বড় জয়ে সিরিজে সমতা আনলো ভারত

বড় জয়ে সিরিজে সমতা আনলো ভারত

সকালের সেশনে ম্যাচ জয়ের ঘ্রাণ নিয়ে লাঞ্চে গিয়েছিল ভারত। আর দ্বিতীয় সেশনে ম্যাচ জিতে উল্লাসে মাতলো। বিশাখাপত্তম টেস্ট ভারত জিতে নিয়েছে ১০৬ রানে। ইংল্যান্ড প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা চালিয়েছিল কিন্তু ভারতের স্পিন ও পেস বোলিংয়ের যৌথ শক্তির সামনে দাড়াতে পারেনি ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইন আপ।

ম্যাচ জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের সামনে টার্গেট ছিল ৩৯৯ রানের। বিশাল টার্গেট, সন্দেহ নেই। কিন্তু লড়াইয়ের একটা চেষ্টা করেছিল ইংল্যান্ড। তবে বোলিং বদলে অধিনায়ক রোহিত শর্মার বুদ্ধিমান কৌশল এবং ভারতের জয়ে ক্ষিদে-এই দুই শক্তিই ভারতকে এই টেস্টে বড় জয় এনে দিল। ১০৬ রানের এই জয়ে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে এখন ১-১ এর সমতা।

টেস্টের নিয়ন্ত্রণ ভারত নিয়ে ফেলে সকালের সেশনেই। এই সেশনে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে ইংল্যান্ডকে দুশোর নিয়ে আটকে দিল। ১৯৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ড লাঞ্চে যায়। সকালে উইকেট শিকারের আনন্দ শুরু করেন স্পিনার অক্ষর প্যাটেল। নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা রেহান আহমেদকে ফেরান তিনি। ২৩ রান করে এলবিডব্লু হন রেহান। মিডলঅর্ডারে অলিও পোপের দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে ভারতকে আরেকবার আনন্দে ভাসান রোহিত শর্মা। অশ্বিনের বলে পোপের ক্যাচটা বাঁহাত বাড়িয়ে রোহিত শর্মা অবিশ্বাস্য টাইমিংয়ে তালুতে নেন।

আগের ম্যাচের বড় সেঞ্চুরিয়ান পোপ এই টেস্টে দুই ইনিংসেই ২৩ করে রান করেন। জো রুট বাজে শট খেলে আকাশে বল তুলে দেন। অক্ষর প্যাটেল সহজেই সেই ক্যাচ ধরেন। জনি রেয়াবস্টো ও জ্যাক ক্রাউলির ব্যাটে শুরুর এই ধাক্কা কাটিয়ে ভালোভাবেই সামনে বাড়ছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু লাঞ্চের ঠিক আগেভাগে ভারত ফের জ¦লে উঠে। ক্রাউলিকে এলবিডব্ল করেন কুলদীপ যাদব আম্পায়ার আউট দেননি। ভারত রিভিউ নেয়। সিদ্ধান্ত যায় তাদের পক্ষে। ১৩২ বলে ৭৩ রান করে ওপেনার ক্রাউলি ফিরে আসেন। জুটি ভাঙ্গার পর অন্যপ্রান্তে আক্রমনাত্মক খেলতে থাকা জনি বেয়ারস্টোও ছন্দ খুঁইয়ে বসেন। ক্রাউলির আউটের পরের ওভারেই বুমরার বলটা পেছনের পায়ে খেলতে গিয়ে পরাস্ত হন বেয়ারস্টো। আম্পায়ার আঙ্গুল তুলে জানান, এলবিডব্ল। রিভিউ নিয়েও রক্ষা হয়নি বেয়ারস্টোর।

দ্বিতীয় সেশনে এই ম্যাচে ইংল্যান্ড কতদুর যাবে সেটা নির্ভর করছিল অধিনায়ক বেন স্টোকসের ব্যাটিংয়ের ওপর। কিন্তু ইংল্যান্ড অধিনায়কও বড়কিছু করতে পারলেন না। ১১ রান তুলে রান আউট হয়ে ফিরলেন। রান নিতে গিয়ে খানিকটা আলসেমি করে ফেলেছিলেন স্টোকস। শর্টমিড অন থেকে দৌড়ে এসে একটিপে দুর্দান্ত কায়দায় থ্রো করে স্ট্যাম্প ভেঙ্গে দেন শ্রেয়াস আইয়ার। রিপ্লেতে দেখা গেল পপিং ক্রিজের কয়েক মিলিমিটার দূরে ছিল স্টোকসের ব্যাট।

স্টোকসের আউটের পর বেন ফোকস ও টম হার্টলি লড়াই চালিয়েছিলেন। লড়ছিলেনও বেশ। কিন্তু রোহিত শর্মার বোলিং বদলের কৌশলটা কাজে দিল। বুমরার স্লো বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন ফোকস। খানিবাদে বদলি বোলার হিসেবে মুকেশ কুমারকে আক্রমণে আনেন রোহিত। অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করে মুকেশ তুলে নেন শোয়েব বাশিরের উইকেট।
বুমরা দারুণ এক সুইংয়ে টম হার্টলের উইকেট উপড়ে নিতেই ম্যাচ জয়ের আনন্দে পুরো ভারত দল। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের পাঁচ বোলারের সবাই উইকেট পান। সিরিজের তৃতীয় টেস্ট শুরু হবে ১৫ ফেব্রুয়ারি। ভেন্যু রাজকোট।

ম্যাচ শেষে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস বলেন, জয়ের জন্য ৩৯৯ রান টার্গেট অনেক বড়। তবে আমাদের বিশ্বাস ছিল আমরা এটা টপকে যেতে পারবো। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যাটিং করছিলাম। তবে ভারত দুর্দান্ত বোলিং করেছে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: ভারত ৩৯৬ ও ২৫৫। ইংল্যান্ড ২৫৩ ও ২৯২।

ফল: ভারত ১০৬ রানে জয়ী।

ম্যাচসেরা: যশ্বসী যশওয়াল।

সম্পর্কিত খবর