সালাম মুর্শেদি কিভাবে বাফুফেতে আছেন, বিস্ময় সাবেকদের
দুর্নীতির দায়ে গেল বছর ফিফার নিষেধাজ্ঞা পেয়েছিলেন তৎকালীন বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ। এক বছর পর ফিফা তার নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়িয়েছে আরও এক বছরের জন্য। সঙ্গে আরও দুই কর্মকর্তাকে দিয়েছে নিষেধাজ্ঞা। এখানেই শেষ নয়, বাফুফের সিনিয়র সহ সভাপতি ও অর্থ কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মুর্শেদিকে দিয়েছে আর্থিক দণ্ডাদেশ।
সালাম অবশ্য এরপর আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন সালাম। জানিয়েছেন, তার ওপর এ দণ্ডাদেশ এসেছে তিনি অর্থ কমিটির চেয়ারম্যান বলে। তার সপ্তাহ না ঘুরতে এবার সাবেক ফুটবলারদের তোপের মুখে পড়েছেন সালাম মুর্শেদি। আজ এক সংবাদ সম্মেলনে সাবেক ফুটবলাররা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তিনি কী করে বাফুফেতে আছেন, এই বিষয়ে। শিগগিরই বাফুফে থেকে তার অপসারণেরও দাবি তোলেন তারা।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে 'সাবেক ফুটবল খেলোয়ারবৃন্দ'র ব্যানারে আয়োজিত 'ঘোর অমানিশায় দেশের ফুটবল' শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ বিষয়ে জানান। জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার শামসুল আরেফিন টুটুল, শামসুল আলম মঞ্জু, আব্দুল গাফ্ফার, মো. আবু ইউসূফ, আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু, কাজী আনোয়ার, আরমান মিয়াসহ সাবেক ফুটবলাররা উপস্থিত ছিলেন এই সংবাদ সম্মেলনে।
দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নিতে ব্যর্থ বাফুফে– জানান সব সাবেক ফুটবলার। এক বিবৃতিতে তারা জানান, ’দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নিতে ও সমৃদ্ধ করতে বাফুফে ব্যর্থ। এর জন্য দায়ী বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও অর্থ কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মুর্শেদীসহ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা। দেশের ফুটবলের স্বার্থে এসব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও শাস্তি এবং তাদের বাফুফে থেকে অপসারণ প্রয়োজন।’
সেখানে আরও বলা হয়, ‘গত ১৬ বছরে বাফুফে দেশের ফুটবলের উন্নয়নে ব্যর্থ। জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে ফুটবল উন্নয়নে নেই কোনো পরিকল্পনা। এই নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি সারাদেশে স্কুল ফুটবল টুর্নামেন্ট প্রচলন করতে পারেনি। যথাযথ অর্থে ফুটবল একাডেমি চালু করেও নামকাওয়াস্তে চলছে এলিট একাডেমি।’
সাবেক ফুটবলার সামসুল আরেফিন টুটুল বলেন, ‘বর্তমানে দেশের ফুটবলের যে অবস্থা তাতে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে, যারা খেলেন তাদেরও ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। অনিয়মের দায়ে সালাম মুর্শেদীকে প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে ফিফা। কিন্তু দেশে তার বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত হয়নি। আমরা এসব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বাফুফে থেকে অপসারণ চাই।’
কাজী আনোয়ার দেশের ফুটবলের ‘দুরবস্থার’ জন্য দায়ী করেন কর্তাদের। তিনি বলেন, ‘সবাই জানতে চায় দেশের ফুটবলের এমন অবস্থা কেন? ফুটবলাররা কিছু করতে পারেন না কেন? তারা কিছু করতে পারেন না কারণ, যারা ফুটবল চালান তারা ঠিকভাবে চালাতে পারেন না। আপনারা (বাফুফের কর্মকর্তা) যদি ঠিকভাবে চালাতে না পারেন তাহলে পদত্যাগ করেন।’
আরেক সাবেক ফুটবলার আরমান মিয়া ‘দুর্নীতিগ্রস্থ’দের বিচার চেয়ে বলেন, ‘আজকে ১৬ বছর ধরে তারা বাফুফের কমিটিতে রয়েছে। কিন্তু ফুটবলের কোনো উন্নতি হয়নি। বরং নানা সময়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে তাদের বিরুদ্ধে। আর কত বছর তারা ক্ষমতায় থাকলে দুর্নীতি বন্ধ করতে পারবেন? আমরা এই দুর্নীতিবাজদের বিচার চাই।’