গ্রিক মিথলজি নতুন করে লিখে অলিম্পিয়াকোসের ইউরোপীয় শিরোপা জয়
গ্রিসে ইউরোপীয় কোনো শিরোপা যাওয়ার সবচেয়ে বড় সুযোগ এসেছিল আজ থেকে ৫৩ বছর আগে। সে বছর ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনালে শেষমেশ পারেনি প্যানাথিনাইকোস, হেরে বসেছিল ইয়োহান ক্রুইফের আয়াক্সের কাছে। এরপর থেকে আর ইউরোপীয় শিরোপা জেতা তো দূর অস্ত, ফাইনালেই যেতে পারেনি কোনো গ্রিক দল।
সে আক্ষেপটা মিটে গেল গত রাতে। ফিওরেন্তিনাকে ১-০ গোলে হারিয়ে অলিম্পিয়াকোস জিতে গেছে উয়েফা ইউরোপা কনফারেন্স লিগের শিরোপা। তাতে প্রথমবারের মতো গ্রিসে যাচ্ছে কোনো ইউরোপীয় ট্রফি।
গ্রিস তাতে খুশি হতে পারে, কিন্তু অলিম্পিয়াকোসের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এইকে অ্যাথেন্স তাতে খুশি যে হবে না, তা হলফ করে বলা যায়। দেশের প্রথম মহাদেশীয় শিরোপাটা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের হাত ধরে আসুক, তা চায় কোন মহৎ ব্যক্তি? তবে তাদের এ বিরক্তিটা বেড়ে গেছে কয়েক গুণে, কারণ ম্যাচটা যে গত রাতে হয়েছে তাদের মাঠ আগিয়া সোফিয়া স্টেডিয়ামেই!
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের মাঠ হলেও সমর্থনটা ভালোই পেয়েছে অলিম্পিয়াকোস। তবে তার জবাবটা অন্তত ৯০ মিনিটে দিতে পারেনি তারা। শেষমেশ পারল যখন, অতিরিক্ত সময়েরও তখন আর মাত্র ৪ মিনিট বাকি। ১১৬ মিনিটে গোলটা করলেন মরক্কান ফরোয়ার্ড আইয়ুব এল কাবি। পুরো কনফারেন্স লিগ মৌসুমে তিনি করেছেন ১১ গোল, তার সবকটাই আবার এসেছে নকআউটে। সেমিফাইনালে দুই লেগ মিলিয়ে এমিলিয়ানো মার্তিনেজের অ্যাস্টন ভিলার জালে জড়িয়েছিলেন ৫ গোল। ফাইনালে করলেন আরও একটা। তবে সেটাকে আর সব গোলের চেয়ে উপরেই রাখতে চাইবেন এল কাবি, সেই এক গোলই যে গ্রিসের ইউরোপীয় শিরোপার হাপিত্যেশ শেষ করে দিয়েছে এক লহমায়!
শিরোপাটা গ্রিসের জন্য কী অর্থ বহন করে, তার প্রমাণ মেলে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীর পোস্টে। কাইরিয়াকোস মিতসোতাকিস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘তোমরাই সত্যিকারের কিংবদন্তি। অলিম্পিয়াকোস ইউরোপা কনফারেন্স জিতে ইতিহাস নতুন করে লিখল। ক্লাবটা তো বটেই, এটা গ্রিক ফুটবল ইতিহাসেরই সেরা রাত।’
যে শিরোপা দেশের প্রধানমন্ত্রীকেও আবেগে গলিয়ে দেয়, সেটা আর যাই হোক সাধারণ কিছু নয়। তবে অলিম্পিয়াকোস যেভাবে জিতল শিরোপাটা, তাতে তাকে নতুন গ্রিক মিথলজি না বলে কি উপায় আছে?