দরিভালের ব্রাজিলের প্রথম জয়ের নায়ক বিস্ময়-বালক এনদ্রিকে
চোটগুলোকে শাপে বর ভাবতেই পারেন ব্রাজিল কোচ দরিভাল জুনিয়র। চোটের কাছে একগাদা তারকাকে না হারালে যে প্রথম ম্যাচে আনকোরা একাদশ খেলানোর সুযোগই পেতেন না! সে সুযোগটা সে কারণে এল তার কাছে। যাদেরকে তিনি খেলালেন, তারাও সুযোগটা লুফে নিলেন দুই হাতে। সবচেয়ে বেশি নিলেন ব্রাজিলের নতুন বিস্ময় বালক এনদ্রিক। তার একমাত্র গোলেই যে ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে ব্রাজিল। তাতে দরিভাল যুগ শুরু হলো দারুণ এক জয় দিয়েই।
নেইমার আগের থেকেই ছিলেন না, কোপা আমেরিকাতেও থাকবেন না, বিষয়টা জেনেই এসেছেন দরিভাল। প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকারও মাঠের বাইরে। তাদের বাদ দিয়েই দল গড়তে হয়েছিল কোচকে। সেখান থেকেও এক এক করে গোলরক্ষক এডারসন, মারকিনিওস, গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি আর কাসেমিরোকে খুইয়ে বসে দল। যার ফলে একাদশ গড়তে আনকোরাদের দিকে নজর দিতে হয় কোচ দরিভালকে। গোলকিপার বেন্তো, দুই মিডফিল্ডার জোয়াও গোমেজ ও পাবলো মাইয়া, দুই সেন্টার ব্যাক ফাব্রিজিও ব্রুনো ও লুকাস বেলার্দো, লেফ্ট ব্যাক ওয়েনদেল আর ফরোয়ার্ড সাভিওকে অভিষেক করিয়েছেন তিনি।
ওদিকে ইংলিশরা খেলেছে হ্যারি কেইনকে ছাড়া। সঙ্গে ফরোয়ার্ড বুকায়ো সাকাও ছিলেন না আজ। ম্যাচ শুরুর পর বিদায় নেন কাইল ওয়াকারও! তবে দলে জুড বেলিংহ্যাম-ফিল ফোডেনদের মতো তারকারা আছেন, কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের ভাবনাটা তাই একটু কমই ছিল। তবু এই ম্যাচে ইংলিশদের অভিষেক হয়েছে দুটো।
ম্যাচ শুরুর পর ইংলিশদের এই তুলনামূলক অভিজ্ঞ দলের ওপরই ছড়ি ঘুরিয়েছে ব্রাজিল। শুরু থেকে সেলেসাওরা গোলের সুযোগ তৈরি হোক কিংবা শট, সব দিক থেকে ছিল এগিয়ে। তবে ভিনিসিয়াস জুনিয়র, রদ্রিগো গোয়েজদের বাজে ফিনিশিং দলকে গোল পেতে দেয়নি। লুকাস পাকেতার একটা শট তো বারে লেগেও ফিরেছে!
ম্যাচে বলের দখল অবশ্য বেশি ছিল ইংলিশদের। ফোডেন-বেলিংহ্যামরা ভালোভাবেই দলকে গোলের সুযোগ এনে দিয়েছেন। তবে সেগুলোও কাজে লাগাতে পারেনি ইংলিশরা। শেষমেশ সুযোগ কাজে লাগাল ব্রাজিলই। তবে এখানেও হাত আছে ভিনিসিয়াসের ওয়ান অন ওয়ান পরিস্থিতি থেকে গোল করতে না পারার! মাঝমাঠ থেকে আন্দ্রেয়াস পেরেইরার বাড়ানো বলটায় গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ডকে একাই পেয়ে যান ভিনি। তবে তার শট ঠেকিয়ে দেন ইংলিশ গোলরক্ষক। তবে এনদ্রিকের ফিরতি চেষ্টাটা আর ঠেকাতে পারেননি! সেই এক গোলে ব্রাজিলের জয় নিশ্চিত হয়ে যায়।
এই এক গোলে ব্রাজিলের এই তরুণ উঠে গেছেন রেকর্ডের পাতাতেও। পেলে-রোনালদোদের পরই রেকর্ডবুকে নামটা থাকবে তার। ব্রাজিলের ইতিহাসের চতুর্থ সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা বনে গেছেন এনদ্রিক। শীর্ষে থাকা পেলে ১৬ বছর ৮ মাস বয়সে এই কীর্তি গড়েছিলেন, এনদ্রিক তা করলেন ১৭ বছর ৮ মাসে। তার মানে দাঁড়াচ্ছে ব্রাজিলীয় আইনেও প্রাপ্তবয়স্ক হননি এখনও, দলের ত্রাতা বনে গেছেন এরই মধ্যে। গোটা দুনিয়া এই বয়সেই তার নাম জানে, রিয়াল মাদ্রিদ আরও দুই বছর আগেই তাকে কিনে রাখে… এসব যে শুধু শুধু নয়, এনদ্রিক দিলেন তার প্রমাণও। ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন দরিভালের নতুন যুগের নতুন নায়ক বনে যাওয়ারও।