‘দক্ষিণবঙ্গের জন্য ট্রফিটা অনেক বড় পাওয়া’
(মিজানুর রহমান। ফরচুন বরিশালের মালিক। বারকয়েক চেষ্টা শেষে এবার তার দল বিপিএলের ট্রফি জিতেছে। যদিও প্লে-অফ পর্বে তারা হট ফেভারিট দল ছিল না। কিন্তু শেষের দিকে অর্থাৎ টুর্নামেন্টের বিজনেজ এন্ড পয়েন্টে এসে অধিনায়ক তামিম ইকবালের দল দুর্দান্ত পারফরমেন্স দেখায়। উড়িয়ে দেয় সামনে থাকা সব প্রতিপক্ষকে। এই সাফল্যেও নিয়ামক কি সেই প্রসঙ্গে খোলামেলা ভাবে নিজের কথা জানিয়েছেন মিজানুর রহমান।)
একটা বড় লক্ষ্য নিয়েই আমি এই ফ্র্যাঞ্চাইজিটা কিনেছিলাম। এই ট্রফিতে হাত রেখে এখন আমি বলতেই পারি সেই লক্ষ্যেও বড় একটা ধাপ পুরো হয়েছে। এই চ্যাম্পিয়নশিপ কৃতিত্বের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। ধন্যবাদ আমাদের ফ্যানবেজকে। এখন বাংলাদেশের সবাই আমাদের ফ্যান। যখন আমরা স্টেডিয়ামে যাই তখন শতকরা ৯০ ভাগই আমাদের ক্রাউড থাকে। আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি আমাদের ফ্যানবেজ যে কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজির চেয়েও বেশি। আমাদের স্বপ্ন পূর্ণ হয়েছে। তবে এই সাফল্য একবারে আসেনি। পেছনে অনেক চেষ্টা ছিল আমাদের। চার বছর ধরে ট্রাই করছিলাম। একবার পেয়েও পেলাম না। ফাইনালে সেদফায় আমরা মাত্র ১ রানে হেরেছিলাম। কিন্তু আমরা হাল ছাড়িনি। ফাইনালি উই গট ইট। দক্ষিণ বঙ্গের জন্য এই ট্রফিটা অনেক বড় এক পাওয়া বলে আমি মনে করি।
এই দলের মালিক হয়তো আমি। কিন্তু এবারের দল গঠন থেকে মাঠে এবং মাঠের বাইরের সব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। কখন কোন বিদেশিকে আনতে হবে। কাকে ছাড়তে হবে। সব সিদ্ধান্ত নিয়েছে তিনি। আমি আমার আম্মার অসুস্থতার জন্য দলকে একেবারেই সময় দিতে পারিনি। তামিমকে বলে রেখেছিলাম তুমি দলটা সামলাও আমি আমার আম্মাকে সামলাচ্ছি। সো হি ডিড ইট। একদম সুন্দরভাবেই সে কাজটা করেছে। আর ইলেভেন নিয়ে আমি কখনোই কথা বলি না। আমি বলেছি যাকে খেলাতে চাও যাকে দরকার, জেতার জন্য যাকে দরকার তাকেই আপনি খেলাবেন। ফরেনাররা তো আসা যাওয়ার মধ্যেই ছিল। আমরা এটা দেখতাম যে কাকে দলে নেওয়া যায়। আমরা অনেককেই সাইন করিয়েছি কিন্তু অনেকেই এনওসি পায়নি। তখন আমাদের অল্টারনেট সিলেকশনে যেতে হয়েছে।
জেমস ফুলারকে আমরা শেষের দিকে এনেছিলাম। ওর অর্ন্তভুক্তি নিশ্চয়ই অনেককে অবাক করেছিল। আমরা তাকে এনেছিলাম কারণ সে টি-টোয়েন্টিতে বোলিং ব্যাটিং ভালো করেছে। বড় কথা হলো তাকে এনেও কিন্তু আমরা খেলাতে পারিনি, ফার্স্ট ম্যাচে বসায় রেখেছি। পরের ম্যাচে এসে কিন্তু সে দুর্দান্ত খেলছে। ৩ উইকেট নিয়েছে। ফাইনালেও তাই। আমাদের ডিসিশন গুলো ক্লিক করেছিল।
দলের ক্রিকেটীয় সিদ্ধান্তগুলো থেকে আমি দূরে থাকলেও মাহমুদউল্লাহ মুশফিক সবাই মিলে একসাথে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সবাই যেখানে তারা একসঙ্গে সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করেছে সেখানে ভুল হওয়ার সম্ভাবনাই নেই। সবসময় তারা রাতে আড্ডা দিতো তামিমের রুমে। আড্ডাটা ছিল খেলার আড্ডা। কি করবে আগামী ম্যাচে কালকে কি করবে এগুলো নিয়ে সবাই বসে খোলামেলা আলোচনা করতো।
মাঠের পারফরম্যান্স করার তাগিদ ছিল সবার মধ্যে। টুর্নামেন্টের মোড় আমাদের দিকে ঘুরেছে মুলত তামিম ইকবালের পারফরমেন্সে। কাইল মায়ার্স এবং সাইফউদ্দিন এর নামও কিন্তু বলতে হবে। কাইল মায়ার্স বড় ধরণের ইম্প্যাক্ট ফেলছে। সে চার ওভার বল করেছে এবং প্রতিপক্ষ কেউই কিন্তু তাকে খুব হালকাভাবে ফেস করতে পারেনি। আর ব্যাটিংয়ে ২০০ এর মতো স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেছে। সাইফউদ্দিন পুরো টুর্নামেন্ট ব্রিলিয়ান্ট ছিল। তার শক্তিমত্তা অনেক বেড়ে গিয়েছে। ৬ বলে সেদিন ২১ রান করেছে। আমাদের দলগত পারফরম্যান্স ভালো ছিল। একদিন মাহমুদউল্লাহ, একদিন মুশফিক খেলে দিয়েছে। ম্যাচ জেতার জন্য আমাদের পুরো দলের কম্বিনেশন দুর্দান্ত ছিল। আমি হ্যাপি।
# মিজানুর রহমান, ফরচুন বরিশাল ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক।