ফুটবলই ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন বিশ্বকাপের সেরা গোলদাতা
২০২২ বিশ্বকাপের ব্রাজিলের প্রথম গোলটা এসেছিল তার পা থেকে, দ্বিতীয়টাও। সেটা শুধু দলকে ব্রাজিলকে জয়ই এনে দেয়নি, তাকেও পাইয়ে বিশ্বকাপের সেরা গোলের খেতাব। অথচ সেই রিচার্লিসনই কি-না, বিশ্বকাপের পর এতটাই বিষণ্ণতায় ডুবে গিয়েছিলেন যে, খেলাটাই ছেড়ে দিতে মন চাইছিল তার।
সবশেষ বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল থেকে মিনিট দশেকের দূরত্বে ছিল তার দল। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে সেই ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে এগিয়ে গিয়েও একেবারে শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে বসে সেলেসাওরা। এরপর পেনাল্টি শ্যুটআউটে হার। তাতেই হেক্সা মিশনটা দীর্ঘায়িত হয় কমপক্ষে আরও ৪ বছর।
সেই হার প্রত্যেক ব্রাজিলিয়ানকেই দুঃখ দিয়েছে বেশ। রিচার্লিসনও তাদেরই একজন। তবে তার দুঃখের ভাগটা যেন একটু বেশিই ছিল। সেটা ইএসপিএন ব্রাজিলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি মাত্র একটা বিশ্বকাপ খেলেছি, যখন আমি আমার ফর্মের চূড়ায়। আমি আমার সামর্থ্যের পুরোটা দিয়েছিলাম। এরপরও হয়নি। আমি তখন বিষণ্ণতায় ডুবে গিয়েছিলাম। আমার মনে হচ্ছিল আমি খেলা ছেড়ে দেই।’
রিচার্লিসন আরও যোগ করেন, ‘আমি সাধারণত মানসিকভাবে বেশ শক্তিশালী। সেই আমারও বিশ্বকাপের পর মনে হচ্ছিল আমার পৃথিবী বুঝি ভেঙেচুড়ে গেছে একেবারে।’
তার খেলা চালিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণাও হারিয়ে গিয়েছিল। তখন কেমন লাগছিল, সেটা জানালেন তিনি। বললেন, ‘অনুশীলনে যাওয়ার আগে আমার মনে হতো আমি বাসায় চলে যাই, নিজের রুমে ঢুকে থাকি, কারণ আমি জানতাম না আমার মগজে কী চলছে! আমি আমার বাবার কাছে গিয়েছিলাম। তাকে বলেছিলাম যে আমি খেলাটা ছেড়ে দিতে চাই!’
সে পরিস্থিতিটা তিনি সামলেছিলেন মনোবিদের শরণাপন্ন হয়ে। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত তিনি গোল করেছেন ১১টি।
সে সাক্ষাৎকারের পর তার সাবেক ক্লাব এভারটন এসে পাশে দাঁড়িয়েছে তার। ক্লাবটি লিখেছে, ‘আমরা আমাদের সাবেক ফরোয়ার্ড শক্তিশালী সমর্থন দিচ্ছি। মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে মনোযোগ দেওয়া ও সাহায্য চাওয়ার বিষয়ে তার যে বার্তা, সেটাকেও সমর্থন দিচ্ছি। প্রত্যেকটা এভারটনিয়ান তোমার পাশে আছে রিচি! তার বর্তমান দলও তার পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে এই সময়ে। টটেনহ্যাম হটস্পার তাদের এক্সে লিখেছে, ‘আমরা সবসময় তোমার পেছনে আছি রিচি!’