পিটারকে নিয়ে বিশ্বকাপের স্বপ্ন বাংলাদেশের

পিটারকে নিয়ে বিশ্বকাপের স্বপ্ন বাংলাদেশের

পিটার গেরহার্ডের সঙ্গে বাংলাদেশ হকির সম্পর্কটা আজকের নয়। এবার নতুন ভূমিকায় তাকে ঢাকায় এনেছে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন। এবার শুধু জাতীয় দল নয়, গোটা দেশের হকির দায়িত্বটা তুলে দিয়েছে তার হাতে। তাকে ঘিরেই বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। 

আজ এক সংবাদ সম্মেলনে তাকে ঘিরে পরিকল্পনাটা জানান ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল হক সাঈদ। জানালেন তাকে নিয়ে পরিকল্পনাটা বিশাল। যদিও তার সঙ্গে চুক্তিটা আপাতত ১ বছরেরই। 

সাঈদ পরিকল্পনার বিষয়ে জানিয়েছেন, ‘আমাদের একটা পরিকল্পনা হলো চার থেকে পাঁচ বছর পর ছেলেদের কোথায় দেখতে চাই, কীভাবে কাজ করলে দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে এশিয়ার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারবো, অলিম্পিকে পৌঁছাতে পারবো এবং বিশ্বকাপে নাম লেখাতে পারবো- এসব নিয়ে অনেক দিন ধরেই গেরহার্ডের সঙ্গে কথা হচ্ছে। তার পরিকল্পনার সঙ্গে আমাদের পূর্ব পরিকল্পনা অনেকটাই মিলে যাওয়ায় আমরা তাকে নিয়ে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি।’

গেরহার্ডের অধীনে বাংলাদেশ দল অনুশীলন করবে ইউরোপে। সেখান থেকে খেলোয়াড়দের ইউরোপীয় লিগে খেলানোর ব্যবস্থাও করা হবে বলে জানিয়েছেন সাঈদ। তিনি বলেন, ‘পাঁচ মাস ইউরোপে আমাদের জাতীয় দলের ক্যাম্প হবে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে প্রস্তুতিমূলক ম্যাচ খেলার পাশাপাশি সেখানকার বিভিন্ন লিগ যেমন জার্মান লিগ, হল্যান্ড লিগ, পোল্যান্ড লিগে আমাদের খেলোয়াড়দের বিভিন্ন ক্লাবে খেলানোর ব্যবস্থা করা হবে। সেখানে পর্যায়ক্রমে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জন খেলোয়াড় নিয়মিত হকি চর্চার মধ্যে থাকবে। যে চর্চাটা থাকাকালে প্রতি সপ্তাহে দল হিসেবে অনুশীলন করবো। আর বিভিন্ন দলের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবো। পাশাপাশি বয়সভিত্তিক দলগুলো নিয়ে কাজ হবে।’

হকিতে বাংলাদেশ ম্যাচ খুব একটা পায় না। যাও পায়, তাও নিজেদের সমশক্তির দলের বিপক্ষে। গেরহার্ডের চোখে এমন সব ম্যাচ অর্থহীন। সে কারণেই দলকে ইউরোপে নিয়ে যেতে চান তিনি।

তার কথা, ‘এখানে অভিজ্ঞতা ও মানসিকতার চর্চা খুব বেশি হয় না। বাংলাদেশকে অনেক বেশি ম্যাচ খেলতে হবে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিপক্ষের সঙ্গে। এবং প্রতিপক্ষ হতে হবে শক্তিশালী। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে তাদের সঙ্গে খেলতে হবে, কারণ তারা বাংলাদেশের চেয়ে অনেক ওপরে। ওমানের সঙ্গে খেলা মানে সমমানের একটি দলের সঙ্গে খেলা। এরকম ম্যাচ খেলে কোনও লাভ নেই। কেবল সময়ের অপচয়। বাছাইপর্ব নয়, আমাদের চূড়ান্তপর্বে খেলার লক্ষ্য নিয়ে এগোতে হবে। এটাই হতে হবে লক্ষ্য।’ 

ইউরোপীয় হকিতে খেলোয়াড়দের অভ্যস্ত করতে পারলে লাভটা বাংলাদেশের হকিরই হবে, অভিমত গেরহার্ডের। তিনি বলেন, ‘জার্মানিতে আলাদা আলাদা কোচের অধীনে খেলার সুযোগ পাবে। এই খেলোয়াড় যারা জাতীয় দলকে প্রতিনিধিত্ব করবে, তারা পাঁচ মাস টানা জার্মানিতে লিগ খেলার সুযোগ পাবে। অন্য খেলোয়াড়দের বেলায় যেটা হবে, জার্মান লিগ খেলে ফেরা খেলোয়াড়রা ওদের সঙ্গে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ ও জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে খেলবে। তারা অন্যদের কাছে তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরবে। এভাবেই অন্যরাও উন্নতি করবে। এখানে বিকেএসপিতে হকি চর্চা হয়। তাছাড়া অনূর্ধ্ব-২১ দলও আছে। আমার দুজন সহকারী কোচ থাকবে। যারা আমার কোচিং দর্শন নিয়ে কাজ করবে। আমি কিছু অনুশীলনের পন্থা তাদের শিখিয়ে দিবো, যেটা কাজে লাগিয়ে তারা সঠিক উপায়ে খেলাটা শেখাবে খেলোয়াড়দের।’

সম্পর্কিত খবর