২০২৬ বিশ্বকাপেও খেলবেন মেসি?
লিওনেল মেসি। তিনি যা করে দেখিয়েছেন, যা করে দেখাচ্ছেন তা কেবল এক জাদুকরের দ্বারাই সম্ভব। ২০১৪ বিশ্বকাপে গোল্ডেন বুট হাতে বিশ্বকাপ শিরোপার দিকে চেয়ে থাকা, ২০১৫ আসরের কোপা ফাইনাল হেরে অঝোরে কাঁদা। সবাইকে এমনটাই মেনে নিয়ে চলেছিলেন, মুকুটহীন রাজা হয়ে থাকতে চলেছেন ফুটবল নামক ইতিহাসের পাতায়।
২০১৬ সাল। নিয়ে নিলেন অবসরও। কে জানতো সেখান থেকে ১০ বছর বাদে আরও একটি বিশ্বকাপে তাকে দেখতে মুখিয়ে থাকবে সবাই? ক্লাব ফুটবলে মেসির শিরোপা গুনে গুনে ৪৫টা। তবে আক্ষেপ ছিল নীল-সাদার জার্সিতে কোনো আন্তর্জাতিক শিরোপার।
অবসর ভেঙে জাতীয় দলে ফিরে ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ দলে ফের মেসি। তবে সেবারের হতাশা যে আরও গভীর। আগের আসরের রানার্সআপ আর্জেন্টিনা কি না বিদায় নিল শেষ ষোলোতেই। সেখান থেকে আরও একটা বিশ্বকাপের জন্য অপেক্ষা মোটেও সহজ ছিল না মেসির জন্য। তবে নিয়তি হয়তো এমনটাই চেয়েছিল,
‘এবার এসো ফিরে
দিব হাত দুটি ভরে।’
তবে দুটি নয়। বছর দুইয়ের মধ্যে মেসি হাতে উঠলো তিনটি শিরোপা। যার শুরু, ২০২১ সালে, কোপা আমেরিকা দিয়ে। ব্রাজিলের আইকনিক মারাকানায় তাদের হারিয়েই কোপার সেই অধরা ট্রফি উঠলো মেসির হাতে। যেন এই শিরোপার জন্যই ছিলেন বেঁচে। আর ভক্তরা অপেক্ষাই ছিলেন শিরোপা হাতে মেসির ছবি, টাঙিয়ে রাখবেন ডাইনিংয়ের দেয়ালে।
এতেই শেষ নয়। তৎকালের ৩৪ বছর বয়সে যেন সবে শুরু। ২০২২ সালে দুই মহাদেশীয় ফুটবলের দুই চ্যাম্পিয়নের (ইউরোপের ইতালি, আমেরিকার আর্জেন্টিনা) মধ্যকার চ্যাম্পিয়নশিপ ট্রফি, ফিনালিসিমা। সেখানে ইতালিকে ৩-০ গোলে হারিয়ে মেসির এলো দ্বিতীয়।
তৃতীয় এবং সবচেয়ে আদুরে খোকা, বিশ্বকাপের ৩৬ বছরের সেই অধরা শিরোপা, এলো সেই ২০২২ সালে। যেন ফুটবলে পূর্ণ প্রাপ্তি পেল আর্জেন্টিনা। মরুর বুকে এবার মুকুটে সজ্জিত মেসির হাতে সেই সোনালি ট্রফি, সেই কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন, লালিত স্বপ্ন।
মেসি পরিপূর্ণ। মেসি সুসজ্জিত। কি নেই মেসির ঝুলিতে? তাহলে এবার অবসরের পালা। ভক্তরাও ধরেই নিয়েছিল তাই। তবে কি মেসিও তাই ভাবছে?
একটু ভিন্নভাবে ভাবা যাক। ২০২৬ বিশ্বকাপ যুক্তরাষ্ট্রে। ১৯ বছর ধরে ইউরোপ ক্লাব মাতানো তারকা কি না পাড়ি দিলেন সকারে, আমেরিকার ফুটবলে। তবে কি আরও একটি বিশ্বকাপ খেলেই অবসরে যাবেন তিনি? তবে সম্প্রতি তার দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেখা গেল মিশ্র এক প্রতিক্রিয়ার। হয়তো খেলবেন? আবার নাও খেলতে পারেন। ততদিনে বয়সটা যে বেড়ে দাঁড়াবে ৩৯-এ।
‘আমি বিশ্বকাপ নিয়ে এখন ভাবছি না। শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলছি না যে আমি সেখানে থাকব না। কারণ, যেকোনো কিছুই হতে পারে। কারণট আসলে আমার বয়স। আমার সেখানে না থাকাটাই স্বাভাবিক। অবশ্য তা পরে দেখা যাবে।’
খেলবেন কি না তা নিয়ে দ্বিধায় মেসি নিজেও, দ্বিধায় মেসি ভক্তরাও। তবে আপাতত সেই মধুর দ্বিধা তোলা থাকুক। সময়েই কাটবে সেই দ্বিধা।