ড্রয়ে শেষ গার্দিওলা-ক্লপের ‘শেষ’ লড়াই
লিভারপুল-ম্যানচেস্টার সিটি। লাল-আকাশীদের লড়াইটা কোনো পরিসংখ্যান ছাড়াও হয়ে উঠে রোমাঞ্চকর। তার ওপর প্রিমিয়ার লিগের এই অবস্থানে শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে আর্সেনাল ছাড়া এগিয়ে এই দুই দলই। এবং ম্যাচে যে জিতবে সে উঠবে শীর্ষে, বাকি দলের বাকি পথ হবে আরও কঠিন।
সেসব ছাপিয়ে আরও এক ক্ষেত্রে গত রাতের অল রেড-সিটিজেনদের লড়াই ছিল আরও বেশি রোমাঞ্চকর। চলতি মৌসুম শেষে ক্লাব ছাড়ার ঘোষণা দেন লিভারপুল বস ইয়ুর্গেন ক্লপ। এতে এই ম্যাচটি প্রিমিয়ার লিগের সবশেষ আট আসরের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীপূর্ণ কোচ দ্বৈরথ পেপ গার্দিওলা-ইয়ুর্গেন ক্লপের শেষ লড়াই। যদিও লড়াইটা স্রেফ মাঠেই। বাইরে একে অপরকে ম্যাচের আগে ভাসিয়েছেন প্রশংসায়।
শিরোপা লড়াইয়ের ম্যাচ, শীর্ষে ওঠার ম্যাচ, গার্দিওলা-ক্লপের শেষ ম্যাচ, সেখানেই লড়াইটাও হলো ঠিক তেমনই, সমানে-সমান। জিতল না কেউই। অ্যানফিল্ডের এই ম্যাচ শেষ হয় ১-১ ড্রয়ে।
ম্যাচজুড়ে আক্রমণের ফুলঝুড়ি ফুটিয়েছে দুই দলই। তবে ফিনিশিংয়ের অভাব এবং ভাগ্যের জেরে একের পর সুযোগ মিস করেছে দুই দলই। ঘরের মাঠে ১৯তম মিনিটেই এগিয়ে যাচ্ছিল লিভারপুল। লুইস দিয়াসে বাড়িয়ে দেওয়া বলে ফাঁকা ডি-বক্সে থেকে বল জালে জড়ান দারউইন নুনেস। তবে গোল উল্লাস থামে সেখানেই, লাইন্সম্যানের ইশারা, অফ-সাইড।
তবে মিনিট চারেক অন্য প্রান্তে শুরু উল্লাস। তর্ক সাপেক্ষে সিটিজেনদের সবচেয়ে বুদ্ধিমান ফুটবলার কেভিন ডি ব্রুইনার বুদ্ধিদীপ্ত কর্নার থেকে পাওয়া বলে জন স্টোন্সের নেওয়া শট সোজা জালে। এতে ম্যাচের ২৩তম মিনিটে এগিয়ে যায় পেপ গার্দিওলার দল। সেই ব্যবধানেই শেষ হয় ম্যাচের প্রথমার্ধ।
৫০তম মিনিটে এসে এবার ভাগ্য স্বাগতিকদের দিকে। সেখানে মারাত্মক ভুল করে বসেন সিটি ডিফেন্ডার নাথান আকে। গোলরক্ষক এদারসনের দিকে দেন ব্যাকপাস, ততক্ষণে বল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার সম্ভাবনা জাগে লিভারপুল ফরোয়ার্ডের। সেখানে বল থামাতে ফাউল করে বসে এদারসন। এবং পেনাল্টি পায় লিভারপুল। সেখানে কোনো ভুল করেননি ম্যাক অ্যালিস্টার। সমতায় ফেরে ক্লপের দল।
তবে সিটির দুর্ভাগ্যের শেষ হয়নি সেখানেই। সেই ফাউলে নিজেও চোট পান এদারসন। এতে বাকি সময় আর চালিয়ে যেতে পারেননি খেলা।
এরপর ম্যাচে এগিয়ে যেতে দুই দলের ফরোয়ার্ডরা চালিয়েছেন অসংখ্য চেষ্টা। তবে ঠিক ফিনিশিং শট এবং দুই দলের দুটি দারুণ শট পোস্টে লাগায় হতাশ হতে হয়েছে দল দুটিকে। এতে শেষ পর্যন্ত ১-১ ব্যবধানের ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা।
এই ড্রয়ে ২৮ ম্যাচে ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার তিনেই রইল সিটি। সমান ম্যাচে ৬৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে লিভারপুল।
এদিকে এই ড্রয়ে যেন কপাল খুলে গেছে আর্সেনাল। ম্যাচটিতে ফলাফল আসলে নিশ্চিতভাবে শীর্ষস্থান হারাতে হতো গানারদের। তবে ড্র হওয়ার লিভারপুলের সমান পয়েন্টে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় শীর্ষেই থাকলো মিকেল আর্তেতার দল।