যে জয় দুঃখ ভোলায়, হাসি ফোটায়
ওয়ানডে টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে এর আগেও পাঁচবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নেমেছে আফগানিস্তান। কোনো বারই জয় মেলেনি। অবশেষে বহুল আরাধ্যের জয়টা এসেছে বিশ্বমঞ্চে। মুখোমুখি ষষ্ঠবারের দেখায় ৬৯ রানের বড় জয় পেয়েছে আফগানরা। টুর্নামেন্টের তৃতীয় ম্যাচে এসে যা দলটির প্রথম জয়। আফগানদের স্পিন শক্তি দেখেছে গোটা বিশ্ব।
স্পিনে ঠিক কতটা শক্তিশালী আফগানিস্তান; এটা জানান দিতে বিশ্বমঞ্চে বড় কোনো দলকেই হারাতে হতো দলটির। সেই কাজটিই এবার করে দেখিয়েছে তারা। হারিয়ে দিয়েছে আসরের হট ফেভারিট ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে। তাতেই বিশ্বজুড়ে প্রশংসায় ভাসছে দলটির ক্রিকেটাররা। দারুণ এ জয়ের পর দলের মধ্যেও বইছে আনন্দের জোয়ার।
যদিও সম্প্রতি দেশটির শহর হেরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে প্রায় তিন হাজার মানুষের প্রাণহানি দারুণভাবেই আঘাত করেছিল দলটির প্রতিটি ক্রিকেটারকেই। এই কঠিন সময়েও তাদের জন্য আনন্দের উপলক্ষ হতে পারত একটি জয়। যা দুঃখ ভুলিয়ে দিয়ে খানিকটা হলেও হাসি ফোটাতে পারত তাদের মুখে। ক্রিকেটাররাও তাই জয় পেতে মরিয়া ছিলেন। ইংল্যান্ডকে হারাতে লড়েছেন নিজেকে উজাড় করে দিয়ে। ম্যাচ শেষেও যা জানিয়েছেন ম্যাচের দুই নায়ক মুজিব ও রশিদ।
ম্যাচ জয়ের নায়ক মুজিব তার পুরস্কারটি দেশের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে উৎসর্গ করে বলেন, ‘আমি এই পুরস্কারটি দেশের মানুষকে উৎসর্গ করছি, যারা ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটা এমন কিছু যা দল হিসেবে এবং ব্যক্তিগতভাবে আমি করতে পারি।’
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ এ জয় যে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত আফগানদের মুখে একটু হলেও হাসি ফোটাবে; সে কথা জানিয়েছেন রশিদও। বলেন, ‘ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জেতা আমাদের জন্য একটি বড় বিষয়। দেশে ফিরে সবাই খুব গর্বিত হবে। সম্প্রতি, আমরা হেরাতে একটি ভূমিকম্পে তিন হাজারেরও বেশি মানুষকে হারিয়েছি। প্রায় দুই হাজার লোকের বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। এই বিজয় তাদের মুখে একটু হাসি ফোটাবে এবং তারা সেই কঠিন দিনগুলোকে একটু ভুলতে পারবে বলেই আমি মনে করি।’
ইংল্যান্ডকে হারানো যে দারুণ কিছু; তা জানিয়ে রশিদ বলেন, ‘দেশে ফিরে একটি বড় উদযাপন হবে। আফগানিস্তানে আমাদের এমন পরিস্থিতি নেই যেখানে লোকেরা উদযাপন করতে পারে। আমি মনে করি ক্রিকেটই একমাত্র উৎস যা তাদের অনেক সুখ এবং অনেক ভালো স্মৃতি দেয়। আমরা অনেক ম্যাচ হেরেছি কিন্তু তারপরও তাদের কাছ থেকে আমরা যে ধরনের সমর্থন পেয়েছি... এবং তারা আমাদের সেই পর্যায়ে খেলতে উৎসাহ যোগায়।’