‘মেসির’ গোলে জিতল তুরস্ক

‘মেসির’ গোলে জিতল তুরস্ক

ইউরোপের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে তার পা পড়েনি তখনও। বার্সেলোনাও তার পেছন পেছন ছুটছে হন্যে হয়ে। কেন? তিনি যে ‘তুর্কি মেসি’! বাম পায়ের খেলোয়াড়, চলন বলন গড়ন লিওনেল মেসির মতো বলে ভক্তরা তুরস্কের ছেলে আর্দা গুলেরকে আদর করে তুর্কি মেসি নামই দিয়ে দিয়েছিলেন।
লিওনেলের ক্লাব বার্সেলোনা নয়, সেই তিনি পরে গেছেন রিয়ালে। শুরুটা চোটাঘাতের কারণে একটু খারাপ হলেও সময় যত যাচ্ছেন, মানিয়ে নিচ্ছেন, আলো কেড়ে জানান দিচ্ছেন, তিনি নিজের নাম করতেই এসেছেন। সেই তিনি আজও দলের নায়ক বনে গেলেন, ঠিক যেমন মেসি হতেন-হন এখনও। তার দল তুরস্ক ইউরোয় নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৩-১ গোলে হারিয়েছে জর্জিয়াকে, তার নায়ক বনে গেছেন আর্দা গুলের।
তার প্রতিপক্ষ ছিল জর্জিয়া, সেই দলে আবার আছেন এমন একজন, যার নাম ‘কোয়ারাডোনা’, নামের অংশবিশেষ পরিচিত ঠেকছে? হ্যাঁ, নামটা ডিয়েগো ম্যারাডোনার কাছ থেকে ধার করে আনা। ডিয়েগোর প্রাণের ক্লাব নাপোলির সমর্থকরা দিয়েছেন জর্জিয়ান ফরোয়ার্ড কুইচা কোয়ারাশখেইয়াকে। কারণটাও ওই খেলার ধরনই। ইউরোয় ‘মেসি-ম্যারাডোনার’ এই লড়াইয়ে শেষমেশ হাসি ফুটল ‘মেসির’ মুখেই।
দুই তারকার পাশে থাকা মহাতারকার নামের ভারে নয় অবশ্য, ম্যাচটা জমেছিল বেশ। এখন পর্যন্ত এবারের ইউরোর সবচেয়ে রোমাঞ্চকর লড়াই কি না, তা নিয়েও একটা আলাপ হতে পারে। দুই দল শুরু থেকে খেলেছে একেবারে ‘জলবত তরলং’ ফুটবল, কেহ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান পরিস্থিতি ছিল ম্যাচের ঘণ্টার কাটা পেরোনোর পরেও। প্রথমার্ধে মের্ত মুলদুরের গোলে তুরস্ক এগিয়ে গিয়েছিল। ৭ মিনিট পর জর্জিয়া জবাব দিয়েছিল জর্জে মিকাওতাজের লক্ষ্যভেদে।
গুলের আলো ছড়িয়েছেন পুরো ম্যাচে। তবে আসল জাদুটা দেখালেন ম্যাচের ৬৫ মিনিটে। বক্সের বাইরে বল পেলেন, তাকে আটকাতে ডিফেন্ডাররা এগিয়ে আসতে সেকেন্ডের ভগ্নাংশ দেরি করে ফেললেন বোধ হয়, সেটারই সুযোগটা গুলের নিলেন। বক্সের বাইরে থেকে বাম পায়ের জোরালো, বাঁকানো এক শটে বলটা আছড়ে ফেললেন জর্জিয়ার জালে।
ম্যাচে আরও আক্রমণ হয়েছে, তবে দুই দলের রক্ষণ তা সামলেছে ঠিকঠাক, কখনও ভাগ্যের ছোঁয়াও ছিল গোল বাঁচানোয়। শেষ শটে গোলও হয়েছে একটা। তবে কারিম আকতুর্কলুর গোলটা এসেছে একেবারে শেষ মুহূর্তে, যখন ম্যাচ বাঁচাতে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকও বেরিয়ে গেছেন গোলমুখ ছেড়ে তখন। কারণ আসল কাজটা যে তুর্কি মেসিই করে দিয়েছিলেন আধঘণ্টা আগে! ম্যাচের ভাগ্যটা তাই গুলেরই নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন, এটুকু এখন বলাই যায়!

সম্পর্কিত খবর