১১ বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিতে ডর্টমুন্ড 

১১ বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিতে ডর্টমুন্ড 

চলতি মৌসুমে বুন্দেসলিগা শিরোপা জয়ের দৌড়ে অনেক আগেই ট্র্যাক হারিয়েছে বুরুশিয়া ডর্টমুন্ড। মেলেনি অন্য কোনো প্রতিযোগিতাতেও সাফল্য। এতে মৌসুমে নিজেদের মান বাঁচাতে ‘ব্ল্যাক অ্যান্ড ইয়োলো আর্মি’ খ্যাত দলটির সামনে সুযোগ কেবল চ্যাম্পিয়নস লিগের সাফল্য। এই কথাকেই যেন মূলমন্ত্র বানিয়েছে দলটি। কোয়ার্টার ফাইনালের আগের লেগে আতলেতিকো মাদ্রিদের মাঠে ২-১ গোলে হারের পর শেষ চারে যেতে হলে দারুণ কিছুই করতে হতো ডর্টমুন্ডকে। তবে গত রাতের ফিরতি লেগের ম্যাচটির ৭০ মিনিট পর্যন্ত ছিল ২-২ ড্র। ৪-৩ ব্যবধানের জয়ই দেখছিল আতলেতিকো। তবে মুহূর্তে গেল সব পাল্টে। চার মিনিটের মধ্যে ২ গোল করে সমীকরণ এলোমেলো করে দিল বুন্দেসলিগার দলটি। এতে স্প্যানিশ জায়ান্টদের বিদায় করে ১১ বছর পর ইউরোপ সেরার লড়াইয়ের মঞ্চের সেমি-ফাইনালে জায়গা করে নিল ডর্টমুন্ড। 

নিজেদের ডেরা সিগনাল ইদুনা পার্কে ফিরতি লেগের এই ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ৪-২ ব্যবধানের জয় পায় ডর্টমুন্ড। এতে দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৪ ব্যবধানের জয়ে শেষ চারের টিকিট কাটে ক্লাবটি। 

এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ চারে পৌঁছাল ডর্টমুন্ড। এর আগে সবশেষ ২০১২-১৩ মৌসুমে ইয়ুর্গেন ক্লপের আমলে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ চারে উঠেছিল তারা। 

ঘরের মাঠে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণে আধিপত্য ছিল ডর্টমুন্ডের। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো তারা। তবে খুব কাছাকাছি পৌঁছেও আতলেতিকো গোলরক্ষকের নৈপুণ্যে সেখানে গোলে দেখা পায়নি স্বাগতিকরা। সেখানে ব্যর্থ হলেও গোলের সূচনা এনেছে তারাই। ৩৪তম মিনিটে মার্সেল সাবিৎজার বাড়িয়ে দেওয়া বল ডি-বক্সে জটলা পাকানো অবস্থানে পেয়েও জালের ঠিকানা খুঁজে নেন জার্মান মিডফিল্ডার হুলিয়ান ব্র্যান্ডট। এর মিনিট চারেক পরেই ইয়ান মাটসেনের গোলে ব্যবধান বাড়ায় ডর্টমুন্ড। প্রথমার্ধে নিজেদের দখলে রেখে ২-০ তে এগিয়ে বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা। 

প্রথমার্ধ শেষে দুই লেগ মিলিয়ে তখন ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে ডর্টমুন্ড। তবে দ্বিতীয়ার্ধের একদম শুরুতেই তাদের ভুলেই ম্যাচ নিজেদের দখলদারিত্ব ঝারিয়ে বসে তারা। ৪৯তম মিনিটে নিজেদের জালেই বল জড়িয়ে বসেন ডর্টমুন্ড ডিফেন্ডার মাটস হুমেলস। এতে দুই লেগ মিলিয়ে ৩-৩ সমতায় ফেরে আতলেতিকো। পরে ৬৪তম মিনিটে আনহেল কোররেয়ার গোলে ম্যাচ এবার ডিয়োগো সিমিওনের দলের দখলে। 

তবে দমে যায়নি স্বাগতিকরা। ম্যাচের শেষ ২০ মিনিটে জয় আনতে জোড়া গোল করতে হতো ডর্টমুন্ডকে। ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নিয়ে যেতে অন্তত এক গোল। তবে ডর্টমুন্ড সময় নিল কেবল চার মিনিট। ৭১তম মিনিটে ম্যাচ নিজেদের তৃতীয় গোলটি করেন নিকলাস ফুলক্রুগ। এর মিনিট তিনেক বাদেই জয়সূচক গোলটি আসে শুরুর গোলে অ্যাসিস্ট করা সাবিৎজারের পায়ে। এতে শেষ পর্যন্ত ফিরতি লেগের ম্যাচে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৪-২। 

চ্যাম্পিয়নস লিগে রক্ষণের অন্যতম শক্তিশালী দল আতলেতিকোর বিপক্ষে এভাবে ঘুরে দাঁড়ানো মোটেও সহজ ছিল না ডর্টমুন্ডের। এ নিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের নক-আউটে স্রেফ দ্বিতীয়বারের মতো ৪ গোল হজম করলো আতলেতিকো। এর আগে এক দশক আগে ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো দলটি ৪ গোল খেয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদের কাছে।  

 

সম্পর্কিত খবর