পৃথিবীর সব পাওয়া এক মানুষ তিনি
মাশরাফি বিন মর্তুজা আর্জেন্টাইন ফুটবল দলের বড় ভক্ত সেটা তো অনেকেরই জানা! সেই তিনিই লিওনেল মেসির হাতে কোপা আমেরিকার আরেকটা ট্রফি দেখে বলছিলেন-‘লিও এ পৃথিবীর সম্ভবত সব পাওয়া একজন মানুষ।’
একদমই ভুল বলেননি মাশরাফি। ফুটবল তাকে উজাড় করে দিয়েছে! ক্লাব ফুটবলে সব বড় অর্জন তো ছিলই। জাতীয় দলের হয়েও কোন অপূর্ণতা নেই এই আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির। এক বিশ্বকাপ ট্রফি তার ক্যারিয়ারে আক্ষেপের অন্য নাম হয়েই ছিল অনেক অনেক বছর। কিন্তু সেটিও হাতে উঠেছে ২০২২ সালে, কাতারে। ভাবুন একবার ট্রফির জন্য আকুল হয়ে থাকা সেই দলটাই কীনা সবশেষ তিন বছরে জিতেছে চারটি বৈশ্বিক শিরোপা, প্রতিটিতেই নেতৃত্বে তাদের আদরের মেসি।
এবার কোপা জিতে নিজেকে হিমালয়ের সমান উচ্চতায় যেন নিয়ে গেলেন তিনি। দানি আলভেসকে পেছনে ফেললেন। ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি শিরোপা জেতার রেকর্ডটা ছিল ওই ব্রাজিলিয়ানের। ৪৪টি শিরোপা সংগ্রহে তার। এবার সেই প্রিয় বন্ধুটিকে টপকে গেলেন মেসি। তার শিরোপা সংখ্যা ৪৫টি। এই প্রাপ্তিতে গড়লেন বিশ্বরেকর্ড!
মেসি লিগ শিরোপা জিতেছেন ১২টি। ১০টি বার্সেলোনায়, ২টা পিএসজির হয়ে। বার্সার হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ৪টি, ৩টি উয়েফা সুপার কাপ, ৭টি কোপা দেল রে। ঘরোয়া কাপ শিরোপা ১৭টি, বার্সেলোনার হয়ে ১৫ আর পিএসজির হয়ে একটি। অন্যটি ইন্টার মায়ামির হয়ে।
২০২১ সালে আর্জেন্টিনার হয়ে কোপা আমেরিকার ট্রফি জিতেছিলেন মেসি। পরের বছর সোনার হরিণ বিশ্বকাপ। ইতালিকে হারিয়ে ফিনালিসিমাও ওঠে তার হাতে। অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ ও অলিম্পিক গোল্ড তো আছেই!
এমন অর্জনের দিনেও চোখে জল ঝরল লিওনেল মেসির। কলম্বিয়ার বিপক্ষে ফাইনালে ৬৬ মিনিটে চোট নিয়ে ছাড়েন মাঠ। এরপর রিজার্ভ বেঞ্চে বসে শিশুর মতো যেন অঝোরে কাঁদলেন। তাকে ছাড়া এমন একটা ম্যাচ মেনে নিতে পারছিলেন না! মনের কোনায় হয়তো শঙ্কা ছিল-‘আমাকে ছাড়া পারবে তো আর্জেন্টিনা?’ এরপর যখন ১১২ মিনিটে লাওতারো মার্তিনেজের পা থেকে এলো সেই মহাকাংখিত গোল তখন শিশুর মতোই চকিতে কান্না ভুলে মুখে হাসি তার!
দৃশ্যটা হয়তো সামনে আরও অনেক দেখতে হতে পারে। মেসিবিহীন আর্জেন্টিনা চলতে শিখে গেল। ৩৭ পেরিয়ে যাওয়া এই বিস্ময় প্রতিভারও তো এখন থামার সময় এসেছে!