এমবাপের ইতিহাসের রাতে বিবর্ণ বায়ার্ন
লিওনেল মেসি-ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো যুগের পরের সময়টা কিলিয়ান এমবাপেই আপন করে নেবেন, এমনটা শোনা গিয়েছিল বহু আগেই। এমবাপে তা নিচ্ছেনও। তবে এবার এমন এক রেকর্ড গড়লেন যা মেসি-রোনালদো তো বটেই, তার আগেও কেউ করে দেখাননি। তার রেকর্ডের রাতে তার দল পিএসজিও স্প্যানিশ দল রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে জিতে গেছে ২-০ গোলে।
ওদিকে বায়ার্ন মিউনিখ অবশ্য কাটিয়েছে বিবর্ণ এক রাত। ফলাফলটা খুব বেশি তার ছাপ দেখাতে পারছে না, ল্যাজিওর কাছে ১-০ গোলের ব্যবধানেই হেরেছে বায়ার্ন। তবে ম্যাচে যেমন খেলেছে দলটা, তাতে ব্যবধান আরও বাড়লেও অবাক হওয়ার কিছু ছিল না!
বায়ার্ন যেমন বিবর্ণ ছিল পুরো রাত জুড়ে, পিএসজির শুরুটাও ছিল ঠিক তেমন। দুটো ম্যাচ যদি দুটো স্ক্রিনে ছেড়ে দিয়ে দেখতে বসে থাকেন আপনি, আধঘণ্টা না পেরোতে ঘুম ধরে গেলে স্বাভাবিক বিষয়ই হতো। পিএসজি প্রথমার্ধে রিয়াল সোসিয়েদাদের জমাট রক্ষণের সামনে কোনো উপায়ই খুঁজে পাচ্ছিল না। কিলিয়ান এমবাপে বল ছুঁয়েছেন মোটে ১৫ বার, প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক বাদে আউটফিল্ডের খেলোয়াড়দের মধ্যে যা ছিল সর্বনিম্ন। ম্যাচের একেবারে শুরুর দিকে একটা সুযোগ অবশ্য পেয়েছিলেন তিনি, তবে তার দুর্বল শটে সে সুযোগটা পায়নি কাঙ্ক্ষিত পরিণতি।
দ্বিতীয়ার্ধে রূপটা বদলাল। কর্নার থেকে মারকিনিয়োসের মাথা ছুঁয়ে যায় প্রথমার্ধে নিজের ছায়া হয়ে থাকা এমবাপের কাছে, সে বলটা দারুণভাবে ভলি করে সোসিয়েদাদের জালে জড়িয়ে পিএসজিকে এগিয়ে দেন তিনি।
তাতেই গড়া হয়ে যায় রেকর্ডটা। ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টানা দশটি হোম ম্যাচে গোল করার ইতিহাস গড়ে ফেলেন তিনি।
এরপর দ্বিতীয় গোলটাও পিএসজি পেয়ে গেছে একটু পরেই। ম্যাচের ৭০ মিনিটে ফ্যাবিয়ান রুইজের পাস থেকে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন ব্র্যাডলি বারকোলা। এক ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে আগুনে এক শটে বল জড়ান সফরকারীদের জালে। তাতেই স্বস্তির এক স্কোরলাইন নিয়ে মাঠ ছাড়া নিশ্চিত হয়ে যায় লুইস এনরিকের শিষ্যদের।
পিএসজি প্রথমার্ধের বিবর্ণ সময়টা কাটিয়েছিল দ্বিতীয়ার্ধে এসে। তবে বায়ার্নের তা আর কাটানোই হয়নি। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তারা ছিল নিজেদের ছায়া হয়ে।
পুরো ম্যাচে ল্যাজিওর গোলমুখে একটা শটও নিতে পারেনি। উল্টো ম্যাচের ৬৭ মিনিটে ডায়ট উপামেকানো নিজেদের বিপদসীমায় ফাউল করে দেখেন লাল কার্ড। পেনাল্টি থেকে সিরো ইমোবিলের গোলে এগিয়ে যায় ল্যাজিও। বায়ার্ন সে গোলটা শেষমেশ শোধ করতে পারেনি। ম্যাচটা হেরেছে ১-০ গোলে।
এখন ইতিহাস চোখ রাঙাচ্ছে বায়ার্নকে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ নক আউটে প্রথম লেগে হেরেছে, এরপরও পরের রাউন্ডে চলে গেছে, এমন ঘটনা তারা ঘটিয়েছে সবশেষ ২০১৫-১৬ মৌসুমে। এরপর থেকে সবশেষ সাত বার প্রথম লেগে হারের পর বিদায়ই নিতে হয়েছে ব্যাভারিয়ানদের। আগামী মার্চের দ্বিতীয় লেগে ল্যাজিওর সঙ্গে সঙ্গে ইতিহাসকেও প্রতিপক্ষ হিসেবে মেনেই নামতে হবে তাদের।