৩ মিনিটে হোসেলুর জোড়া গোলে ফাইনালে রিয়াল

৩ মিনিটে হোসেলুর জোড়া গোলে ফাইনালে রিয়াল

ম্যাচটি সেমির ফিরতি লেগ হলেও আবহাওয়া বিবেচনায় গত রাতেই যেন চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল দেখল পুরো ফুটবল বিশ্ব। ফিরতি লেগের ম্যাচটি ছিল এবার রিয়াল মাদ্রিদের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে। সেখানে স্বাগতিকরা আক্রমণের বন্যা বইয়ে দিলেও ম্যাচের ৮৭ মিনিট পর্যন্ত ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা বায়ার্ন মিউনিখ। এতেই দুই লেগ মিলিয়ে ৩-২ ব্যবধানের জয়ের দিকেই এগোচ্ছিল বাভারিয়ানরা। তবে চ্যাম্পিয়নস লিগের নক-আউট এবং ম্যাচে বার্নাব্যুতে বলে কথা। সেখানে রিয়ালের প্রত্যাবর্তনের গল্পটা যেন লিখতেই হতো। সেই প্রত্যাবর্তনের নায়ক হয়ে এলেন হোসেলু। ম্যাচের শেষ তিন মিনিটে করলেন জোড়া গোল। এবং ২-১ ব্যবধানে ফিরতি লেগের ম্যাচ জিতে রিয়ালকে ফাইনালে তুললেন ৩৪ বছর বয়সী এই স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড। 

দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ ব্যবধানে সেমি জেতে রিয়াল। আগের লেগের ম্যাচটি বায়ার্নের মাঠে শেষ হয়েছিল ২-২ ড্র। 

রিয়ালের এই ফিরে আসার গল্প যেন ফিরিয়ে নিল চ্যাম্পিয়নস লিগের ২০২১/২২ মৌসুমে। সেমির প্রথম লেগে ম্যানচেষ্টার সিটির মাঠে ৪-৩ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে রিয়াল। এতে ফিরতি লেগের ম্যাচে তাদের জিততে হতো অন্তত দুই গোলের ব্যবধানে। পরের ফিরতি লেগের ম্যাচে বার্নাব্যুতে আগে গোল হজম করে রিয়াল। এগ্রিগেট দাঁড়ায় ৫-৩ এর। সেই ব্যবধানেই ছিল ম্যাচের ৮৯ মিনিট পর্যন্ত। তবে পরের দুই মিনিটে জোড়া গোল করে দলকে খাদের কিনার থেকে টেনে তোলেন রদ্রিগো। পরে যোগ করা সময় পেনাল্টি থেকে গোল করে দুই লেগ মিলিয়ে ৬-৫ ব্যবধানে ম্যাচ জিতে ফাইনালে পৌঁছেছিল কার্লো আনচেলত্তির দল। সেই মৌসুমে লিভারপুলকে হারিয়ে শিরোপাটাও জিতেছিল তারা। এতেই সেমির ফিরতি লেগে ফিরে আসার গল্প লেখাকে যেন অভ্যাসে পরিণত করেছে চ্যাম্পিয়নস লিগের ‘রাজা’রা। 

আগামী ১ জুন ওয়েম্বলিতে বুরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে নামবে রিয়াল। 

গত রাতের ম্যাচের প্রথমার্ধ ছিল গোলশূন্য। তবে ম্যাচের ২৯তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো বায়ার্ন। ডি-বক্সের বাইরে থেকে হ্যারি কেইনের নেওয়া দারুণ এক শট সেখানে ঠেকিয়ে দেন রিয়াল গোলরক্ষক আন্দ্রে লুনিন। তবে বায়ার্ন গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যার আরও খানিকটা বেশি ভুগিয়েছে রিয়ালকে। ৫৮তম মিনিটে রদ্রিগো ফ্রি-কিকের পরের মিনিটে ভিনিসিয়ুসের জোরালো এক শটে একা ঢাল হয়ে দাঁড়ান নয়্যার। তবে এই জার্মান তারকা গোলরক্ষকই শেষ দিকে এসে করে বসেন বিশাল এক ভুল। 

এর আগে ৬৮তম মিনিটে ডি-বক্সের বাঁ প্রান্ত দিয়ে ভেতরে ঢুকে কারবাহাল-রডিগারদের পাশ কাটিয়ে কোনাকুনি দারুণ এক শট নেন বায়ার্ন উইঙ্গার আলফনসো ডেভিস। সেটি লাফিয়েও ছুঁতে পারেননি লুনিন। এতেই রিয়ালের আক্রমণের ফুলঝুড়ি ছাপিয়ে এগিয়ে যায় সফরকারীরা। 

প্রত্যাবর্তনের গল্প কী প্রতিবারেই লিখবে রিয়াল। হ্যাঁ-সূচক উত্তর মেলাতেই ম্যাচের ৮১তম মিনিটে বদলি হিসেবে নামেন হোসেলু। পরে ৮৮তম মিনিটে ভিনিসিয়ুস ধীরগতির সোজাসুজি এক শট ছিল নয়্যারের দখলেই। তবে হাত ফসকে বল যায় ছুটে। সেখানেই সুযোগের অপেক্ষায় থাকা হোসেলু কোনো ভুল না করে বল জড়িয়ে দেন জালে। এর মিনিট দুয়েক পরই রুডিগারের বাড়িয়ে দেওয়া বলে আরও একবার বল জালে জড়ান হোসেলু। জয়ের উদযাপনে মাততেই যাবে তখনই বেজে উঠে রেফারির অফ-সাইডের বাঁশি। পরে ভিএআরে দেখা মিলে নাচো যখন পাস দেন তখন রুডিগার, হোসেলু দুজনেই ছিলেন অন-সাইডে। গোল রিয়ালের পক্ষে। এবং চ্যাম্পিয়নস লিগে রেকর্ড ১৮ বারের মতো ফাইনালের ওঠার আনন্দে মতে ওঠে পুরো বার্নাব্যু। 

সম্পর্কিত খবর