রোমাঞ্চকর ড্রয়ে দুইয়েই রইল মোহামেডান
সময় বয়ে যাচ্ছিল। ওদিকে দিনের অন্য ম্যাচে আবাহনী বিশাল জয়ে দুইয়ে উঠে আসার চোখরাঙানি দিচ্ছিল মোহামেডানকে। তবে ম্যাচের শেষ অ্যাকশনে দৃশ্যটাই বদলে গেল পুরোপুরি। উইং থেকে আসা ক্রসে মাথা ছোঁয়ালেন সাদা-কালোদের ‘ক্যাপ্টেন সুলে’ সুলেমান দিয়াবাতে। আগেও একটা গোল করেছিলেন, শেষ অঙ্কে আরও একটা। তার এই জোড়া গোলে ভর করেই রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটির বিপক্ষে ৩-৩ গোলের রোমাঞ্চকর এক ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন কোচ আলফাজ আহমেদের শিষ্যরা। তাতে লিগের দ্বিতীয় স্থানটা ঠিকঠাক ধরে রাখল মোহামেডান।
অথচ ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরুটা বলছিল মোহামেডান বুঝি বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে যাচ্ছে। ৫ মিনিটে জাফর ইকবালের গোল, এর ১৫ মিনিট পর সুলেমান দিয়াবাতের গোল তো তেমন কিছুই বলছিল!
তবে পরিস্থিতিটা মোহামেডানের প্রতিকূলে চলে যেতে লাগল ম্যাচের ৩৪ মিনিট থেকে। আর্নেস্ট বোয়াটেংয়ের গোল ম্যাচে ফেরায় কোচ কামাল আহমেদ বাবুর দল রহমতগঞ্জকে। বিরতির আগে একটা পেনাল্টিও দিয়ে বসল মোহামেডান। ৪০ মিনিটে সে স্পটকিক থেকে স্যামুয়েল মেনসাহ কোনির গোল ম্যাচটা আবারও ফিরিয়ে আনল সমতায়। দুটো করে গোল নিয়েই দুই দল যায় বিরতিতে।
বিরতির পর মোহামেডান ম্যাচে ফিরবে কি, উল্টো গোলই হজম করে বসে! এবারও দলটার জালে বল জড়ালেন স্যামুয়েল। ৬৫ মিনিটের সে গোলই ম্যাচের নিয়তি ঠিক করে দিয়েছে, ঠাহর হচ্ছিল ম্যাচের শেষ ওই অ্যাকশনটা পর্যন্ত। হবেই বা না কেন? একের পর এক সুযোগ মোহামেডান তৈরি করেই যাচ্ছিল, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখাটা মিলছিল না আর।
শেষমেশ মিলল একেবারে ম্যাচের শেষ মুহূর্তে। ৯০ মিনিট তো শেষই, যোগ করা সময়টাও শেষ হয়ে যাচ্ছিল, ঠিক তখন মোহাম্মদ জুয়েল মিয়ার ক্রস গিয়ে পড়ল দিয়াবাতের মাথায়, এবং গোল। শেষ মুহূর্তে এসে রহমতগঞ্জের হৃদয় ভেঙে একটা পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে মোহামেডান।
এই ড্রয়ের ফলে মোহামেডান রইল লিগের দ্বিতীয় স্থানেই। ১৬ ম্যাচ থেকে তাদের সংগ্রহ ২৯ পয়েন্ট, তিনে থাকা আবাহনীর পয়েন্টও সমান। কিন্তু গোল ব্যবধানে মোহামেডান এগিয়ে আছে বিশাল ব্যবধানে। ফলে দ্বিতীয় স্থানটা আপাতত নিজেদের হাতেই রাখতে পেরেছে কোচ আলফাজ আহমেদের দল।
দিনকয়েক পরই সাদা কালোদের জন্য অপেক্ষা করছে ফে ডারেশন কাপ ফাইনাল। সেখানে প্রতিপক্ষ বসুন্ধরা কিংস, যারা এবার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ঘরোয়া ট্রেবলের জন্য ছুটছে। সেই তাদের বিপক্ষে ম্যাচের আগে এমন পারফর্ম্যান্স নিশ্চিতভাবেই স্বস্তি দেবে না মোহামেডানকে।