অধিনায়ক পদে শান্ত প্রস্তুত, কিন্তু বিসিবি তৈরি কি?

অধিনায়ক পদে শান্ত প্রস্তুত, কিন্তু বিসিবি তৈরি কি?

খুবই ইম্প্রেসিভ অধিনায়কত্ব দেখিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এই সিরিজ শুরুর আগে তার বিশ্বাস ছিল যে আমরা জিতবো। এই মানসিকতাই তাকে এগিয়ে রেখেছে। যে লিডার বিশ্বাস করে যে আমার পক্ষে অনেককিছুই করা সম্ভব। আমার দলের পক্ষে অনেককিছুই করা সম্ভব-তাহলে জয়ের পথে হাঁটার শুরুটা বোধকরি ওখান থেকেই হয়।

নিউজিল্যান্ডের মতো জায়গায় খেলতে যাওয়ার আগে জয়ের তাগিদ বা যে ইচ্ছের কথা অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত জানিয়েছিলেন, তেমন গভীর বিশ্বাস এর আগে বাংলাদেশের আর কোনো অধিনায়ক কি দেখিয়েছিলেন? শান্ত বলেছিলেন, আমি এবার নিউজিল্যান্ডে সিরিজ জিততে চাই। সেই জয়ের ইচ্ছেটা যে তার শুধু কথার কথা নয়, সত্যিকার অর্থেই ইতিহাস বদলে দেওয়ার একটা জোরদার পণ করেছিলেন তিনি। তার নিজের এবং দলের পারফরম্যান্স তো সেই প্রমাণই দিচ্ছে। সিরিজ শুরুর আগে যে প্রতিজ্ঞা, যে নতুন কিছু করার স্বপ্ন দেখেছিলেন সেটা তার দলের সার্বিক পারফরমেন্সেই ফুটে উঠেছে। দলের জন্য খেলা। জয়ের জন্য খেলা। সেটার জন্য মাঠে যা যা করার প্রয়োজন সেরকম একটা আগ্রাসী মানসিকতা অধিনায়কের কথাবার্তায়, শারীরিক ভাষায় এবং মাঠের ক্রিকেটে স্পষ্ট হয়ে উঠেছিলো। অধিনায়কের এই স্বপ্নকে সফল করার দারুণ সমন্বিত একটা প্রয়োগ দেখা যায় দলের বাকিদের মধ্যেও।

সাম্প্রতিক সময়ে নাজমুল হোসেন শান্তর অধিনায়কত্ব একটা বিষয় অন্তত প্রমাণ রাখতে সমর্থ হয়েছে যে এই কাজে তিনি অদক্ষ নন। এখন অধিনায়কত্বের লম্বা মেয়াদের জন্য তাকে বিসিবি চিন্তা করতেই পারে।

এদিকে নির্বাচনী ব্যস্ততা এবং ইনজুরি কাটিয়ে উঠলে সাকিব আল হাসান আবার সব ফরমেটের ক্রিকেটে নিজের ফিরে আসার ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন। তার এই ইচ্ছের সঙ্গে বিসিবিও সুর মিলিয়েছে। বিসিবি বলেছে, সাকিব ফিরলে তার সঙ্গে আলোচনায় বসা হবে। তবে এখন পর্যন্ত সব ফরমেটে সাকিবই দলের নিয়মিত অধিনায়ক।
তাহলে বিষয় কি দাঁড়ালো?

নাজমুল হোসেন শান্ত এখনো বিসিবির চিন্তায় স্টপগ্যাপ অধিনায়ক! বিসিবির এমন চিন্তা নিঃসন্দেহে অধিনায়ক শান্ত’র মানসিক অগ্রগতির জন্য সুখকর কিছু হবে না। একজন অধিনায়ক যখন জানবেন তিনি শুধুমাত্র ফাঁকতালের জন্য অধিনায়ক, হঠাৎ হয়ে পড়া শূন্যস্থান পূরণ করাই তার কাজ। তিনি যখন জানবেন অমুক দলে এলে তাকে সরে দাড়াতে হবে অধিনায়কের পদ থেকে, তাহলে সেই পদে নিজেকে এগিয়ে নেয়ার আগ্রহ কি তার আর থাকবে?

অধিনায়কত্ব আসলে একঅর্থে নিজেকে সারাক্ষণ পর্যবেক্ষণে রাখা। অধিনায়কত্ব শুধুমাত্র দলের ফিল্ডিং বা বোলিং বদল করার মধ্যেই আটকে থাকে না। এই কারণেই বলা হয় ক্যাপ্টেন্সি স্টার্ট আফটার ফাইভ পিএম। বিকেল পাঁচটায় খেলা শেষ হয় তারপর দলের খেলোয়াড়দের কার কি সমস্যা, সেটা কিভাবে সমাধান করতে হবে। কাকে কিভাবে কমফোর্ট জোন করে দিতে হবে, সেসব বিষয়ের সমাধান করাও অধিনায়কের কাজ। আর তাই লম্বা মেয়াদের জন্য কাউকে অধিনায়কত্ব না দিলে তিনি তো নিজের কাজের পরিধিও ঠিক করতে পারবেন না।

অধিনায়কত্ব নিয়ে শান্তর জন্য এখন সেই আগ্রহ এবং পরিধি তৈরির দায়িত্ব বিসিবির। অন্তত যে কোনো একটা ফরমেটে তার হাতে এখন অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ড বেঁধে দেওয়া উচিত।

সম্পর্কিত খবর