সকাল আমার গেল মিছে, বিকেল যে যায় তারই পিছে

সকাল আমার গেল মিছে, বিকেল যে যায় তারই পিছে

৯:০২। গেট থেকে মিডিয়া সেন্টারের দূরত্বটা দৌড়ে পেরোচ্ছি, তখন এক সহকর্মী বলে উঠলেন, ‘আরে এত তাড়া কীসের! ম্যাচ তো এখনই শুরু হচ্ছে না!’ হোম অফ ক্রিকেট তখন ভিজছে ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টিতে। তিনি প্রমাদ গুণলেন, ‘যা অবস্থা, দিনটাই ভেসে যায় কি না, কে জানে!’ দিনশেষে তার শঙ্কাটাই সত্যি হলো, গোটা দিনে মাঠে গড়াল না একটা বলও। সকালের পর বিকেলটাও ‘মিছে’ই গেল বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনের।

যখন মাঠে ঢুকছি, দলও তখন মাঠে ঢুকছে। টেস্টের সাধারণ সব দিনে দল মাঠে এসে যায় ম্যাচ শুরুর প্রায় এক ঘণ্টা আগে। আজ এল নির্ধারিত সময়ের মাত্র ১৫ মিনিট আগে। তার মানে বৃষ্টি দেখে দলেরও ধারণা ছিল ম্যাচটা সহসাই শুরু হচ্ছে না। শেষমেশ তা সত্যিই হলো। 

সকাল গড়িয়ে গেল, মধ্যাহ্ন বিরতির সময়ও কাছে চলে এল। মাঠে না খেলোয়াড়, না আম্পায়ার, না মাঠকর্মী, দেখা মেলেনি কারোই। মাঠে একমাত্র উপস্থিতি ছিল বৃষ্টি আর তা থেকে পিচ বাচাতে তার ওপরে থাকা কভারের। সে কভার সরল না, সরানোর চেষ্টাটাও করা হলো না। হবে কী করে? দিনে এক মুহূর্তের জন্য বৃষ্টি থামলে তবে তো! 

এরই মধ্যে ঘোষণা এল মধ্যাহ্ন বিরতির। সে বিরতি শেষ হবার কথা ১২:১০ নাগাদ। সেটা আর হয়নি। তবে এই সময় দেখা গেল মুশফিকুর রহিমকে প্যাড আপ করে ইনডোরের দিকে চলে যেতে। কিছুক্ষণ পর আরও একজন পথ ধরলেন দলের সবচেয়ে প্রবীণ এই ক্রিকেটারের, চললেন ইনডোর অনুশীলনে। 

দুপুর একটা নাগাদ মাঠে আসেন টিভি আম্পায়ার আহসান রাজা, ম্যাচ রেফারি ডেভিড বুনরা। মিনিট পাঁচেক কভারের পাশে পায়চারির পর আবারও হাঁটলেন ড্রেসিং রুমের দিকে। কভার তখনো সরেনি। তাতে দিনের নিয়তিটা আঁচ করা যাচ্ছিল বেশ করে। 

খেলা যে হচ্ছে না, তা একরকম নিশ্চিতই ছিল। তবে এরপরও শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের গ্যালারি কিছু দর্শকের উপস্থিতি দেখেছে। তবে একটু পর যখন বৃষ্টি বাড়ল, বাধ্য হয়ে মাঠ ছাড়তে হলো তাদের। মুষলধারে বৃষ্টি দিনটাও শেষ করে দিল দুপুর দুটো না পেরোতেই। দুপুর ১টা ৫৪মিনিট নাগাদ ঘোষণা এল, আজ আর খেলা হচ্ছে না।

প্রথম দিন শেষে মেহেদি হাসান মিরাজকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, দ্বিতীয় দিনেই জয়টা তুলে নেওয়ার ভাবনা আছে নাকি। মুখে না বললেও তেমন একটা বাসনা মনের কোণে থাকাটা অস্বাভাবিক ছিল না আদৌ। তবে তেমন কিছুর সম্ভাবনায় আক্ষরিক অর্থেই পানি ঢেলে দিয়েছে অঘ্রাণের বৃষ্টি। দ্বিতীয় দিনে খেলাই মাঠে গড়াল না আর। ঢাকা টেস্টের দৈর্ঘ্যটাও বাড়ল আরও একদিন।

সম্পর্কিত খবর