কর্তাদের আচরণে অসন্তুষ্ট হয়ে ক্লাবই কিনে নিতে চাইছেন ফুটবলার
ব্যাটম্যান বিগিন্স সিনেমাটা দেখেছেন? তাতে একটা দৃশ্য আছে, যেখানে দুই বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে ব্রুস ওয়েইন ঢুকেছিলেন এক হোটেলে। তিনি যখন খাবার টেবিলে বসে, তখন তার দুই বান্ধবী গিয়ে নেমে পড়লেন পুলে, যা ছিল মূলত ডেকোরেশনের জন্য।
বিষয়টা লক্ষ্য করে হোটেল বয় তাকে এসে জানালে তিনি একটা দায়সারা উত্তর দেন। এরপর হোটেল বয় তাকে হোটেল থেকে বেরিয়ে যেতে বললে তিনি পকেট থেকে একটা চেকবই বের করে তাতে সই করে দিয়ে বলেন, ‘এই হোটেলটা আমি কিনে নিচ্ছি, আর পুল এরিয়ায় নতুন কিছু নিয়ম বেধে দিচ্ছি।’
এই দৃশ্যের মঞ্চায়ন বাস্তব জীবনেও ঘটিয়ে দিচ্ছেন মার্টিন ব্রাথওয়েট। এস্পানিয়লের ক্লাব কর্তাদের ব্যবহার পছন্দ হয়নি। সে কারণে ক্লাবের বড় একটা শেয়ার কিনে নিতে চাইছেন তিনি, সঙ্গে ক্লাবকে নিয়ন্ত্রণের লাগামটাও নিয়ে নিতে চাইছেন তার হাতে। খবরটা জানাচ্ছে স্প্যানিশ ক্রীড়াদৈনিক মার্কা।
স্প্যানিশ দ্বিতীয় বিভাগে ক্লাবটির হয়ে তিনি গেল মৌসুমে ২২ গোল করেছেন। তবে এরপরই তিনি ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ২০২৪-২৫ মৌসুমে তিনি খেলবেন ব্রাজিলিয়ান ক্লাব গ্রেমিওতে।
তবে বিদায়ের আগে তিনি এস্পানিয়ল ভক্তদের জানান, ‘আমার পক্ষ থেকে এটা বিদায় নয়। আমরা সবাই মিলে ক্লাবটাকে শীর্ষ স্তরের ফুটবলে এনেছি। এখন আমরা ক্লাবের জন্য লড়াই করব।’
শেষ বাক্যটা পরিষ্কার হয়ে গেছে তার নতুন চেষ্টার কথা প্রকাশ পাওয়ার পর। ক্লাবের একটা বড় অংশ কিনে নিতে চাইছেন তিনি।
ব্রাথওয়েটের সঙ্গে ক্লাবের মালিকদের সম্পর্কের অবনতি হয় গেল এক বছরে। গেল মৌসুমে তিনি শীর্ষ সারির একটা ক্লাবে যেতে চাইলে ক্লাব ছাড়েনি তাকে। চলতি মৌসুমে তাকে একটা চুক্তি নবায়নের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল ক্লাবের পক্ষ থেকে। তবে তিনি তার বিষয়ে বলেন, ‘এক বছর আগে ক্লাব আমাকে একটা চুক্তি নবায়নের প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে এটা অসম্মানজনক ছিল। দেখা যাক তারা আমাকে এখানে রাখতে চায় কি না, কারণ তারা এক বছর আগে যে চুক্তি নবায়নের প্রস্তাবটা দিয়েছিল, তাতে আমার প্রতি তাদের অবিশ্বাসটা পরিষ্কার ছিল।’
এস্পানিয়লের মালিক চীনা ব্যবসায়ী চেন ইয়ানশেং, ক্লাবের পরিচালনায় আছে র্যাস্টার গ্রুপ। তবে ক্লাবের সমালোচনায় শেষ অনেক দিন ধরেই সমর্থকরা বেশ সোচ্চার। শেষ তিন মৌসুমে ২ বার অবনমনের কাটায় পড়েছে ক্লাবটা।
ফুটবল ক্যারিয়ার থেকে আয় করা অর্থের সিংহভাগই তিনি লগ্নি করেছেন বিভিন্ন জায়গায়। তা থেকে পাওয়া অর্থ তাকে রীতিমতো সাম্রাজ্যের মালিকই বানিয়ে দিয়েছে। তার আর তার চাচার সামগ্রিক অর্থের পরিমাণ এখন ২৮৭ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। ২০১৭ সালে ৮ লাখ ৫০ হাজার ইউরো লগ্নি করেছিলেন দুজনে। এরই মধ্যে তাদের কোম্পানি বনে গেছে ১৫০০ সম্পত্তির মালিক, আরও ৫০০ সম্পত্তি তাদের নামে যাওয়ার অপেক্ষায় আছে।
তার স্ত্রী অ্যান লরেরও নিজস্ব ব্যবসা আছে। ত্রেন্ত নামের ফ্যাশন চেইনের মালিক তিনি। ব্রাথওয়েট আর অ্যান মিলে বার্সেলোনায় ‘ইগুয়ানা গাভা মার’ নামে একটি রেস্টুরেন্টও চালান। সঙ্গে তাদের আরেকটি হোম ডেলিভারি সার্ভিসও আছে। এত্তো এতো সব ব্যবসা ব্র্যাথওয়েটকে এবার এনে দিয়েছে ক্লাব কিনে ফেলার বিলাসিতা।