয়া আগের ম্যাচের পুনরাবৃত্তি।

না, ঠিক জয়টা তার চাওয়া নয়। তাহলে কী? প্রক্রিয়াটার পুনরাবৃত্তি। আগের ম্যাচে কাজগুলো যেভাবে করেছে দল, ঠিক তার পুনরাবৃত্তি। বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর তিনি জানিয়েছিলেন, দলের উন্নতির পথে হাঁটার কথা। সিলেট টেস্টে তার কিছুটা হলেও করেছে দল। হাথুরুর ভাষায়, সে প্রক্রিয়া মেনে চললে হয়তো বাংলাদেশ প্রতিটা ম্যাচ জিতবে না, কিন্তু দল হিসেবে আরও ভালো হয়ে উঠবে। প্রথম ম্যাচে সে পথে হেঁটেছে বাংলাদেশ। হাথুরুর চাওয়া, সে কাজটাই আবার হোক।

উইকেট স্পিন নির্ভরই হচ্ছে, তাতে আর কোনো প্রকারের সন্দেহ নেই। একাদশেও আসছে না বড় পরিবর্তন। তবে শেষ মুহূর্তে চোট পেয়ে নাঈম হাসান পড়ে গেছেন শঙ্কায়। অনুশীলনে বল হাতে পড়ে আঙুল কেটে গেছে, ঝরেছে রক্তও। আগামীকাল দ্বিতীয় টেস্টে তাকে দেখার সম্ভাবনা ক্ষীণই। সেটা হলে কাল হাসান মুরাদের অভিষেক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশ।

পরিবর্তনের আভাস নিউজিল্যান্ড দলেও আছে। অনুশীলনে মিচেল স্যান্টনার আর রাচিন রবীন্দ্রকে বাড়তি মনোযোগ দিতে দেখা গেছে তাদের স্পিন আক্রমণে। যদিও অধিনায়ক টিম সাউদি যদিও দুয়ার খোলা রেখেছেন সবার জন্যেই, তবে নিউজিল্যান্ড দলের পরিস্থিতি আর মিরপুরের উইকেট বলছে, তাদের একজন কাল ঢুকবেন নিউজিল্যান্ড একাদশে।

তবে সবকিছু ছাপিয়ে কিউইদের চাওয়া জয়, তা আর না বললেও চলে। কেন? বিষয়টা শুধু টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্ট নয়, তাদের অহমেরও প্রশ্ন! বাংলাদেশের বিপক্ষে কখনোই টেস্ট সিরিজ হারেনি নিউজিল্যান্ড। নিজেদের মাটিতে যে একটা টেস্টে হেরেছিল, পরের টেস্টটা ইনিংস ও ১১৭ রানের ব্যবধানে তিন দিনে জিতে সিরিজ হার ঠেকিয়েছিল। এবারও নিশ্চয়ই সেটাই চাইবেন টিম সাউদিরা। আর বাংলাদেশের লক্ষ্য নিশ্চিতভাবেই তার উল্টোটা। তাহলেই যে গড়া হয়ে যাবে ইতিহাস! নাজমুল হোসেন শান্তর দল সে সুযোগ হেলায় হারাতে দেবে না, তা বলাই বাহুল্য।

সম্পর্কিত খবর