কে প্রথম ভালবেসেছি?

কে প্রথম ভালবেসেছি?

আপন তারিক

অতলান্ত গবেষণা! ভালোবাসা আসলে কি? কেনইবা সবাই একটু খানি ভালোবাসার ছোঁয়া পেতে আমরা এতোটা কাঙ্গাল, এতোটা আকুল? কি এমন ম্যাজিক ভালোবাসায়? কবিতা, গল্প, গান কিংবা উপন্যাসে লেখকরা ভালবাসার মানে আবিস্কারের প্রানান্ত চেস্টা করেছেন, করছেন অহর্নিশ। যুতসই ‘অনুবাদ’ মিলছে কোথায়?

‘ভালোবাসা অনেকটা হাওয়ার মতো! আপনি দেখতে পারবেন না, কিন্তু ঠিকই অনুভব করতে পারবেন!’ হলিউডের সাড়া জাগানো প্রেমের ছবি ‘এ ওয়াক টু রিমেম্বার’-এ এভাবেই খোঁজা হয়েছে ভালোবাসার মানে। ভালবাসা আসলে তবে কী মোহ, মরিচীকা! ভালবাসা নামের সেই রহস্যের মায়াজালে বন্ধী হয়েছেন খেলার জগতের অনেক তারকারাই। ভালোবাসা রঙে রঙীন হয়ে হয়ে উঠা এক জুটির গল্প...

 অন্তর্জালে প্রেম...

গ্লোবাল ভিলেজ- থিওরিটাও ইদানিং পুরনো হয়ে গেছে! হবেই না এখন তো বিশ্বটা পুরো হাতের মুঠোতেই বন্ধী। আরো বেশি সহজলভ্য জীবনযাত্রা। ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম গুলো জীবনটাকে আরো বর্নীল কওে দিয়েছিল। আমাদের যাপিত জীবনের অংশ হয়ে গেছে আজ ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব আর ইনস্ট্রাগ্রাম। জীবনতথ্য প্রযুক্তির এই যুগে এ প্রজšে§র ছেলে-মেয়েরা ফেসবুক ছাড়া একটি দিন ভাবতেই পারেন না! অন্তর্জাল দুরের মানুষকেও এনে দিচ্ছে কাছে। এক মুহুর্তে বন্ধুত্বা গড়ে উঠছে। ভাঙ্গছে সম্পর্কও। আবার দুটি মনের মিলনও কওে দিচ্ছে মার্ক জাকারবার্গের ফেসবুক।

 বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের জীবনেও প্রেম ধরা দিয়েছিল ফেসবুকে। যাকে নিয়ে সংসার পেতেছেন সেই উম্মে আহমেদ শিশিরের সঙ্গে পরিচয় ইন্টারনেটে।

 তাহলে ফেসবুকের দিনগুলোর সেই প্রেমের গল্পটা চলুন শুনে নেই। যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন শিশির। পড়াশোনা করছিলেন মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে। যদিও তার শিশিরের জন্ম ঢাকায়, বন্দরনগরী নারায়ণগঞ্জে। যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর আগে তাঁর বাবা অগ্রনী ব্যাংকের চাকুরে ছিলেন। ১০ বছর বয়সে বাবা-মা’র সঙ্গে চলে যান মার্কিন মুল্লুকে। শিশিরের পরিবার রয়েছেন বাবা-মা, চার ভাই ও দুই বোন। সবাই থাকেন যুক্তরাষ্ট্রেই।

 এই গ্রহের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশটিতে দিন কাটছিল তার। কিন্তু হঠাৎ করেই দেখা পেয়ে গেলেন সাকিবের। বদলে গেল জীবন। যদিও ক্রিকেট খেলাটা তেমন টানছিল না তাকে। তারপরও নামটা জানতেন। সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ¯স্নাতক পরীক্ষা শেষ করে ২০১০ সালে বেড়াতে যান ইংল্যান্ডে। তখন সেখানে কাউন্টি ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। কোন এক অনুষ্ঠানে চোখে চোখ পড়তেই শুরু সিনেমার গল্পের মতোই শুরু মুগ্ধতা।

 উস্টারশায়ারে খেলতে থাকা সাকিব ভাবেন নি এই মেয়েটিই একদিন তার ঘরনী হবেন। কিন্তু নিজেদের অজান্তেই একটু একটু করে ভালা লাগা থেকেই জন্ম নিল ভালবাসা। তবে মন বিনিময় আরো পরে।

 ইন্টারনেট আর মুঠো ফোনই তখন তাদের সম্পর্কের সেতু তৈরি করে দিয়েছিল। উস্টারশায়ারের হয়ে মিশন শেষে দেশে ফিরেন সাকিব। অন্যপ্রান্তে শিশির তখন ব্যস্ত পড়াশোনায়। চলে যান উইসকনসিনে। সাকিব খেলায় মন দেন, শিশির ইউনিভার্সিটি ব্যস্ত সুচীতে। তারপরও কোন ব্যস্ততাই তাঁদেরকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখতে পারেনি। এভাবেই দিন কাটতে থাকল, একসময় গাঢ় হতে থাকে তাদের প্রেম। বাংলাদেশের ‘মোস্ট এলিজেবল ব্যাচেলর’ ভাবতে থাকেন বিয়ের কথা। কিন্তু বিয়ে তো শুধুই দুজনের সম্পর্ক নয়। বিয়ে দুটো পরিবারেরও। তাইতো পারিবারিকভাবেই এগোয় বাকী আলোচনা। ঠিক হয় বিশেষ দিনে বিয়ে হবে তাদের। তারিখ ঠিক করা হয় গতবছরের ডিসেম্বরের ১২ তারিখ। বিশেষ দিনই তো ১২.১২.১২! রুপসী বাংলা হোটেলে ২০ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে হয় তাদের।

বিয়েতে সাকিব পড়েন সাদা পাঞ্জাবি আর শিশির লাল টুকটুকে শাড়ি! এখন মার্কিন মুল্লুকে নয়, সাকিবের সঙ্গেই সময় কাটছে শিশিরের, এখন তো তাদের ঘর পরিপূর্ণ। দুই কন্যা, এক পুত্র। মাঠের ক্রিকেটের মতো মাঠের বাইরেও সুখের সুবাতাস!

সম্পর্কিত খবর