রকির সামনে কঠিন পথ
‘আমরা তাকে যা-ই বলি, সে সেটাই করতে পারে। তবে তার সেরা জায়গা হলো ৯ নম্বর। সেখানে কীভাবে খেলতে হবে, সে জানে। জায়গা বের করতে পারে। আমি অন্তত খেলোয়াড়ি জীবনে এমন ৯ নম্বরের মুখোমুখি হতে চাইতাম না।’ – কথাগুলো লুই ফেলিপ স্কলারির। শেষ ২২ বছরে বিশ্বকাপে ব্রাজিলের সেরা দুই সাফল্য এসেছে যার অধীনে। কথাগুলো ব্রাজিলিয়ান গুরু বলেছিলেন ভিতর রকিকে নিয়ে, যিনি সদ্য বার্সায় যোগ দিয়েছেন, খেলে ফেলেছেন এক ম্যাচ।
এমন একজনকে নিয়ে প্রত্যাশার পারদ চড়ারই কথা। ব্রাজিলে সেটা চড়েও গেছে ইতোমধ্যে। কিংবদন্তি রোনালদো নাজারিওর ক্লাব ক্রুজেইরো থেকে বেড়ে ওঠা। এরপর ক্লাব রেকর্ড ৪৪ লাখ ইউরো খরচ করে অ্যাথলেটিকো পারানায়েন্সের তাকে দলে ভেড়ানো তারই সাক্ষ্য দেয়। তিনি মাঠেও প্রত্যাশা মিটিয়েছেন কিছুটা। ব্রাজিল সবশেষ অ-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার প্রধান কুশীলব তিনি, করেছিলেন ৬ গোল।
সব মিলিয়ে ব্রাজিল জাতীয় দলে আসতে যা করা প্রয়োজন ছিল, রকি করেছেন তার সবটুকুই। গেল মার্চে মরক্কোর বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে অভিষেকও হয়ে গেছে তার।
তবে তার সবচেয়ে বড় পরীক্ষাটা যে অপেক্ষা করছে ইউরোপে, সেটা বলাই বাহুল্য ছিল। গত রাতে সে অধ্যায়ের প্রথম পাঠটা পেলেন রকি। কেমন করেছেন তিনি?
কাল রাতে লাস পালমাসের বিপক্ষে তিনি যখন নামছেন, তখন বার্সেলোনার একটা গোল প্রয়োজন ছিল। সেটা যে কোনো মূল্যেই হোক। রকির সামনে বেশ কিছু সুযোগও এসেছিল। ইলকায় গুন্দোয়ানের জয়সূচক পেনাল্টিটার আগে পরে বেশ কিছু বার প্রতিপক্ষ বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে যেতে পারতেন তিনি, তবে তা শেষমেশ গোল তো দূরে থাক, আয়ত্বেই নিতে পারেননি রকি, গতি অনেক কম ছিল তার। একবার যাও পেলেন, গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল জড়াতে পারলেন না জালে।
রবার্ট লেভান্ডভস্কি অনেক দিন ধরে গোল পাচ্ছেন না। বার্সেলোনা তাই গোলমুখে খরায় ভুগছে বেশ। রকিকে দিয়ে সে শূন্যতাটাই পূরণের আশা ক্লাবটির। একই চাওয়া কি ব্রাজিলেরও নয়? রোনালদো নাজারিওর পর ভরসা করা যায় এমন একজন স্ট্রাইকার ঠিক কবে পেয়েছে সেলেসাওরা?
ইউরোপ থেকে ক্লাব আর জাতীয় দলের সে ভরসার জায়গাটাই হয়ে উঠতে হবে রকিকে। তবে সেজন্যে যে কঠিন পথই পাড়ি দিতে হবে তাকে, সেটা কালকের ম্যাচই বলে দিয়েছে অনুচ্চারে।